ব্লগার আসিফের জামিন শুনানি শেষ, বাকিদের বিকালে

ইন্টারনেটে কথিত ‘ধর্মীয় উস্কানিমূলক’ লেখালেখির অভিযোগে গ্রেপ্তার ব্লগার আসিফ মহীউদ্দিনের জামিন আবেদনের শুনানি শেষে বিকালে আদেশের সময় রেখেছে আদালত। 

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 April 2013, 00:50 AM
Updated : 15 April 2013, 03:00 AM
গ্রেপ্তার বাকি তিন ব্লগারের জামিনের বিষয়েও সোমবার বিকালে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।

দুই দফায় চার দিনের রিমান্ড শেষে ব্লগার আসিফ মহীউদ্দিন এবং সাত দিনের রিমান্ড শেষে ব্লগার সুব্রত অধিকারী শুভ, মশিউর রহমান বিপ্লব ও রাসেল পারভেজকে গতবার আদালতে হাজির করা হয়। তাদের জামিন আবেদন শোনার জন্য সোমবার দিন রেখে তাদের কারাগারে পাঠায় আদালত।

সোমবার সকালে শুভ, বিপ্লব ও রাসেলের আইনজীবী সময়ের আবেদন করলে মহানগর হাকিম মোহাম্মদ তারেক মঈনূল ইসলাম ভূইয়া বিকালে শুনানির সময় রাখেন।

আর আসিফের আবেদনের শুনানি শেষে বিকালে আদেশ দেবে বলে জানায় আদালত। 

হেফাজত ইসলাম নামের একটি সংগঠনের দাবির প্রেক্ষাপটে গত ১ এপ্রিল রাতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রোপ্তারের পর শুভ, বিপ্লব ও পারভেজকে ৫৪ ধারায় সন্দেহভাজন হিসাবে সাত দিনের রিমান্ডে নেন গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক সাজ্জাদ হোসেন।

এর দুই দিনের মাথায় ৩ এপ্রিল সকালে গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় আসিফকে। পরদিন তাকেও একইভাবে তিন দিনের রিমান্ডে নেন গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মাইনুল ইসলাম। পরে রিমান্ড বাড়ানো হয় আরো এক দিন।

আসিফের জামিন আবেদনের শুনানিতে উপস্থিত তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মাইনুল ইসলামের কাছে আদালত জানতে চান, ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তারের পর আসিফের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

জবাবে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, আসিফকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে তিনি যে তথ্য প্রমাণ পেয়েছেন, তাতে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে (আইসিটি) মামলা করা যেতে পারে। 

অন্য তিন ব্লগারের জামিন আবেদনের শুনানির সময়ও তদন্ত কর্মকর্তাকে উপস্থিত থাকতে বলেছে আদালত। 

তাদের পক্ষে রাসেলের বোন অ্যাডভোকেট সোনিয়া পারভিন, অ্যাডভোকেট আলাউদ্দিন মোল্লা ও জ্যের্তিময় বড়ুয়া শুনানিতে অংশ নেয়ার কথা রয়েছে।

যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি ও জামায়াতে ইসলামী নিষিদ্ধের দাবিতে ব্লগার ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের প্রতিবাদেই গত ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশব্যাপী গণজাগরণ সৃষ্টি হয়। পরে এই আন্দোলনে যুক্ত হয় বিভিন্ন ছাত্র ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।

শাহবাগে গণজাগরণ আন্দোলন শুরুর পর মাঠে নামে চট্টগ্রামভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম, যারা গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ঢালাওভাবে ইসলাম অবমাননার অভিযোগ এনে তাদের শাস্তি দাবি করে।

হেফাজতে ইসলাম গণজাগরণ মঞ্চ বন্ধ করে দেয়াসহ যে ১০ জন ‘নাস্তিক’ ব্লগারের ফাঁসির দাবি তুলেছে, সেই তালিকায় আসিফের নাম প্রথমদিকেই ছিল।

ব্লগে লেখালেখিকে কেন্দ্র করে ২০১১ সালের ১ অক্টোবর আসিফকে ১৮ ঘণ্টা আটকে রেখেছিল গোয়েন্দা পুলিশ। পরে ‘লেখালেখি বন্ধ করার পরামর্শ দিয়ে’ মুচলেকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।

ব্লগে লেখালেখির জন্য হামলার মুখেও পড়তে হয় আসিফকে। গত ১৪ জানুয়ারি রাতে উত্তরায় তার ওপর হামলা হয়।

ছুরিকাঘাতের গুরুতর জখম নিয়ে বেশ কিছুদিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।

বাকি তিনজনের মধ্যে শুভ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র। আর বিপ্লব ও রাসেল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী। রাসেল বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থ বিজ্ঞানের ছাত্র ছিলেন।