বুধবার সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে ১০ মিনিটের সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানে শপথ নেন আবদুল হামিদ। তাকে শপথ পড়ান ভারপ্রাপ্ত স্পিকার শওকত আলী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মন্ত্রিসভার সদস্যরা অনুষ্ঠানে ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গভবনে পৌঁছলে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হিসেবে তাকে অভ্যর্থনা জানান আবদুল হামিদ।
মো. জিল্লুর রহমানের মৃত্যুর পর স্পিকার আবদুল হামিদ অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। বুধবার শপথ নেয়ার পর এখন পরবর্তী পাঁচ বছর অর্থাৎ পরবর্তী সরকার আমলেও রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্বে অধিষ্ঠিত থাকবেন তিনি।
প্রধান বিরোধী দল বিএনপির কোনো প্রতিনিধি অনুষ্ঠানে ছিলেন না। তবে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন ছিলেন এই অনুষ্ঠানে।
দরবার হলে এই শপথ অনুষ্ঠান শুরু হয় কুরআন তিলওয়াতের মধ্য দিয়ে। অনুষ্ঠানের মঞ্চে দুটি চেয়ারে বসেন আবদুল হামিদ ও শওকত আলী। দুজনের পরনেই ছিল মুজিব কোট।
শপথ বাক্য পাঠ করার পর হাত তুলে সবাইকে সালাম জানান আবদুল হামিদ। এরপর তিনি মঞ্চ থেকে নেমে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, চার নির্বাচন কমিশনার, তিন বাহিনীর প্রধান, রাজনীতিক, ব্যবসায়ী নেতারাও অনুষ্ঠানে ছিলেন।
শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভুইঞা।
গত সোমবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দেশের ২০তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন ৬৯ বছর বয়সী আবদুল হামিদ। এই আইনজীবী কিশোরগঞ্জ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন সাতবার, স্পিকারের দায়িত্ব পালন করেছেন দুই দফা।
বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতির ছোট ভাইয়ের মরদেহ কিশোরগঞ্জে দাফন হবে। এতে তার উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
১৯৪৪ সালের ১ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার কামালপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আবদুল হামিদ। তার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ১৯৫৯ সালে, ছাত্রলীগে যোগ দেয়ার মধ্য দিয়ে।
১৯৭০ সালের নির্বাচনে ময়মনসিংহ-১৮ আসন থেকে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য হিসাবে নির্বাচিত হন আবদুল হামিদ। মুক্তিযুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতি হিসাবে চলতি বছর আব্দুল হামিদকে স্বাধীনতা পদকে ভূষিত করা হয়।
১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ দেশের প্রথম সাধারণ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-৫ আসন থেকে নির্বাচিত হন আবদুল হামিদ। ১৯৮৬ সালের তৃতীয় সংসদ, ১৯৯১ সালের পঞ্চম সংসদ, ১৯৯৬ সালের সপ্তম সংসদ, ২০০১ সালের অষ্টম সংসদ এবং সর্বশেষ ২০০৮ সালের নির্বাচনেও তিনি সাংসদ নির্বাচিত হন।
সপ্তম সংসদে ১৯৯৬ সালের ১৩ জুলাই থেকে ২০০১ এর ১০ জুলাই পর্যন্ত ডেপুটি স্পিকারের দায়িত্ব পালনের পর ২০০১ এর ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত স্পিকার হিসাবে সংসদ পরিচালনা করেন আবদুল হামিদ।আর নবম সংসদে নির্বাচিত হওয়ার পর দ্বিতীয়বারের মতো স্পিকার হন।
স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত ১৯ মেয়াদে ১৬ জন রাষ্ট্রপতি হয়েছেন। সেই হিসোবে আবদুল হামিদ হচ্ছেন দেশের ২০তম রাষ্ট্রপতি, তবে এই পদে সপ্তদশ ব্যক্তি।