রোহিঙ্গা পীড়ন বন্ধে ঢাবিতে মানববন্ধন

মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর দমন-পীড়ন বন্ধ করে তাদের ফিরিয়ে নেওয়া দাবিতে মানববন্ধন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Sept 2017, 08:37 AM
Updated : 26 Sept 2017, 10:43 AM

মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘স্মৃতি চিরন্তন’ (উপাচার্য বাংলো) এর সামনে এ মানবন্ধন কর্মসূচি হয়।

‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার’ ব্যানারে আয়োজিত এই মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষক সমিতি, অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন এবং সাধারণ শিক্ষার্থীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশ নেয়।

মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, “অবিলম্বে জাতিসংঘের উদ্যাগে তাদের (রোহিঙ্গাদের) প্রত্যাবর্তন এবং তাদের জন্য শান্তি বলয় নিশ্চিত করতে হবে।”

রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো নির্যাতনে দায়ীদের আন্তর্জাতিক বিচারের মাধ্যমে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে, যাতে কেউ মানবতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার সাহস না পায়।”

রোহিঙ্গাদের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, “রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী মিয়ানমারে এসেছিল আরব এবং পার্সি থেকে। বাণিজ্য কর্ম পরিচালনার জন্য, এটি মূলত তাদের উৎস। পরবর্তীতে এই আরাকান অঞ্চলে মুসলিম জনগোষ্ঠী গোড়াপত্তন ঘটে। অথ্যাৎ রোহিঙ্গাদের আরাকান অঞ্চলে বসবাসের ইতিহাস হাজার বছরের।

“কিন্তু মিয়ানমার বা বর্মিরা ইতিহাসে এক সময় মগ জলদস্যু হিসেবে পরিচিত ছিল। মূলত দস্যু বৃত্তিই হচ্ছে তাদের ঐতিহাসিক চরিত্র। আধুনিক সময় অনেক পরিবর্তন হলেও মিয়ানমারে সরকারের মধ্যে মানবিকতার বীজ তৈরি হয়নি। বরং ঐতিহাসিক যে দস্যু বৃত্তিক চরিত্র, এখনো সেটিকেই ধরে রেখেছে। এজন্য আজকে মিয়ানমারের সরকার একটি জাতি নিধন করছে।”

রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে আন্তজার্তিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দীন বলেন, “১৯৬২ সাল থেকে দেশটি সামরিক শাসনে পরিচালিত হচ্ছে।গণতন্ত্রহীনতা কারণে মিয়ানমারে এই সমস্যা।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি সভাপতি অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, “জাতিগত নিধন চলছে। সেখানে রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি হিন্দুদের ওপর নির্যাতন করছে, হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে মিয়ানমার সরকার; এটা মানবতার ওপর আঘাত।”

এ মানববন্ধনে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এম অহিদুজ্জামান সংহতি জানান।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক খন্দকার বদরুল হক, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নীল দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. আব্দুল আজিজ, শামসুন্নাহার হলের প্রাধ্যাক্ষ অধ্যাপক সুপ্রিয়া সাহা এবং ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সভাপতি আবিদ আল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স।

অন্যদের মধ্যে মানববন্ধনে অংশ নেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক এজেএম শফিউল আলম ভূইঁয়া, সমাজকল্যাণ ইনস্টিটিটের অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ, ইসলামে ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রাব্বানী, হাজী মুহাম্মদ মুহসিন হলের প্রাধ্যাক্ষ অধ্যাপক মো. নিজামুল হক ভূইঁয়া এবং জগন্নাথ হলে প্রাধ্যাক্ষ অধ্যাপক অসীম কুমার সরকার।