বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে উৎসব

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর হোটেল র‌্যাডিসন ওয়াটার গার্ডেনে জড়ো হয়েছিলেন দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের শীর্ষ ব্যক্তিরা।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Nov 2008, 10:54 AM
Updated : 13 Nov 2008, 10:54 AM

প্রতিষ্ঠানটির প্রধান সম্পাদকের সঙ্গে মঞ্চে উঠে দেশের প্রথম অনলাইন সংবাদপত্রের দীর্ঘায়ু ও উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করেন তারা। বিভিন্ন দূতাবাস ও প্রতিষ্ঠান ফুলের তোড়া ও উপহার পাঠিয়ে শুভেচ্ছা জানায়।

দ্বিভাষিক এই সংবাদ উৎসটি গত ২৩ অক্টোবর তৃতীয় বছরে পা রাখলেও অনুষ্ঠান উদযাপন করা হয় বৃহস্পতিবার। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সঙ্গীতের মূর্চ্ছনায় এ অনুষ্ঠান পরিণত হয় গুরুত্বপূর্ণ মানুষের মিলনকেন্দ্রে।

পুরো অনুষ্ঠান ইন্টারনেটে সরাসরি সম্প্রচারিত (ওয়েবকাস্ট) হওয়ায় হাজার মাইল দূর থেকেও এই আনন্দে শরিক হন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের লাখো পাঠক।

উপদেষ্টা সি এস করিম অনুষ্ঠানে বলেন, “আগামী দিন প্রযুক্তির দিন। তরুণরা এ প্রযুক্তি সংক্রান্ত ওয়েবসাইট থেকে উপকৃত হবে। আমি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের দীর্ঘায়ু কামনা করি।”

তথ্য প্রযুক্তিবিদ মোস্তফা জব্বারের প্রত্যাশার সঙ্গে সুর মিলিয়ে উপদেষ্টা মির্জ্জা আজিজ বলেন, “আমি ততোদিন বেঁচে থাকব কিনা জানি না, তবে আশা করি, একদিন দেশের প্রতিটি শিশুর হাতে একটি কম্পিউটার থাকবে এবং প্রতিটি ঘরে ইন্টারনেট সংযোগ থাকবে।”

এর আগে উদ্বোধনী বক্তব্যে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী বলেন, “বাংলাদেশের সংবাদ জগতে গত দুই বছরে একসঙ্গে এতো ঘটনা ঘটে গেছে যা এক প্রজন্মেও দেখে ওঠা কঠিন। এর আগে কখনোই এতো খবর একসঙ্গে বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমগুলো পায়নি। আর এসব খবর সংগ্রহ ও পরিবেশনের কাজটিও এত কঠিন আর কখনো ছিল না।”

বিশ্বজুড়ে ইন্টারনেট ভিত্তিক সংবাদ ব্যবস্থাপনার দ্রুত বিকাশের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সনাতন সংবাদমাধ্যমগুলো খুব দ্রুত এই নতুন ব্যবস্থার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। আগামী ১০ বছর পর বিশ্বের গণমাধ্যমগুলো কেমন চেহারা পাবে তা এই মুহূর্তে অনুমান করাও কঠিন। তবে তা যাই হোক না কেন, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম সেই অগ্রযাত্রায় এগিয়ে যাবে।”     

এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে লেখক হাসনাত আব্দুল হাই বাংলা ব্লগ সাইট, শিক্ষাবিদ খান সারোয়ার মুরশিদ ইংরেজি ব্লগ সাইট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এস এম এ ফায়েজ ইয়ুথ এক্সপ্রেস সাইট, কথাশিল্পী হাসান আজিজুল হক আর্টস সাইট, সাবেক ক্রিকেটার গাজী আশরাফ হোসেন লিপু স্পোর্ট সাইট, ক্রিকেটার খালেদ মাসুদ পাইলট ক্রিকেট সাইট, শিল্পী মুস্তফা মনোয়ার কিডস সাইট, উপদেষ্টা সিএস করিম ও মোস্তফা জব্বার টেক সাইট, অভিনেতা আলী যাকের গ্লিটজ সাইট এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

সবশেষে উপদেষ্টা মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম ও শিক্ষাবিদ খান সারোয়ার মুরশিদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটেন। অনুষ্ঠানের একটি অংশে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম সম্পর্কে একটি অডিও-ভিজুয়াল প্রেজেন্টেশন দেখানো হয়।

