`ধর্মপ্রাণ মুসলমান এ কাজ করতে পারে না’

বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদকে ব্যবহার করে শুক্রবার কযেকটি ইসলামী দলের তাণ্ডবে চিত্র ঘুরে দেখে ‘স্তম্ভিত’ ঢাকার পুলিশ কমিশনার বেনজির আহমেদ।

নিজস্ব প্রতিবেদক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Feb 2013, 06:46 AM
Updated : 23 Feb 2013, 06:46 AM

পল্টন থানার ওসিসহ পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে শনিবার বায়তুল মোকাররম মসজিদ এলাকা পরিদর্শন করেন কমিশনার।  

পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, শুক্রবার জুমার নামাজের পর মসজিদের ভিতরে অবস্থান নিয়ে সেখানেই হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। আগুন দেয়া হয়েছে জায়নামাজে। মসজিদের দেয়ালের ইট ভেঙে তা দিয়ে পুলিশ ও সাংবাদিকদের আঘাত করা হয়েছে।

বেনজির আহমেদ বলেন, “বাংলাদেশের মুসলমানরা ধর্মপ্রাণ। কিন্তু আজ মসজিদ পরিদর্শন করে যা দেখলাম তাতে আমি হতভম্ভ, স্তম্ভিত।

“একজন ধর্মপ্রাণ মুসলমান কখনো এটা করতে পারে না। এটা চরম নৈরাজ্য, অসৎ উদ্দেশ্যে এটা করা হয়েছে।”

কোনো ‘চক্র’ যাতে ধর্মকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করতে না পারে সেজন্য ধর্মপ্রাণ মানুষকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান মহানগর পুলিশের এই শীর্ষ কর্মকর্তা।

সংঘর্ষের সময় দায়িত্বরত সাংবাদিকদের ওপর হামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পুলিশের ওপর হামলা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল। আর সাংবাদিকদের ওপর হামলা করে তারা ‘গণতন্ত্র ও দেশের কাঠামোকে’ নষ্ট করতে চায়।

শুক্রবার জুমার নামাজের পর ইসলামী ও সমমনা ১২ দলের ব্যানারে শাহবাগের গণজাগরণবিরোধী মিছিল বের করা হয়। ওই মিছিল থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক তাণ্ডব চালানো হয়। চট্টগ্রাম ও সিলেটে জাগরণমঞ্চে ভাংচুর চালায় তারা। হামলা থেকে বাদ যায়নি সিলেট ও ফেনীর শহীদ মিনারও। চাঁদুপরে জাতীয় পতাকা ছিড়ে পদদলিত করা হয়।

কয়েকটি ইসলামী ও সমমনা দলের ব্যানারে এসব হামলা হলেও পুলিশ বলছে, এতে জামায়াতে ইসলামীর প্রত্যক্ষ ইন্ধন ছিল। একই কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীরও। 

রাজধানীতে জুমার নামাজের সময় ইসলামী সংগঠনগুলোর কর্মীরা বায়তুল মোকাররম মসজিদ থেকেই পুলিশের ওপর হামলা শুরু করে। নামাজের পর বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে প্রেসক্লাবের দিকে এগোনোর সময় তোপখানা রোডে ওয়ার্কার্স পার্টির কার্যালয়ের সামনে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে নির্মিত তোরণ ভাংচুর করে তারা।

এক পর্যায়ে তারা পুলিশের ওপর হামলা চালালে শুরু হয় সংঘর্ষ। পুলিশের ওপর বৃষ্টির মতো ঢিল ছুড়তে থাকে মিছিলকারীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে পুলিশ। এ সময় বেশ কয়েকটি হাতবোমাও ফাটানো হয়।

এসব সহিংস কর্মকাণ্ডের জন্য ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ নেজামীসহ সমমনা দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের আসামি করে ১১টি মামলা করেছে পুলিশ।