শুক্রবার সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আয়োজনে এই আলপনা আঁকার কাজ শুরু হয়।
তিন দিন টানা কাজ শেষে রোববার সন্ধ্যায় ৮০০ মশাল জ্বালিয়ে এই পথচিত্রের উদ্বোধন করা হবে বলে শিক্ষার্থীরা জানান।
অর্থনীতি বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণীর শিক্ষার্থী কে এম জুলকারনাইন রাদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা এই পথচিত্রের নকশা করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগের শিক্ষার্থীরাই এতে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছেন।”
এর নকশা সম্পর্কে স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষার্থী রাশেদ-উল-ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিশ্বের এই দীর্ঘতম আল্পনায় ১৯৪৮ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত বাঙালির ইতিহাস থাকবে।”
পুরো পথচিত্রকে ভাগ করা হয়েছে দুই ভাগে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে গোলচত্বর পর্যন্ত এক কিলোমিটার রাস্তায় থাকবে ১৯৪৮ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত উত্থান-পতনের নানা দিক। আর গোলচত্বর থেকে আবাসিক হল পর্যন্ত থাকবে একাত্তর থেকে ২০১৩ সালের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট।
গোলচত্বরে বিশেষভাবে তুলে ধরা হবে বাঙালির মুক্তিসংগ্রামের কথা। পথচিত্রে থাকবে বাঙালি জাতির মুক্তির আকুতি, পাকিস্তানি হানাদারদের বর্বরতা, বীভৎসতা, অত্যাচার আর সশস্ত্র সংগ্রমের মধ্য দিয়ে বাঙালির বিজয় ছিনিয়ে আনার ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট।
ঊনিশশ বাহান্ন সালের ভাষা আন্দোলন, চুয়ান্নর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, আটান্নর আইয়ুব খানের ক্ষমতা দখল, ছেষট্টির ঐতিহাসিক ছয় দফা, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, সত্তরের নির্বাচন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, পঁচাত্তরের ১৫ই অগাস্টের হত্যা, ঊননব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থান, বিরানব্বইয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আন্দোলন, ২০১০ সাল থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম এবং ২০১৩ সালের গণজাগরণের কাহিনীকে ধারণা করবে এই পথচিত্র।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরাই এ কাজের ব্যয়ভার বহন করছেন বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন।
তারা বলছেন, গত বছর ঢাকার মানিক মিয়া এভিনিউয়ে আঁকা এক কিলোমিটার পথচিত্রটিই এতোদিন বিশ্বের দীর্ঘতম পথচিত্র হিসেবে পরিচিত ছিল। শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ কিলোমিটার পথচিত্রটি অাঁকা হলে এটিই হবে বিশ্বের ‘দীর্ঘতম’।