‘শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় মিরাজকে’

গীতিকার ও সুরকার আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের ছোট ভাই আহমেদ মিরাজের লাশের ময়নাতদন্তের পর চিকিৎসক জানিয়েছেন, তাকে হত্যা করা হয়েছে শ্বাসরোধ করে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 March 2013, 01:42 AM
Updated : 10 March 2013, 03:58 AM

শনিবার রাতে রাজধানীর কুড়িল ফ্লাইওভারের পাশ থেকে মিরাজের লাশ উদ্ধার করে রেল পুলিশ। সকালে মগবাজারে বুলবুলের বাসায় কিছু সময় রাখার পর ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা মেডিক্যালের মর্গে। 

পরিবারের ধারণা, বুলবুল যুদ্ধাপরাধের মামলায় গোলাম আযমের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেয়ায় তার ভাইকে এভাবে খুন করা হয়েছে।

ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ঢাকা মেডিক্যালের ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক সোহেল মাহমুদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, লাশের বাইরে থেকে বড় কোনো আঘাতের চিহ্ন দেখা না গেলেও মিরাজের দুই ঠোঁটের ভেতরে, মাথার পেছনে এবং বুকের ভেতরে রক্ত জমাট বাঁধা ছিল। তার নাক ছিল ভাঙা।

“লাশের অবস্থা থেকে আমাদের ধারণা, তার মুখে চাপ দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে”, বলেন চিকিৎসক।

কখন ওই হত্যাকাণ্ড ঘটে জানতে চাইলে ডা. সোহেল বলেন, মৃতদেহ দেখে মনে হচ্ছে রাত অনুমানিক ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। তারও ঘণ্টা দুই আগে তিনি কিছু খেয়েছিলেন। পাকস্থলিতে সেই অর্ধপাচ্য খাবারের অংশবিশেষ পাওয়া গেছে।       

খিলক্ষেত থানার ওসি শামীম হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, শনিবার রাত ১টার দিকে খিলক্ষেত-কুড়িল ফ্লাইওভারের পূর্ব পাশে লাশটি পায় রেলওয়ে পুলিশ।

তিনি বলেন, “লাশটি ট্রেনে কাটা নয়। মুখ দিয়ে ফেনা বের হতে দেখা গেছে। এটি হত্যাকাণ্ড বলেই প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।”

নিহতের খালাত ভাই গোলাম মোস্তফা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ৪৮ বছর বয়সী মিরাজ বিমান বন্দরে সি এন্ড এফ এজেন্সির ব্যবসা করতেন। থাকতেন পল্লবীতে বোনের বাসায়। সেখান থেকেই প্রতিদিনের মতো শনিবার সকালে ১০টার দিকে কাজে বের হন। রাতে কুড়িলে তার লাশ পাওয়া যায়।   

পাঁচ ভাই ও তিন বোনের মধ্যে সবার ছোট মিরাজ বিয়ে করেননি বলেও গোলাম মোস্তফা জানান।  

রাতে উদ্ধারের পর সকালে মিরাজের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় রাজধানীর মগবাজারে বড় ভাই আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের বাসায়। এ সময় স্বজনদের কান্নায় সেখানে এক হৃদয়বিদারক পরিবেশ সৃষ্টি হয়।

বুলবুলের সাক্ষ্যের জের ধরে মিরাজকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে বলে পরিবারের সদস্যদের ধারণা।

গোলাম আযমের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের চতুর্দশ সাক্ষী হিসেবে বুলবুল আদালতে ১৯৭১ সালে ঈদ-উল-ফিতরের দিন সন্ধ্যায় পুলিশ কর্মকর্তা ছিরু মিয়া ও তার ছেলের সঙ্গে কথোপকথনের বর্ণনা দেন।

সাক্ষ্যে তিনি বলেছিলেন, সেদিন পাকিস্তানি সেনারা ছিরু মিয়া ও তার ছেলেসহ ৩৯ জনকে কারাগারের বাইরে নিয়ে যায়। তারপর তাদের গুলি করা হয়।

এর আগে ২২ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধাপরাধে মামলার আরেক সাক্ষী ওয়াহিদুল আলম জুনুর রহস্যজনক মৃত্যু হয়। এক নারী চট্টগ্রাম মেডিকেলে জুনুর লাশ রেখে পালিয়ে যায়। জুনু ছিলেন বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলার ১৯তম সাক্ষী।