ফের ‘ষড়যন্ত্র’ মোকাবেলায় ঢাবি শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতির আহ্বান

সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিরুদ্ধে অগাস্ট ছাত্র বিক্ষোভের দশম বার্ষিকীর কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে ফের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির বিরুদ্ধে ‘ষড়যন্ত্র’ মোকাবেলায় শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 August 2017, 03:02 PM
Updated : 23 August 2017, 04:07 PM

তিনি বলেছেন, “বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার সব সময় আলোর পক্ষে, অন্ধকারের বিরুদ্ধে। কিছু কালো মনের মানুষ ২০০৭ সালে দেশের ক্ষমতা কব্জা করেছিল বলেই আজকে ‘কালো দিবস’।

“দেশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতা ও ষড়যন্ত্র অচিন্ত্যনীয়।বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের দায়িত্ব সব চক্রান্ত রুখে দেওয়া।”

আরেফিন সিদ্দিক বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের শক্তির বিরুদ্ধে চার দিক থেকে ‘ষড়যন্ত্র চলছে’, তা মোকাবেলা করতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত থাকতে হবে।

২০০৬ সালে চার দলীয় জোট সরকারের মেয়াদ শেষে রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ নিজেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নিলে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয় আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট।দেশজুড়ে শুরু হয় বিক্ষোভ-সহিংসতা।

এই পরিস্থিতিতে ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি সেনাবাহিনীর সমর্থনে ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে নতুন তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব নেয়। এরপর জরুরি অবস্থা জারি করে দুর্নীতি দমন অভিযানের কথা বলে গ্রেপ্তার করা হয় শীর্ষ রাজনীতিকদের। সংকুচিত করা হয় বাক ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা।

এই অবস্থার মধ্যে ২০০৭ সালের ২০ অগাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে অস্থায়ী ঘাঁটি তৈরি করা সেনাবাহিনীর কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে মারামারিকে কেন্দ্র করে ফুঁসে ওঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।   

ব্যাপক ছাত্র বিক্ষোভের মধ্যে তৎকালীন সেনা নিয়ন্ত্রিত সরকার সান্ধ্য আইন জারি করে দমন অভিযান শুরু করে। ২৩ অগাস্ট রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারজন শিক্ষক ও আটজন ছাত্রকে গ্রেপ্তার করা হয়।

 

ছাত্র-শিক্ষক নির্যাতনের এই দিনকে ‘কালো দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

দিবসটি উপলক্ষে এদিন সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা কালো ব্যাজ ধারণ করেন। বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বন্ধ থাকে শিক্ষা কার্যক্রম।

সকাল ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন উপাচার্যা আরেফিন সিদ্দিক।

তিনি বলেন, “এদেশে মীর জাফর ও মোশতাকের বংশধরেরা এখনও বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে আছে। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের পরবর্তীকালের ক্ষমতাসীনরা আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছে। ১৫ অগাস্ট ও ২১ অগাস্টের চক্রান্তের পেছনে যারা ছিল, তাদের চিহ্নিত করার সময় এসেছে।”

সভায় অন্যদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নাসরীন আহমাদ, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল, কারা নির্যাতিত শিক্ষক অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন, অধ্যাপক সদরুল আমিন এবং  অফিসার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ আলী আকবর বক্তব্য দেন।