মিয়ানমারকে চাপ দিতে সুইস সহযোগিতা চান রাষ্ট্রপতি

রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধ এবং তাদের দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য মিয়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখতে সুইজারল্যান্ড সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Sept 2017, 01:04 PM
Updated : 26 Sept 2017, 01:04 PM

সুইজারল্যান্ডের নতুন রাষ্ট্রদূত রেনে হলেনস্টাইন মঙ্গলবার বঙ্গভবনে তার পরিচয়পত্র পেশ করতে এলে রাষ্ট্রপতি হামিদ এ আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন পরে সাংবাদিকদের বলেন, রাষ্ট্রপতি নতুন রাষ্ট্রদূতকে বঙ্গভবনে স্বাগত জানান এবং বাংলাদেশে রাষ্ট্রদূত নিযুক্ত হওয়ায় তাকে অভিনন্দন জানান। তার দায়িত্ব পালনকালে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও সম্প্রসারিত হবে বলেও রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন।

“রোহিঙ্গা সঙ্কটের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশের জন্য এটি একটি বড় সমস্যা। রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন বন্ধে এবং তাদের দেশে ফেরা নিশ্চিত করতে মিয়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখতে তিনি সুইজারল্যান্ড সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন।”

মিয়ানমারে দমন-পীড়নের মুখে গত এক মাসে সাড়ে চার লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। আরও প্রায় চার লাখ শরণার্থী গত কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশে বসবাস করে আসছে।

১৯৯২ সালে স্বাক্ষরিত এক চুক্তির আওতায় মিয়ানমার সোয়া দুই লাখের মতো রোহিঙ্গাকে ফেরত নিয়েছিল। কিন্তু পরে সেই প্রক্রিয়া আর এগোয়নি।

বাংলাদেশ-সুইজারল্যান্ডের বিরাজমান সম্পর্ককে ‘অত্যন্ত চমৎকার’ অভিহিত করে রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সুইজারল্যান্ড সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে এ সহায়তা আরও বৃদ্ধি পাবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।

সুইস রাষ্ট্রদূত এ সময় বলেন, তার দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে গুরুত্ব দেয়। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য-বিনিয়োগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এ সম্পর্ক আরও সম্প্রসারিত হবে।

ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত জোয়াও তাবাজারা ডি অলিভেরাও এদিন রাষ্ট্রপতির কাছে পরিচয়পত্র পেশ করেন। 

নতুন দূতকে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ব্রাজিলে বাংলাদেশের দূতাবাস চালুর ফলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য যথেষ্ট সম্প্রসারিত হয়েছে। এর পরিমাণ আরও বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে।

এ লক্ষ্যে দুই দেশের মধ্যে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে সফর বিনিময়ের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন রাষ্ট্রপতি।

বাংলাদেশ তৈরি পোশাক, ওষুধ, পাটজাত পণ্য, সিরামিকসহ আন্তর্জাতিক মানের বিভিন্ন পণ্য উৎপাদন করে জানিয়ে ব্রাজিলে এসব পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধিতে রাষ্ট্রদূতকে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান আবদুল হামিদ।

তিনি বলেন,  জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে জলবায়ু পরিবর্তন, বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তা, অভিবাসনসহ বিভিন্ন বৈশ্বিক ইস্যুতে বাংলাদেশ ও ব্রাজিল একই মনোভাব পোষণ করে এবং একে অপরকে সমর্থন করে। ভবিষ্যতে এই দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার হবে বলে রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন।

সাক্ষাতের সময় ব্রাজিলের নতুন দূত বলেন, ব্রাজিল ও বাংলাদেশ কৃষি, ক্রীড়া ও সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে নিজ নিজ দেশের জাতীয় উন্নয়নে ইতিবাচক অবদান রাখতে পারে।

তিনি এসময় দায়িত্ব পালনে রাষ্ট্রপতির সার্বিক সহযোগতিা চান বলে জানান প্রেস সচিব।

দুই রাষ্ট্রদূত বঙ্গভবনে পৌঁছালে প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের একটি দল তাদের পৃথকভাবে গার্ড অব অনার দেয়।