ইসিতে লাগাতার কর্মবিরতির হুমকি

নির্বাচন কমিশনের একটি প্রকল্পের লোকবল রাজস্ব খাতে নেওয়ার প্রস্তাব বাতিলের দাবিতে আগামী সোমবার থেকে লাগাতর কর্মবিরতির হুমকি দিয়েছে ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Sept 2017, 07:56 PM
Updated : 25 Sept 2017, 07:59 PM

তাদের কর্মবিরতির মধ্যে সোমবার জাতীয় পরিচয়পত্র উইংয়ে সাময়িক সার্ভার সংযোগ বন্ধ রাখা এবং নির্বাচন ভবনে র্যা ব-পুলিশ ডেকে আনার নিন্দা জানিয়েছে তারা।

ইসির জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অণুবিভাগের আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যান্সিং এক্সেস টু সার্ভিস-আইডিইএ  প্রকল্পের মেয়াদ ডিসেম্বরে শেষ হচ্ছে। ‘ভোটার তালিকা প্রস্তুত এবং জাতীয় পরিচিতি সেবা প্রদানে টেকসই অবকাঠামো উন্নয়ন’ শীর্ষক নতুন একটি প্রকল্পে আইডিইএ’র টেকনিক্যাল এক্সপার্ট ও সাপোর্টারদের সরাসরি পদায়ন ও উচ্চতর গ্রেড দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

বয়স ও শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিল করে প্রকল্পের লোকবল রাজস্ব খাতে নেওয়ার প্রকল্প প্রস্তাবনা সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশনের প্রকল্প মূলায়ন কমিটিতে (পিইসি) পাঠানো হয়।

এর প্রতিবাদে সোমবার শেরে বাংলানগরে নির্বাচন ভবনে ইলেকশন কমিশন অফিসার্স এসোসিয়েশন ও কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ কর্মবিরতি পালন করে।

কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের মহাসচিব ওসমান গণি জয় বলেন, “আমরা প্রতিবাদ কর্মসূচি হিসাবে কর্মবিরতি পালন করেছি। আমাদের প্রধান দাবি, সরকারি বিধি না মেনে প্রকল্পের মেয়াদ শেষে আইডিইএ প্রকল্পে কর্মরত টেকনিক্যাল এক্সপার্ট ও সাপোর্টারদের রাজস্বখাতে স্থানান্তরের নতুন ডিপিপি প্রকল্প প্রস্তাবনাটি বাতিল করতে হবে।”

তিনি জানান, এসোসিয়েশন ও ঐক্যপরিষদের কেন্দ্রীয় ও মাঠ কর্মকর্তাদের সমন্বয় পরিষদ রোববার বৈঠক করেছে। দেশে ফেরার পর বুধবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিবের কাছে বিষয়টি উপস্থাপন করা হবে। দাবি না মানলে আগামী সোমবার থেকে লাগাতার কর্মবিরতিতে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হবে।

রোববারও কর্মবিরতি পালন করা হয়েছে জানিয়ে ঐক্য পরিষদের মহাসচিব বলেন, “এনআইডি প্রকল্পের লোকজনরা দুই-তিন ঘণ্টা সার্ভার বন্ধ রেখেছে, যা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। কর্মবিরতি ও প্রতিবাদ করায় ইসির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ‘ভয় দেখাতে’ নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে পুলিশ ও র্যা ব সদস্যদের ডেকে আনা হয়েছে। এ ঘটনায় ইসির সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে।”

‘ভোটার তালিকা প্রস্তুত এবং জাতীয় পরিচিতি সেবা প্রদানে টেকসই অবকাঠামো উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের ডিপিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, এ প্রকল্পের মেয়াদ পাঁচ বছর শেষ হওয়ার পর এর জনবল রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করা হবে। এ প্রস্তাবের প্রতিবাদ করে ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, এ ধরনের প্রস্তাব সরকারি বিধি-বিধানের পরিপন্থি।

সোমবার বিকাল ৫টার পর কমিশন সচিবালয়ে যৌথ বৈঠক করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলা বৈঠক শেষে রাতে ইলেকশন কমিশন অফিসার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি খন্দকার মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, মঙ্গলবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে সার্বিক বিষয় উপস্থাপন করা হবে। ডিপিপি প্রস্তাব সংশোধন করে ফের পাঠানোর জন্য দাবি তুলে ধরা হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসির অতিরিক্ত সচিব মো. মোখলেসুর রহমান বলেন, “একটি প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এর অনেক কিছু পরিবর্তন-পরিমার্জন হয়ে একনেকে উঠবে, অর্থ মন্ত্রণালয়ে যাবে। প্রকল্পের লোকজন তো রাজস্বখাতে নিতে সরকারি বাধা রয়েছে। তারপরও এ নিয়ে হয়ত ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে। আশা করি, সব ঠিক হয়ে যাবে।”