সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদ সারাদেশে

দেলাওয়ার হোসাইন সাইদীর মৃত্যুদণ্ডের পর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর ও মন্দিরে হামলার প্রতিবাদে বুধবার বিভিন্ন জেলায় মানববন্ধন হয়েছে।

জেলা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 March 2013, 09:43 AM
Updated : 6 March 2013, 09:48 AM

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও পূজা উদযাপন পরিষদসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ মানববন্ধন ও বিক্ষোভে অংশ নেন।

সমাবেশ ও মানববন্ধনে বক্তারা জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করাসহ সাম্প্রদায়িক হামলায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

প্রতিনিধিদের পাঠানো সংবাদ:

খাগড়াছড়ি
: সকালে জেলা শহরের শাপলা চত্বরে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ, সনাতন সমাজ কল্যাণ পরিষদ ও সনাতন ছাত্র-যুব পরিষদ মানববন্ধন করে।

বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের জ্যেষ্ঠ নেতাসহ পেশাজীবীরা এতে সংহতি প্রকাশ করেন।

সনাতন সমাজ কল্যাণ পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সজল বরণ সেন বলেন, এই হামলার প্রতিবাদে খাগড়াছড়ি জেলায় আসন্ন দোল পূর্ণিমা উৎসব বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

পরে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর পাঁচ দফা দাবিতে একটি স্মারকলিপি দেন তারা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: সকাল ১১টায় শহরের ক্লাবসুপার মার্কেটের সামনে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ও হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃস্টান ঐক্য পরিষদ মানববন্ধন করে।

রোববার গভীর রাতে শিবগঞ্জ উপজেলার বট-পেকুড়তলা সার্ব্বজনীন দুর্গা পূজা সংঘের মন্দিরের একাংশ আগুনে পুড়ে যায়।

দিনাজপুর: বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ মানববন্ধন করেছে।

ধর্ম যার যার-রাষ্ট্র সবার- শ্লোগানকে সামনে রেখে দিনাজপুর প্রেসক্লাবের সামনে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালিত হয়।

এতে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, উদীচী, মহিলা পরিষদ, দিনাজপুর প্রেসক্লাবের নেতারা বক্তব্য দেন।

কুড়িগ্রাম: শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংলগ্ন কুড়িগ্রাম-রংপুর এবং কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে মানববন্ধন করা হয়।

এতে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ সাম্প্রদায়িক হামলার বিরুদ্ধে বক্তব্য দেন।

মাগুরা
: সকালে শহরে মানববন্ধন, সমাবেশ শেষে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেয় বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও পূজা উদযাপন পরিষদ।

সাড়ে ৯টায় চৌরঙ্গী মোড়ে মানববন্ধন ও সমাবেশ হয়। সমাবেশে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ মাগুরা জেলা শাখা সংহতি প্রকাশ করে।

নোয়াখালী: বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করে হিন্দু, বৌদ্ধ, খিস্ট্রান ঐক্য পরিষদ।

এরপর রাজগঞ্জে হিন্দুদের বাড়িঘর-মন্দিরে ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটে জড়িতদের বিচারের দাবি জানিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেয়া হয়।

মানববন্ধনে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।

ফরিদপুর: সকালে শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদ।

বেলা সাড়ে ১০টার দিকে শহরের গোয়ালচামট এলাকার হাজরাতলা মোড় থেকে একটি মিছিল বের হয়ে প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়।

পরে প্রেসক্লাবের সামনের মুজিব সড়কে মানববন্ধন করে।

বক্তারা সাম্প্রদায়িক হামলার নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান।

গাইবান্ধা: শহরের ডিবি রোডে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও পূজা উদযাপন পরিষদ যৌথভাবে মানববন্ধন করেছে।

এতে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরাও অংশ নেন।

এদিকে একই দাবিতে বাংলাদেশ ছাত্র যুব ঐক্য পরিষদ ও সিপিবি-বাসদ পৃথকভাবে বিক্ষোভ করেছে।

