ব্লগারদের মুক্তি দাবিতে ঢাবি উপাচার্যের কার্যালয় ঘেরাও

বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী সুব্রত অধিকারী শুভসহ গ্রেপ্তার ব্লগারদের নিঃশর্ত মুক্তির বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচর্যের কার্যালয় ঘেরাও করেছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

ঢাবি প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 April 2013, 03:09 AM
Updated : 13 April 2013, 08:00 AM

শনিবার ঘেরাওয়ের আগে অপরাজেয় বাংলার সামনে একটি বিক্ষোভ সমাবেশও করেন তারা।

সমাবেশ শেষে মিছিল নিয়ে উপাচার্যের কার্যালয়ের বারান্দায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

পরে উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ও প্রক্টর অধ্যাপক আমজাদ আলী শিক্ষার্থী শুভর মুক্তির জন্য পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দিলে ঘণ্টাখানেক অবস্থানের পর সেখান থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা চলে আসেন।

বিক্ষোভে অংশ নেয়া বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী পিন্টু অর্ক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “উপাচার‌্য তাদের বলেছেন, আগামী ১৫ এপ্রিল শুভর মামলায় শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। সেদিনই সে মুক্তি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। আর ওই দিন মুক্তি না পেলে পরবর্তীতে তার মুক্তির জন্য জোরালো তৎপরতা চালানো হবে।”

এর আগে সমাবেশে ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মেসবাহ কামাল আটক শুভর মুক্তির দাবিতে সরকারে উদ্দেশে বলেন, “দুই নৌকায় পা দেবেন না। আপনারা মৌলবাদীদের ভোট কখনো পান না, পাবেনও না। তাই ব্লগারদের গ্রেপ্তার করে মৌলবাদীদের সন্তুষ্ট করার চেষ্টা থেকে বিরত হন।”

তিনি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন “শুভর মতো মুক্ত চিন্তার অধিকারীরা আপনার পাশে আছে, থাকবে। আপনি এদের পাশে দাঁড়ান।”

গণজাগরণবিরোধী হেফাজতে ইসলাম ‘নাস্তিক’ ব্লগারদের গ্রেপ্তারের দাবি তোলার পর ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগে এই পর্যন্ত ছয়জন ব্লগারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ, যার সমালোচনা করে আসছে শাহবাগের আন্দোলনকারীরা। 

অধ্যাপক মেসবাহ কামাল শিক্ষার্থী হিসেবে শুভকে কারামুক্ত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন, প্রক্টর ও শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানান।

সমাবেশে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক রফিক উল্লাহ খান বলেন, “মুক্ত চিন্তার ব্লগাররা ইসলামের ক্ষতি করেনি, বরং ক্ষতি করেছে সেই সব সংগঠন, যারা ইসলামকে রাজনীতিতে নিয়ে এসেছে”।

সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মশিউর রহমান প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, “যারা ১৩ দফার মতো রাষ্ট্রদ্রোহের দাবি দিতে পারে, তাদের সঙ্গে আপস না করে আপনি মুক্তমনাদের পাশে দাঁড়ান।”

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ফাহমিদুল হক, বাংলা বিভাগের সিরাজুল ইসলাম এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।

বৃহস্পতিবার বিকালে ডাকসু ভবনের সেমিনার কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেন বাংলা বিভাগের অধ্যাপক রফিকউল্লাহ খান।

সন্ধ্যায় রাজু ভাস্কর্য থেকে প্রতিবাদী আলোর মিছিলের কর্মসূচিও রয়েছে আন্দোলনকারীদের।