ট্রাইব্যুনাল ঘিরে নিরাপত্তা বলয়

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রথম রায়ের তারিখ থাকায় পুরাতন হাইকোর্ট ভবন এলাকায় কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Jan 2013, 10:35 PM
Updated : 20 Jan 2013, 11:47 PM

বিচারপতি ওবায়দুল হাসান নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ সোমবার জামায়াতে ইসলামীর সাবেক রুকন আবুল কালাম আযাদের যুদ্ধাপরাধের মামলার রায় ঘোষণার কথা রয়েছে।

আযাদ ওরেফে বাচ্চু রাজাকার মামলার শুরু থেকেই পলাতক রয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের ৬ ধরনের ৮টি ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

এ মামলায় রায় ঘোষণার মধ্য দিয়েই একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বহু প্রতিক্ষিত বিচারের রায় আসা শুরু হচ্ছে।

সকাল থেকেই ট্রাইব্যুনালের চারিদিকে গড়ে তোলা হয়েছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয়। পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দলও ট্রাইব্যুনাল এলাকায় রয়েছে।

ট্রাইব্যুনালে প্রবেশের প্রধান দুই ফটক ছাড়াও আশেপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য মোতায়েন রয়েছেন সকাল থেকে। হাইকোর্টের চারিদিকেও নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, পুরো রাজধানীতেই নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও দপ্তরগুলোতে নেয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

পুলিশের রমনা বিভাগের উপ কমিশনার নুরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আদালত এলাকার আশেপাশের উঁচু ভবনগুলোতেও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ১৬টি ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরায় পুরো পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং সড়কে টহল দিচ্ছে কয়েকটি আর্মার্ড পার্সোনেল ক্যারিয়ার-এপিসি। 

“যে কোনো ধরনের নাশকতা ঠেকানোর জন্য আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত”, বলেন নুরুল ইসলাম।

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াতের সাত শীর্ষ নেতাসহ মোট নয়জনের বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম চলছে। জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লা ও নায়েবে আমীর দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে মামলাও বিচারের পর্যায়ে রয়েছে।

ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন গত বছর ২ সেপ্টেম্বর আযাদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে, যাতে লুট, ধর্ষণ, হত্যা, গণহত্যা ও অগ্নিসংযোগের মতো মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ আনা হয়।

এতে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধের সময় ফরিদপুরের রাজেন্দ্র কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র আযাদ ছাত্রসংঘের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২৫ মার্চের কালরাতের পর তিনি সহযোগীদের নিয়ে ফরিদপুরের বিভিন্ন স্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধ ঘটান।

গত এপ্রিলে আযাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হলেও পুলিশ তার বাসা ও অফিসে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করতে ব্যর্থ হয়। এরপর ট্রাইব্যুনাল গত ৯ সেপ্টেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আমলে নিয়ে ২৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করতে বলে।

আযাদ পলাতক থাকায় এবং বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরও হাজির না হওয়ায় গত ৭ অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল তার অনুপস্থিতিতেই মামলার কার্যক্রম চালিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেয়।

এরপর ৪ নভেম্বর তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল। আযাদের বিরুদ্ধে ৬ ধরনের ৮টি ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়।