জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থী গত রোববার রাতে সমাবেশস্থলে আঘাত পাওয়ার পর হাসপাতালে ছিলেন।
মঙ্গলবার বিকালে নিরবতা কর্মসূচি ঠিক হওয়ার ঠিক আগ মুহুর্তে মঞ্চ থেকে ঘোষণা দেয়া হয়, লাকি ফিরেছেন।
সঙ্গে সঙ্গে স্লোগানে স্লোগানে লাকিকে স্বাগত জানায় গোটা সমাবেশ, যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে যারা আট দিন ধরে সমবেত শাহবাগে।
লাকি স্লোগান ধরার আগে সমাবেশে বলেন, “কোনো ধরনের অপপ্রচারে আপনারা বিভ্রান্ত হবেন না। আমারা ঐক্যবদ্ধ আছি, কোনোভাবেই আমরা ঐক্য নষ্ট হতে দেব না।”
এরপরই ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে আবার নিজের চেনারূপে ফেরেন লাকি।
লাকির স্লোগানের পরপরই শুরু হয় নিরবতা কর্মসূচি। তিন মিনিটের এই কর্মসূচি শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুনরায় স্লোগানের আগুন ঝরে তার কণ্ঠে।
লাকি রোববার রাতে সমাবেশস্থলে মাথার পেছনে আঘাত পান। অসুস্থতার মধ্যেও মধ্যরাতে ক্ষণিকের নিজের প্রিয় স্থান ‘প্রজন্ম চত্বরে’ ফেরেন তিনি।
লাকি বলেন, “কেউ একজন পেছন থেকে আমার মাথায় বাড়ি দিয়েছে। আমি তাকে দেখিনি।”
দীর্ঘ পরিশ্রমের কারণে তার শরীরে পানিশূন্যতাও দেখা দেয় বলে চিকিৎসকরা জানান।
কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে গত ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে অবিরাম স্লোগান দিয়ে যাচ্ছেন ছাত্র ইউনিয়ন নেতা লাকি।
লাকিকে আঘাত করার ঘটনায় কেউ কেউ দায়ী করছেন ছাত্রলীগ নেতাদের।
এর মধ্যেই লাকিকে বোন সম্বোধন করে মঙ্গলবার নিজের ফেইসবুক পাতায় ‘স্ট্যাটাস’ দিয়েছেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম।
ভোরে দেয়া ‘স্ট্যাটাসে’ তিনি লিখেছেন, “লাকি আমার বোন। আমরা দুই ভাই-বোন অসুস্থ প্রচার যন্ত্রের শিকার।”
“যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পথ মসৃণ করতে আমরা স্লোগান ধরেই যাব, যতই অপপ্রচার হোক। আমরা শাহবাগে ছিলাম, আছি, থাকব। জয় বাংলা,” লিখেছেন তিনি।
ফেনীর বাসিন্দা লাকি ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সংসদের সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক।
উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে ২০০৭ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হন তিনি।
২০০৯ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের হল আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যোগ দেন ছাত্র ইউনিয়নে।
যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি দাবির আন্দোলনে স্লোগানের জন্য সারাদেশেই এখন পরিচিত মুখ লাকি।
সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটগুলোতে স্লোগানরত লাকির ছবি তুলে অনেকেই লিখেছেন- ‘স্যালুট লাকি আক্তার!’