শুক্রবার জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ ওই সড়কে ‘ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবসের’ উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানে তার এ ঘোষণা আসে।
তিনি বলেন, “ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস আমরা কাগজে লিখলাম, সুন্দর সুন্দর বক্তব্য দিলাম, বাস্তবতা যদি না থাকে তাহলে এসব কথা বলে লাভ নেই। শুধু মুখে নয়, আমরা কারমুক্ত দিবসের যথার্থতা যেন উপলব্ধি করি এবং বাস্তবতা যেন প্রয়োগ করি।”
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রাণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শফিকুল ইসলাম এবং ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলনের চেয়ারম্যান অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চনকে সামনে রেখে কাদের বলেন, অন্তত একটি দিন, কোনো একটি রাস্তায় ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখতে চান তিনি।
এ সময় শফিকুল ইসলামকে উদ্দেশ্য করে মন্ত্রী বলেন, “সচিব সাহেব, বলেন তো কোন রাস্তায় বন্ধ থাকবে?”
জবাবে অতিরিক্ত সচিব মানিক মিয়া এভিনিউয়ের কথাই বলেন। মন্ত্রী তখন তার কাছে জানতে চান, কোন দিন গাড়ি বন্ধ রাখলে ভালো হয়।
সচিবের উত্তর শুনে মন্ত্রী এরপর বলেন, “মাসের প্রথম শুক্রবার?... তাহলে প্র্যাক্টিক্যাল কিছু একটা আমরা করি। শুধু ভাষণ দিয়ে চলে গেলাম, বেলুন উড়ালাম… হলো না কিছু।”
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতিবছর ২২ সেপ্টেম্বর ‘কার-ফ্রি ডে’ বা ‘ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস’ পালন করা হলেও বাংলাদেশে এ দিবস পালনের বিষয়টি তুলনামূলকভাবে নতুন। গতবছর এ দিবসের অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের সড়ক পরিবহন আইনে পরিবারপ্রতি গাড়ির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করার কথাও বলেছিলেন।
বেসরকারি সংগঠন ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের জরিপের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকার রাস্তায় ব্যক্তিগত গাড়ির সুবিধা ভোগ করে মাত্র ৬ শতাংশ মানুষ, অথচ এই গাড়িগুলো ৭৬ শতাংশ সড়ক দখল করে রাখে। আর প্রতি বছর ঢাকার রাস্তায় নামছে এক লাখ দশ হাজারের বেশি গাড়ি।
সকাল ৯টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত মানিক মিয়া এভিনিউয়ের একপাশে যান চলাচল বন্ধ রেখে এবারের ‘ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবসের’ অনুষ্ঠান চলে। স্কুল শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি নানা বয়সী মানুষকে সেখানে সাইক্লিং ও স্কেটিংয়ে অংশ নিতে দেখা যায়। রাজপথ জনবান্ধব করতে সচেতনতামূলক প্রচার ও সাংস্কৃতিক আয়োজনও সেখানে ছিল।
বেলা সাড়ে ১০টার দিকে সংসদের দক্ষিণ প্লাজার দিকে গাড়ি রেখে পায়ে হেঁটে অনুষ্ঠানস্থলে আসেন সড়ক পরিবহনমন্ত্রী কাদের। বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করার পর ওই সড়কে সাইকেলও চালান।
পরে মানিক মিয়া এভিনিউকে মাসে এক দিন ‘ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত’ ঘোষণা করে তিনি বলেন, “অন্তত একটা কিছু আমরা করি… শুধু শুধু ভাষণ দিলাম, এই দিবসের কোনো বাস্তবতা খুঁজে পাওয়া গেল না…”
ঢাকা পরিবহন সমন্বয় পরিষদের আয়োজনে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রাণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শফিকুল ইসলাম এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।