বার্মিজ পণ্য বিক্রি ঠেকাবে গণজাগরণ মঞ্চ

রোহিঙ্গা নির্যাতনের প্রতিবাদে মিয়ানমার দূতাবাস ঘেরাও কর্মসূচি থেকে দেশটির পণ্য বর্জন করতে বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে গণজাগরণ মঞ্চ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Sept 2017, 01:28 PM
Updated : 11 Sept 2017, 02:24 PM

মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার বলেছেন, “সারাদেশে বার্মার যেসব পণ্য বিক্রি হচ্ছে, তা বাংলাদেশ বর্জন করবে। কারণ এসব পণ্যে রোহিঙ্গাদের রক্তের দাগ লেগে আছে। বিক্রিত এই অর্থ দিয়ে মিয়ানমার অস্ত্র কিনছে।

“তাই সর্বাত্মকভাবে আমরা সকল ধরনের পণ্য বর্জনের ডাক দিচ্ছি। দেশের কোথাও বার্মিজ পণ্য বিক্রি হতে দেওয়া হবে না।”

সরকার মিয়ানমার বা বার্মা থেকে চাল আমদানির যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা বাতিলের দাবিও জানিয়েছেন ইমরান।

“যে চালের মধ্যে মানুষের রক্ত, সে চাল বাঙালি খাবে না। সেই চাল দেশে ঢুকতে দেওয়া হবে না।”

সোমবার বিকালে ঢাকায় মিয়ানমারের দূতাবাস ঘেরাওয়ের আগে গুলশান ২ নম্বর গোল চত্বরে এক সমাবেশে মিয়ানমারের পণ্য বর্জনের ডাক দেন গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র।

মিয়ানমার থেকে আসা ইয়াবার তরুণ সমাজের উপর ভয়াবহ প্রভাবের কথাও বলেন তিনি।

“যারা ইয়াবা খান, ইয়াবা খাওয়া বন্ধ করেন, এই ইয়াবা বিক্রি করে বাংলাদেশে ২০ হাজার কোটি টাকা ব্যবসা করছে। এই টাকা দিয়ে বিমান কিনেছে, যদি বন্ধ করেন তাহলে বিমানের ফুয়েল কেনার টাকাও তারা (মিয়ানমার) পাবে না।”

মিয়ানমারে ‘গণহত্যার’ শিকার রোহিঙ্গাদের দলে দলে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার মধ্যে এই কর্মসূচি পালন করে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে গড়ে ওঠা সংগঠনটি।

রোহিঙ্গাদের প্রতি বাংলাদেশের মানবিক দৃষ্টিভঙ্গীর বিশ্বজুড়ে প্রশংসার বিষয়টি তুলে ধরে মিয়ানমারের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান ইমরান।

“মিয়ানমারের অমানবিক আচরণ মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। যে দেশে এত বড় মানবতাবিরোধী অপরাধ হচ্ছে, সে দেশের প্রধান আবার শান্তিতে নোবেল পেয়েছেন।”

সমাবেশের পর মিয়ানমার দূতাবাস অভিমুখে গণজাগরণের মিছিল যাত্রা শুরু করলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়।

এরপর ইমরানের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল চারটি দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি দূতাবাসে দিয়ে আসেন।

গণজাগরণের দাবিগুলো হচেছ- অবিলম্বে রোহিঙ্গাদের উপর গণহত্যা বন্ধ করতে হবে, মিয়ানমারে ১৯৮২ সালে নাগরিক আইন সংশোধন করে তাদের নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দিতে হবে, বাংলাদেশের অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের সম্মানের সঙ্গে ফেরত নিতে হবে এবং এই গণহত্যা জড়িতদের বিচারে আওতায় আনতে হবে।