হরতালের সকালে বিক্ষিপ্ত গাড়ি ভাংচুর

বিএনপির সমাবেশ পণ্ড হওয়ার প্রতিবাদে ১৮ দলের সকাল-সন্ধ্যা হরতাল শুরু হয়েছে বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত ভাংচুর ও হাতবোমা বিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 March 2013, 08:58 PM
Updated : 7 March 2013, 05:37 AM

সকাল সাড়ে ৬টার দিকে রাজধানীর শনির আখড়া ব্রিজের কাছে মিছিল বের করে ইসলামী ছাত্র শিবির। এ সময় কয়েকটি হাতবোমাও বিস্ফোরিত হয়। ককটেল ফাটানো হয় ধোলাইপাড় এলাকাতেও।

একই সময়ে যাত্রাবাড়ীর বিবিরবাগিচায় একটি মিছিল থেকে বাস ও হিউম্যান হলার ভাংচুরের পর পুলিশ ধাওয়া দিয়ে হরতালকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় বলে এস আই এমরানুল ইসলাম জানান।

স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মীরা মিছিল নিয়ে বাসাবোর সবুজবাগ এলাকায় গলিতে মিছিল করার পর গাড়ি ভাংচুরের চেষ্টা চালায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। পরে পুলিশ গেলে সেখান থেকে সরে যায় হরতালকারীরা।

সকাল সাড়ে ৭টার দিকে কারওয়ান বাজার আন্ডার পাসের কাছে দুটি হাতবোমা ফাটানো হয়। কাছাকাছি সময়ে মগবাজার এলাকায় ঝটিকা মিছিল বের করে জামায়াত কর্মীরা। 

সকাল ৭টার পরপরই মিরপুর ১ নম্বর এলাকায় দুটি বাস ভাংচুর করে হরতালকারীরা। হাতবোমা ফাটানোর খবর পাওয়া গেছে রাজারবাগ এলাকা থেকেও। 

হরতালের আগের রাতেও রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ডজন খানেক গাড়িতে আগুন দিয়ে বোমা ফাটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা চালায় হরতাল সমর্থকরা।

যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায় আসার পর গত ২৮ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে ব্যাপক তাণ্ডব চালায় জামায়াত শিবির কর্মীরা। রায় প্রত্যাখ্যান করে রবি ও সোমবার সারা দেশে ৪৮ ঘণ্টা হরতাল করে দলটি।  

আর জামায়াতের সহিংসতার সময় গুলিতে হতাহতের ঘটনাকে ‘সরকারে গণহত্যা ’ আখ্যায়িত করে মঙ্গলবার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল করে জামায়াতের জোটসঙ্গী বিএনপি। জামায়াত ও ইসলামী ঐক্যজোটও ওই হরতালে সমর্থন দেয়।

এরপর বুধবার নয়া পল্টনে পুলিশের সঙ্গ সংঘর্ষে বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ পণ্ড হয়ে গেলে সরকারকে দায়ী করে বৃহস্পতিবার সারা দেশে এই হরতাল ডাকেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

পরে জানানো হয়, বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে এই হরতাল পালন করা হবে।

হরতালে সকাল থেকেই বিপুল পরিমাণ পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন রয়েছে রাজধানীর সড়কগুলোতে। বিভিন্ন অলিগলিতেও পুলিশের গাড়িকে টহল দিতে দেখা গেছে।

অন্যান্য হরতালের মতো এদিনও সকাল থেকেই রাস্তায় রিকশা ও অটোরিকশা চলাচল করছে। অন্য দিনের চেয়ে কম হলেও গণ পরিবহনও চলতে দেখা গেছে।

সকালের প্রথমভাগে গাবতলী, মহাখালী ও সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে দূর পাল্লার কোনো বাস ছাড়েনি। তবে কমলাপুর স্টেশন থেকে যথারীতি ট্রেন ছেড়ে গেছে বলে জানিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।

বুধবার সংঘর্ষের পর থেকেই রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয় ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা নিয়েছে পুলিশ।

ভোরে কার্যালয়ের কলাপসিবল গেইটের ভেতরে অবস্থান নিয়ে নেতাকর্মীদের নিয়ে হরতালের সমর্থনে স্লোগান দিতে দেখা যায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে।

তবে বাইরের রাস্তায় বিএনপি কর্মীদের কোনো তৎপরতা চোখে পড়েনি।

রিজভী সাংবাদিকদের বলেন, “সমাবেশ করা তো গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু সরকার গণবিচ্ছিন্ন হয়ে খড়কুটো আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করছে। বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করতে চাইছে।”

তারপরও হরতাল ‘সফল’ করতে বিএনপি নেতাকর্মীরা মাঠে থাকবে বলে জানান তিনি।