রোহিঙ্গার সংখ্যা বেড়ে ৪ লাখ ৮০ হাজারে

মিয়ানমানের রাখাইনে দমন-পীড়নের মুখে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা বেড়ে ৪ লাখ ৮০ হাজারে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে কক্সাবাজারে আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলোর সমন্বয় কমিটি।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Sept 2017, 01:13 PM
Updated : 26 Sept 2017, 03:02 PM

নতুন করে অনুপ্রবেশ না ঘটলেও আগেই ঢুকে পড়া ৩৫ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিমের সংখ্যা যোগ করে তালিকা হালনাগাদ করায় এই সংখ্যা বেড়েছে বলে রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে।

২৫ অগাস্ট নিরাপত্তা বাহিনীর প্রায় ৩০টি ক্যাম্পে রোহিঙ্গা বিদ্রো্হীদের হামলার পর থেকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দমন পীড়নের মুখে রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে ঢুকছে।  

সংস্থাগুলোর সমন্বয় কমিটির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ঢোকার সংখ্যা প্রধানত বেড়েছে, দুটি শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেওয়া নতুন প্রায় ৩৫ হাজারের কারণে, যেটা সর্বশেষ হালানাগাদ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি।”

সু চিকে সরেজমিন পরিদর্শনের আহ্বান

এদিকে সেনাবাহিনীর হাতে নিপীড়নের শিকার রোহিঙ্গা সদস্যদের পরিস্থিতি দেখতে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চিকে সরেজমিন পরিদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের একদল মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ।

সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা মুসলিম নিধনের অভিযান চালাচ্ছে বলে জাতিসংঘ অভিযোগ তুললেও মিয়ানমার তা অস্বীকার করে বলছে, বিদ্রোহীদের সমন্বিত হামলার পর তারা পাল্টা অভিযান চালাচ্ছে।

সেনাবাহিনীর অভিযানের মুখেই ৪ লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছে বলে জাতিসংঘের ওই সাতজনের দল বলছে, যারা মিয়ানমারে মানবাধিকার, সংখ্যালঘু ও বর্ণবাদ বিষয়ে বিশেষ র‌্যাপোর্টিয়ারের দায়িত্বে রয়েছেন।

 “সশরীরে গিয়ে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আমরা অং সান সু চির প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি,” তাদের বিবৃতিতে বলা হয়।

তারা বলছে, চলমান সংকট বিষয়ে দায়ীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনাসহ যেসব প্রতিশ্রুতি সু চি দিয়েছেন সেগুলো ‘ফাঁকা বুলিতে’ পরিণত হয়েছে। কারণ এর মধ্যেই অনেক রোহিঙ্গা পালিয়ে গেছে।

অর্ধ শতকের সামরিক শাসনের পট পরিবর্তনের পথে গত বছর ক্ষমতায় আসেন শান্তিতে নোবেলজয়ী সু চি। তিনি মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ অস্বীকার করলেও তার শান্তি পুরস্কার কেড়ে নেওয়ার দাবি উঠেছে বিশ্বজুড়ে। 

সেনাবাহিনীর তৈরি সংবিধানের আওতায় নিরাপত্তা বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণের কোনো সু চির থাকলেও তা সামান্য, যে কারণে তিনি প্রেসিডেন্ট হতে পারেননি। সেসঙ্গে রাজনৈতিক সংস্কারে ভেটো দেওয়ার ক্ষমতাও রেখে দিয়েছে জান্তারা।

বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা নাগরিকত্ববঞ্চিত রয়েছে। কয়েকশ বছর ধরে রোহিঙ্গারা রাখাইন রাজ্যে বাস করলেও তাদেরকে ‘বাংলাদেশ থেকে আসা অবৈধ অভিবাসী’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসহ মৌলিক অধিকারতো দেওয়াই হয় না, উপরন্তু বিভিন্ন সময় তাদের সম্প্রদায়িক সহিংসতার শিকার হতে হয়েছে।