দ্বিতীয় বর্ষপূতি উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ফখরুদ্দীন আহমদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে শুভেচ্ছা জানান।

এক বার্তায় তিনি বলেন, “প্রতিষ্ঠার পর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে খুব অল্প সময়েই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে; যা কি না সুশাসন প্রতিষ্ঠার একটি পূর্বশর্ত।”

বর্তমান সরকারও এ বিষয়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করছে বলে বার্তায় জানান তিনি।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম নির্ভরযোগ্য তথ্য দিয়ে এই ডিজিটাল যুগের পাঠকদের ‘আলোকিত’ ও ‘বিনোদিত’ করে যাবে- এই আশা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা।  

সাবেক দুই প্রধামন্ত্রী খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনাকে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হলেও তারা আসতে পারেননি। তবে দুজনেই শুভেচ্ছা জনিয়েছেন।

খালেদা জিয়া তার বার্তায় বলেন, “আমি জানি, বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বহু লোক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে চোখ রাখেন। এ সাইট থেকে তারা দ্রুততম সময়ে সঠিক খবরটি পান। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম সাফল্যের সঙ্গে দুই বছর পূর্ণ করায় আমি আনন্দিত।”

শেখ হাসিনার বার্তায় বলা হয়, “বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম বাংলাদেশে সাংবাদিকতার ধারা বদলে দিচ্ছে।”

জাতীয় সংসদের স্পিকার মুহাম্মদ জমিরউদ্দীন সরকার তার বার্তায় বলেন, “গত দুই বছরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের পাঠক সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। প্রতিষ্ঠানটির সংবাদ কর্মীদের কঠোর পরিশ্রম ও সংবাদ মাধ্যমে নেতৃত্ব দেওয়ার গুণই বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের এই জনপ্রিয়তার কারণ।”  

প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ টি এম শামসুল হুদা এক শুভেচ্ছা বার্তায় বলেন, “দ্রুততম সময়ে দেশ-বিদেশে খবর পৌঁছে দিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম ইতোমধ্যে পাঠকের হৃদয় জয় করে নিয়েছে। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় এ প্রতিষ্ঠান আপসহীন ভূমিকা রাখবে বলে আমি আশা করি।”

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সর্বাঙ্গীন উন্নতি ও সমৃদ্ধি প্রত্যাশা করে তিনি বলেন, দেশ ও জাতি গঠনে গঠনমূলক সংবাদ প্রচারের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি আগামীতেও বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে।

