অনশনে সংহতি বিশিষ্টজনদের

জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগে শুরু হওয়া অনশনে যোগ দিয়েছেন আরো কয়েকজন। সেই সঙ্গে এই কর্মসূচির প্রতি সমর্থনও বাড়ছে। 

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 March 2013, 06:09 AM
Updated : 28 March 2013, 01:37 PM

গণজাগরণ মঞ্চে সক্রিয় ‘শহীদ রুমী স্কোয়াড’ মঙ্গলবার রাতে এই কর্মসূচি শুরু করে, বৃহস্পতিবার রাতে এর ৪৮ ঘণ্টা অতিবাহিত হয়েছে।

শুরুতে সাতজন অনশনে বসলেও ৪৮ ঘণ্টা পর এই কর্মসূচিতে ১৬ জনকে অংশ নিতে দেখা যায়।

রাতে অনশনকারীদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন ভাষাসৈনিক আব্দুল মতিন এবং জাতীয় পতাকার নকশাকার শিবনারায়ণ দাস।

বিকালে অনশনস্থলে গিয়ে সংহতি জানান শিক্ষক, সাংবাদিক, শিল্পীসহ বিশিষ্টজনেরা।

এই কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন শাহরিয়ার কবির, খুশী কবীর, মামুনূর রশিদ, আবু সাঈদ খান প্রমুখ।

সিপিবির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মনজুরুল আহসান খান, ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী, অধ্যাপক মুনতাসির মামুন, আনু মুহাম্মদ, শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, আইনজীবী তুরীন আফরোজ, সিপিবি নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স অনশনে সংহতি জানান।

সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা শিরিন বানু মিতিল, সঙ্গীতশিল্পী কৃষ্ণকলি ইসলাম, অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রোবায়েত ফেরদৌস, ফাহমিদুল হক, গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম নেতা লাকী আক্তার, শহীদ জননী জাহানারা ইমাম স্কোয়াডের অন্যতম সংগঠক আহমেদ মুনীরুদ্দীন তপু, গণমাধ্যমকর্মী অঞ্জন রায়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নাসরিন খন্দকার প্রমুখ।

ঘাতক-দালাল নির্মুল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, “আগামী ৪ এপ্রিল জনতার দাবি নিয়ে গড়ে ওঠা গণজাগরণ মঞ্চ প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেবে। সে সময় তাদেরকে জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধে স্পষ্ট রূপরেখা প্রধানমন্ত্রীকে জানাতে হবে।”

অনশনের উদ্যোক্তা শহীদ রুমি স্কোয়াডের মুখপাত্র সাদাত হাসান নিলয় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, বৃহস্পতিবার বিকালে আরো পাঁচজন তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন।

এরা হলেন- জাহাঙ্গীরনগর বিশ্বদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম সৌরভ, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএসসি প্রোগ্রামের শিক্ষার্থী এইচ আই হামজা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সৈয়দ ফায়েজ আহমেদ, সেউতি সাগুফতা ও রঞ্জন বণিক।

মঙ্গলবার রাতে অনশন শুরু করা সাতজনের সঙ্গে বুধবার যোগ দেন নারায়ণগঞ্জের স্কুলশিক্ষক আলিফ প্রধান ও ব্লগার সাফি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র স্বাগতম সাহা নীল ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএর শিক্ষার্থী নাসির মোরশেদ।

অনশন শুরু করেছিলেন- সাদাত হাসান নিলয়, মেহেদি হাসান শুভ্র, কাজী আকাশ, শরীফুল হক আনন্দ, মানিক সুত্রধর, কাজী রুবায়েত আদনান দীপ ও নাজমুল আলম ভুঁইয়া (জয়)।

নিলয় জানান, শাহবাগে চলমান অনশনের সঙ্গে সংহতিপ্রকাশ করে ২৯ মার্চ সকাল থেকে খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষাথী অনশন শুরু করবেন।

এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ২৬টি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন তাদের সংহতির কথা প্রকাশ করেছে বলে রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

জাতীয় জাদুঘরের প্রধান ফটকের সামনে এই কর্মসূচি চলছে।

২৫ মার্চ জামায়াত নিষিদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য গণজাগরণ মঞ্চের বেঁধে দেওয়া সময় শেষ হলেও দাবি পূরণ না হওয়ায় মঙ্গলবার শাহবাগ থেকে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

৪ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি পেশের কর্মসূচি ঘোষণার পর আরো কঠোর কর্মসূচির দাবিতে সমাবেশে অসন্তোষ প্রকাশ করেন আন্দোলনকারীদের একটি অংশ।

এর মধ্যেই শাহবাগে অনশনে বসে ‘শহীদ রুমী স্কোয়াড’। তারা বলছেন, গণজাগরণ মঞ্চের সঙ্গে তাদের কোনো বিরোধ নেই। তারা শাহবাগের আন্দোলনের সঙ্গেই আছেন। অনশন তাদের সম্পূরক কর্মসূচি।

গণজাগরণ মঞ্চের পক্ষ থেকেও বলা হচ্ছে, আন্দোলনরত কোনো সংগঠন যে কোনো কর্মসূচি দিতেই পারে এবং তা নিয়ে তাদের কোনো আপত্তি নেই।