আপিলে সমান সুযোগের প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় উঠছে

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের ক্ষেত্রে আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষের জন্য সমান সুযোগ রেখে আইন সংশোধনের প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় উঠছে সোমবার।    

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Feb 2013, 02:21 AM
Updated : 10 Feb 2013, 06:43 AM

আইন মন্ত্রী শফিক আহমেদ রোববার আইন সংশোধন বিষয়ক এক বৈঠকের পর সাংবাদিকদের জানান, মন্ত্রিসভার নীতিগত অনুমোদন পেলে এ সপ্তাহের মধ্যেই এ সংশোধনী সংসদে নেয়া হবে।

সংসদের চলতি অধিবেশনেই সংশোধিত বিল পাস হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন মন্ত্রী।

ট্রাইব্যুনাল গত মঙ্গলবার আব্দুল কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন সাজার আদেশ দেয়ার পর দণ্ডের মাত্রা বাড়াতে আপিলের সুযোগ না থাকার বিষয়টি উঠে আসে। ওইদিন বিকালেই রাজধানীর শাহবাগে শুরু হয় ছাত্র-জনতার আন্দোলন। একাত্তরে ‘মিরপুরের কসাই’ হিসেবে পরিচিত কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে দেশজুড়ে শুরু হয় জাগরণ।

এই প্রেক্ষাপটে শনিবার আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেয়ার কথা জানান আইন প্রতিমন্ত্রী।

আর রোববার সচিবালয়ে বৈঠকের পর আইনমন্ত্রী বলেন, আইন সংশোধনের পর প্রসিকিউশন ও ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তি উভয়েই আপিল করতে পারবে।

তিনি বলেন,“এ সংশোধন নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো সুযোগ নেই, আসামিপক্ষ এবং প্রসিকিউশনের সমান অধিকার সৃষ্টির জন্যই আইন সংশোধন হচ্ছে।”

আইন মন্ত্রণালয়ের তথ্য কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান জানান, রায়ের ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করার পর আপিল বিভাগকে তা ৪৫ দিনের মধ্যে তা নিস্পত্তি করতে হবে। প্রয়োজনে আরো ১৫ দিন সময় নেয়া যাবে। অথাৎ, আপিল করার পর সর্বোচ্চ ৬০ দিনের মধ্যে তা নিস্পত্তি করতে হবে।

১৯৭৩ সালের আইনে সরকারের আপিলের কোনো সুযোগ ছিল না। পরে ২০০৯ সালে আইন সংশোধন করে এতে খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের সুযোগ যোগ হয়।

এখন যে কোনো রায়ের বিরুদ্ধে আসামির মতো সরকার বা প্রসিকিউশনেরও আপিলের সুযোগ রাখার বিধান যোগ করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

আব্দুল কাদের মোল্লার রায়ের পর কেন আইন সংশোধন করা হচ্ছে জানতে চাইল মন্ত্রী বলেন, “সুবিচার নিশ্চিত করতেই এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।”

কাদের মোল্লার মামলায় প্রসিকিউশনের অবহেলা ছিল বলে যে অভিযোগ উঠেছে, সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে আইন মন্ত্রী বলেন, “সাক্ষী সাবুদের ভিত্তিতেই রায় দেয়া হয়েছে, সর্বশেষ আদালত যে সিদ্ধান্ত দেবে, তা গ্রহণযোগ্য হবে।”

মন্ত্রিসভার অনুমোদন নিয়ে জাতীয় সংসদে সংশোধনীটি পাস হলে জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লার মামলাতেও সরকার আপিল করতে পারবে বলে শফিক আহমেদ জানান।

মন্ত্রী ছাড়াও আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, সাবেক বিচারপতি আব্দুর রশিদ, সাবেক বিচারপতি কাজী এবাদুল হক, সাবেক বিচারপতি খাদেমুল ইসলাম চৌধুরী, সাবেক বিচারপতি সৈয়দ আমিরুল ইসলাম, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের সম্বয়কারী এম কে রহমান, আইন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. শাহ আলম, মানবধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান, এটর্নি জেনালের মাহবুবে আলম ও সুপ্রিম কোটের সলিসিটার আমিরুল ইসলাম বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।