সোমবার ‘নারীর মানবাধিকার দলিল সিডও: অভিবাসী নারী শ্রমিকদের অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনায় তিনি একথা জানান।
নমিতা বলেন, “নারী নির্যাতন নিয়ে অন্য দেশের সঙ্গে আমরা যাই একটু কথা বলতে পারি, কিন্তু সৌদি আরবের সঙ্গে আমাদের কথা বলতেও সমস্যা।”
বাংলাদেশের ৭০ হাজারের মতো নারী সৌদি আরবে গৃহকর্মে রয়েছেন। এদের অনেকে মালিকের নির্যাতনের শিকার হয়ে পালিয়ে আসেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
তবে গৃহকর্মীদের পালিয়ে আসার প্রধান কারণ নির্যাতন নয় বলে দাবি করে আসছেন প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী। এই মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিও একই দাবি করছে।
তবে মহিলা পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় সচিব নমিতা বিপরীত কথা বললেন।
তিনি বলেন, “সৌদি আরবে আমাদের মেয়েরা সবচেয়ে বেশি নিগৃহীত হচ্ছে। দেখা যায় চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, এরপরও আরেক বাড়িতে পাঠিয়ে দিচ্ছে।
“অথচ জর্ডানে সবচেয়ে ভালো আছে। ওমান, কুয়েতে ভালো আছে।”
সৌদি আরবে নির্যাতনের জন্য বাংলাদেশি রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকেও দায়ী করেন সচিব।
“এসব বন্ধে একটি নীতিমালা করা প্রয়োজন। কিন্তু তখন দেখা যাবে, লোক পাঠানোই বন্ধ হয়ে যাবে। সেজন্য এটি কীভাবে করা যায়, তা নিয়ে পরামর্শ প্রয়োজন।”
আলোচনা সভায় অভিবাসী নারী-পুরুষদের বৈষম্যের বিষয়টি তুলে ধরেন ইউএন উইমেন-এর উইমেন্স ইকোনমিক এমপাওয়ারমেন্টের প্রোগ্রাম কোঅর্ডিনেটর তপতী সাহা।
তিনি বলেন, “অভিবাসন বিষয়ে একজন পুরুষ ও তার পরিবার সবাইকে আনন্দের সাথে সংবাদটি দেন। কিন্তু একই কাজে গিয়েও একজন নারী সামাজিক প্রতিবন্ধকতার কারণে তা লুকিয়ে রাখে।”
অভিবাসী নারীদের সুরক্ষা নিশ্চিতে প্রবাসী কল্যাণ, নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের একসাথে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, নারীর অভিবাসন প্রক্রিয়ার প্রতিটি ক্ষেত্রে রয়েছে প্রতারণা, সহিংসতা ও বৈষম্য। সরকার এক্ষেত্রে অনেক পদক্ষেপ নিলেও নানা কারণে তা ব্যাহত হচ্ছে।
মহিলা পরিষদের আনোয়ারা বেগম মুনিরা খানম মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সহ-সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম। মহিলা পরিষদের অ্যাডভোকেসী ডিরেক্টর জনা গোস্বামীর পরিচালনায় আলোচনা সভায় লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন সংগঠনটির আন্তর্জাতিক উপ-পরিষদ সম্পাদক রেখা সাহা।