পরিবারেই ধিক্কার কাদের সিদ্দিকীকে

কাদের সিদ্দিকীর বিতর্কিত অবস্থানের জন্য সংসদে তাকে ধিক্কার জানিয়েছেন তারই বড়ভাই পাটমন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী ।

মঈনুল হক চৌধুরীবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Feb 2013, 07:47 AM
Updated : 24 Feb 2013, 10:05 AM
রোববার রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি বলেন, “তোমাকে ধিক্কার, তোমাকে ধিক্কার।”

ছোট ভাইয়ের উপাধি ‘বঙ্গবীর’ উল্লেখ না করে পাটমন্ত্রী বলেন, একাত্তরে নিজের জীবন রক্ষার জন্যে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল কাদের সিদ্দিকী। তবে বর্তমানে জামায়াতপন্থী টেলিভিশন দিগন্তে অংশ নিয়ে সে বেশামাল হয়ে পড়েছে।

দিগন্ত টেলিভিশনে ‘সবার উপরে দেশ’ নামে একটি টক শো উপস্থাপন করেন কাদের সিদ্দিকী।

সম্প্রতি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের পদত্যাগী বিচারক নিজামুল হকের সঙ্গে প্রবাসী এক আইন গবেষকের স্কাইপে কথিত কথোপকথন প্রকাশ করায় আমার দেশ’র ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে নোবেল পুরস্কার দেয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছিলেন এই মুক্তিযোদ্ধা, যিনি কৃষক-শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্নেহধন্য কাদের সিদ্দিকী ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন। কিন্তু তাতে সফল না হয়ে ভারতে পাড়ি জমান। এর পর ১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে তিনি দেশে ফেরেন।

দেশে ফেরার পর আওয়ামী লীগে যোগ দিলেও পরে দল থেকে বহিষ্কৃত হয়ে কৃষক-শ্রমিক জনতা লীগ নামে নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন।

সংসদের আলোচনায় অংশ নিয়ে কাদের সিদ্দিকী নাম উল্লেখ না করে লতিফ সিদ্দিকী বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিয়ে তিনি ঘোষণা দেন-বঙ্গবন্ধুর চতুর্থ সন্তান হিসেবে। সেই চতুর্থ সন্তান এখন তার কার্যকলাপের কারণে, দিগন্ত টিভির টকশোতে যাচ্ছে এবং দিগন্ত পত্রিকায় লেখালেখি করছে। জনগণ তাকে প্রত্যাখ্যান করেছে।

“তরুণ প্রজন্ম চত্ত্বরও তাকে নব্য রাজাকার আখ্যা দিয়েছে। তিনি এখন বেশামাল হয়ে গিয়েছেন। তিনি বলেছেন- আমি যদি রাজাকার হই, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমার কমান্ডার। ধিক তোমাকে, এ ঔদ্ধত্যকে।”

নিজেকে রক্ষার জন্যে কাদের সিদ্দিকী একাত্তরে যুদ্ধে অংশ নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

অনুজকে উদ্দেশ্য করে লতিফ সিদ্দিকী বলেন, “আমি সংসদে ঘোষণা দিচ্ছি যে একাত্তরে সে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল সেটা ছিল জীবন রক্ষার জন্য, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের জন্য বা দেশের মানুষের মুক্তির জন্যে নয়। ৭৫-এ যে অস্ত্র তুমি হাতে নিয়েছিলে তা প্রতিরোধের জন্য নয়, তোমার জীবন রক্ষার জন্যে। তোমাকে ধিক্কার, তোমাকে ধিক্কার।”

দিগন্ত টেলিভিশনে টকশো উপস্থাপনার পাশাপাশি বিভিন্ন আলোচনায় অংশ নিয়ে ‘আপত্তিকর’ বক্তব্য দেয়ায় সম্প্রতি গণ জাগরণ মঞ্চ থেকে কাদের সিদ্দিকীকে ‘নব্য রাজাকার’ আখ্যায়িত করা হয়।

পাশাপাশি এ জন্য জনগণের কাছে ক্ষমা না চাইলে ‘বঙ্গবীর’ উপাধি কেড়ে নেয়ার হুঁশিয়ারি দেয় আন্দোলনকারীরা।

আলোচনায় লতিফ সিদ্দিকী বিএনপি ও দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার কঠোর সমালোচনাও করেন।

“ দেশের তরুণ প্রজন্ম যখন জেগেছে, তখন তিনি নিশ্চুপ হয়ে গেলেন। আর চিকিৎসার নামে গেলেন সিঙ্গাপুরে। এটা ষড়যন্ত্রের জন্য।”