শরণার্থীদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো অগ্রাধিকারে: হাসিনা

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতার মুখে পালিয়ে আসা শরণার্থীদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনই বাংলাদেশের অগ্রাধিকারে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Sept 2017, 05:43 PM
Updated : 7 Sept 2017, 05:26 PM

ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেতনো মারসুদি মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে একথা বলেন তিনি।

রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে আলোচনার জন্য বাংলাদেশে এসেছেন রেতনো মারসুদি। এর আগে মিয়ানমার সফর করেন তিনি।

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফ সিনিয়র জেনারেল ইউ মিন আং হ্লিয়াংয়ের সঙ্গে সাক্ষাত করে সহিংসতা বন্ধের অনুরোধ করেছেন বলে শেখ হাসিনাকে জানান ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

সাক্ষাতে তাদের আলোচনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের জানান।

“প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মিয়ানমারে শরণার্থীদের ফেরত পাঠানোই তার সরকারের মূল অগ্রাধিকার।”

সামরিক শক্তি দিয়ে এই সমস্যার সমাধান হবে না মন্তব্য করে ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই সমস্যার সমাধান রাজনৈতিকভাবে করতে হবে।”

বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিবেশী এই দেশের বিচ্ছিন্নতাবাদী দমনে বিজিবি সহায়তা করতে পারে।

শেখ হাসিনা বলেন, “মিয়ানমারকে বাংলাদেশের সমস্যা বুঝতে হবে। বাংলাদেশে অবস্থানরত সে দেশের নাগরিকরা বাংলাদেশের জন্য বড় বোঝা।”

মিয়ানমারে জাতিগত নিপীড়নের মুখে পালিয়ে এসে পাঁচ লাখের বেশি মানুষ গত কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে আছে।

বাংলাদেশ তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে এলেও মিয়ানমার তাতে সাড়া দেয়নি। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়াদের মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে মেনে নিতেও তারা নারাজ।

গত ২৪ অগাস্ট রাখাইনে পুলিশ পোস্ট ও সেনাক্যাম্পে হামলার পর সীমান্তে নতুন করে রোহিঙ্গাদের ঢল নামে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের হিসাবে, গত ১২ দিনে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা ৮৭ হাজার মানুষ বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন,“এই সমস্যা সমাধানে মিয়ানমারকে আমরা সহায়তা করতে পারি। তাদের সহিংসতা বন্ধ করতে হবে।”  

জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বাধীন কমিশনের সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বড় মুসলিম দেশ হিসাবে মিয়ানমারের এই সমস্যা সমাধানে পদক্ষেপ নিতে নিজের দেশের আগ্রহের কথা জানান ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

রেতনো মারসুদি বলেন, তারা রাখাইনে ত্রাণ পাঠাবেন। মিয়ানমার সরকার এতে রাজি হয়েছে।

বাংলাদেশে অবস্থানরত মিয়ানমারের নাগরিকদের জন্যও ইন্দোনেশিয়া ত্রাণ পাঠাতে চায় বলে জানিয়েছেন তিনি।

সাক্ষাতকালে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী,পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, মুখ্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, বাংলাদেশে ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত রিনা প্রিথিয়াসমিয়ারসি সোয়েমারনো উপস্থিত ছিলেন।