অনুষ্ঠানে অতিথিদের মধ্যে ছিলেন সাবেক প্রধান বিচারপতি মোস্তফা কামাল, সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইদুজ্জামান, সাবেক তথ্যমন্ত্রী এম শামসুল ইসলাম, সাবেক মন্ত্রী আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ড. মঈন খান, ড. ওসমান ফারুক, সাবেক উপদেষ্টা গীতি আরা সাফিয়া চৌধুরী, আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যাপক আলী আশরাফ ডা. দীপুমনি, ড. রেজা কিবরিয়া, সিপিবি’র সভাপতি মনজুরুল আহসান খান ও সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, বিএনপি নেতা আ স ম হান্নান শাহ, জাতীয় পার্টির সাবেক সাংসদ জিএম কাদের, ব্যারিস্টার রফিক-উল-হক, পিএসসির চেয়ারম্যান সাদ’ত হুসেইন, কর ন্যায়পাল খায়রুজ্জামান, এনার্জি রেগুলটরি কমিশনের চেয়ারম্যান গোলাম রহমান, প্রধান উপদেষ্টার সচিব কাজী আমিনুল ইসলাম, সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ, টেলিযোগাযোগ সচিব মাহবুবুর রহমান, স্বরাষ্ট্র সচিব আব্দুল করিম, প্রবাসী কল্যাণ সচিব আবদুল মতিন চৌধুরী, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় সচিব আ ত ম ফজলুল করিম, বাণিজ্য সচিব ফিরোজ আহমেদ, জ্বালানি সচিব মো. মহসিন, পানি সম্পদ সচিব মো. আইয়ূব মিয়া, নাট্যকার আতিকুল হক চৌধুরী, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শমসের মবিন চৌধুরী, কম্পট্রোলার এন্ড অডিটর জেনারেল আহমেদ আতাউল হাকিম, ড. এম এ তাসলিম, বাংলাদেশ বেটার বিজনেস ফোরামের সৈয়দ মাহমুদুল হক, বাসস’র প্রধান সম্পাদক জগলুল আহমদ চৌধূরী, রুশ রাষ্ট্রদূত গেন্নাদি পি ট্রটসেঙ্কো, ইরানের রাষ্ট্রদূত হাসান ফারাজানদেহ, চীনা রাষ্ট্রদূত লিও সানঝেন, যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের উপ প্রধান গীতা পাসি, আমেরিকান সেন্টারের উপ পরিচালক হার্ভি সারনোভিচ, আমেরিকান দূতাবাসের ড্যান বিয়ারস, আইওএম আঞ্চলিক প্রতিনিধি রাবাবক ফাতিমা, বাংলাদেশে বিশ্ব খাদ্য সংস্থার প্রধান এ ডি স্পাইকার, আইইউসিএন কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. আইনুন নিশাত, সাবেক রাষ্ট্রদূত ওয়ালিউর রহমান, আইসিসি’র বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ও এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি মাহবুবুর রহমান, এফবিসিসিআই সভাপতি আনিসুল হক, বিজিএমইএ সভাপতি আনোয়ারুল আলম চৌধুরী, বিকেএমইএ সভাপতি ফজলুল হক, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ও ইস্টার্ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান মীর নাসির হোসেন, ওমেন্স এন্টারপ্রেনারস অ্যাসোসিয়শনের সভাপতি নাসরিন আওয়াল, আমেরিকান চেম্বারের সাবেক সভাপতি আফতাবুল ইসলাম, সিটিসেলের সিইও মিশেল সেইমোর, ওয়ান ব্যাংকের চেয়ারম্যান শহীদুল্লাহ খান বাদল, সিটিব্যাংক এনএ’র বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মামুন রশিদ, জনতা ব্যাংকের পরিচালক ড. ফাহমিদা আখতার, এমজিএইচ গ্র“পের চেয়ারম্যান গাজীউল হক, মাল্টিমোড গ্র“পের পরিচালক তাবিথ আওয়াল ও তাফসির আওয়াল, ম্যানেজমেন্ট কনসালটেন্ট নায়লা চৌধুরী, তথ্য প্রযুক্তিবিদ মোস্তফা জব্বার, ওমেন্স চেম্বারের সভাপতি সেলিমা আহমেদ, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সভাপতি আব্দুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সদরুল আমিন, অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, সাংবাদিক শফিক রেহমান, মোজাম্মেল হোসেন মঞ্জু, সানাউল্লাহ লাভলু, মোস্তফা ফিরোজ, অমিত হাবিব, আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক, কবি আল মাহমুদ, অভিনেত্রী দিলারা জামান, তারানা হালিম, অভিনেতা আলী যাকের, গায়ক সৈয়দ আবদুল হাদী, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, মাকসুদুল হক ও নাসিম আলী খান, ক্রীড়া সংগঠক সাজ্জাদুল আলম ববি, রিয়াজ আল মামুন, হাবিবুল বাশার সুমন, খালেদ মাসুদ পাইলট।

২০০৫ সালের শুরুর দিকে অনলাইন বার্তা সংস্থা ‘বিডিনিউজ’ যাত্রা শুরু করে। ২০০৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে বদলে যায় প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা। ২০০৬ সালের ২৩ অক্টোবর থেকে বার্তাসংস্থার পাশাপাশি একটি পূর্ণাঙ্গ অনলাইন সংবাদপত্র হিসেবে কাজ শুরু করে ‘বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম’।

বর্তমানে ওয়েবসাইটে সপ্তাহের সাত দিন ২৪ ঘণ্টা সংবাদ প্রকাশের পাশাপাশি মোবাইল ফোনে সংবাদ সেবা দিচ্ছে এ সংস্থা। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম দাবি করে, মোবাইল ইন্টারনেটের জন্য বাংলাভাষায় সংবাদভিত্তিক প্রথম ওয়াপ সাইটও তারাই চালু করেছে।

২০০৮ এর সেপ্টেম্বরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম এখন দেশের সবচেয়ে বেশি পঠিত সংবাদভিত্তিক ওয়েবসাইট। প্রতিদিন কমপক্ষে এক লাখ পৃথক কম্পিউটার থেকে পাঠক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে চোখ রাখেন। মাসে অন্তত ৯ কোটি বার এ ওয়েবসাইটে আসেন পাঠকরা। আর এর পাঠকরা প্রতি মাসে পড়েন ১ কোটি ২০ লাখ পাতা।