রাজশাহী প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়: সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে মানববন্ধন করেছে রুয়েটের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

মানববন্ধন শেষে অন্যান্যের মধ্যে রুয়েটের সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক মর্ত্তুজা আলীও বক্তব্য দেন।

বক্তারা জামায়াত-শিবিরের তাণ্ডবের সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক  শাস্তির দাবি করেন।

নাটোর: হিন্দু বৈদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ বিকাল ৪টায় শহরের কানাইখালি পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে মানববন্ধন করেছে।

এই কর্মসূচিতে সংখ্যালঘুরা ছাড়াও মহিলা পরিষদ ও ওয়ার্কাস পার্টির নেতৃবৃন্দ যোগ দেন।

জামালপুর: বিকালে শহরে মানববন্ধন করেছে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ ও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।

মানববন্ধন থেকে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি জানানো হয়।

একই দাবিতে দুপুরে ইসলামপুর উপজেলা সদরের থানা মোড়ের বটতলা চত্বরে মানববন্ধন করেছে পূজা উদযাপন পরিষদ।

চাঁদপুর: বিকালে চাঁদপুর শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সমাবেশ করে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ।

সমাবেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য সকল ধর্ম-বর্ণের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

হবিগঞ্জ: বেলা ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত শহরের সার্কিট হাউজ এলাকায় মানববন্ধন করেন মুক্তিযোদ্ধারা।  

মানববন্ধনের আগে সমাবেশ করা হয় সার্কিট হাউজ মিলনায়তনে।

হবিগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডার মোহাম্মদ আলী পাঠান এতে সভাপতিত্ব করেন।

সমাবেশ ও মানববন্ধনে জেলার আট উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড এবং মুক্তিযোদ্ধা বহুমুখী সমবায় সমিতির সদস্যরা অংশ নেন।

নেত্রকোনা: হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও পূজা উদযাপন যৌথভাবে মানববন্ধন করেছে। 

শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনের সড়কে বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত এই মানববন্ধন হয়।

সমাবেশে দোষীদের শাস্তির দাবি জানানো হয়।

শেরপুর: বিকালে শহরের মুক্তিযোদ্ধা নিজাম উদ্দিন সড়কে পূজা উদযাপন পরিষদ বিক্ষোভ-সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছে।

কর্মসূচিতে জেলার বিভিন্ন মন্দিরের পূজারী ও পুরোহিতরাও অংশগ্রহণ করেন।

বরিশাল: পূজা উদযাপন পরিষদ বরিশাল জেলা ও মহানগর শাখা বিকালে নগরীর অশ্বিনী কুমার হল চত্বরে মানবন্ধন করেছে।

পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

বাগেরহাট: বিকালে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও পূজা উদযাপন পরিষদ যৌথভাবে বাগেরহাটে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে।

শহরের সাধনার মোড় থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে আবার সাধনার মোড়ে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে সমাবেশ করেন তারা।

বরগুনা
: হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও পূজা উদযাপন পরিষদ বিকেলে স্থানীয় বন্দর ক্লাব চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।

মিছিলটি শহর প্রদক্ষিণ করে প্রেসক্লাব চত্বরে সমাবেশ ও মানববন্ধনে মিলিত হয়।

ফেনী: হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও পূজা উৎযাপন পরিষদ বিকালে শহরের কালীমন্দির থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে সমাবেশ করে।

সমাবেশে সংহতি জানিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ফেনী পৌর মেয়র নিজাম উদ্দিন হাজারীও বক্তব্য দেন।

সাতক্ষীরা: হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ শহরের নিউমার্কেট এলাকায় বিকালে মানববন্ধন করেছে।

পরিষদের নেতারা ছাড়াও জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার, ওয়ার্কার্স পার্টি, আওয়ামী লীগের নেতারা বক্তব্য দেন।