লংগদুর ঘটনা তদন্তে কেন কমিশন নয়: হাই কোর্ট

রাঙামাটির লংগদুতে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর বসতিতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা তদন্তে কমিশন গঠনের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জনতে চেয়ে রুল জরি করেছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 August 2017, 09:57 AM
Updated : 21 August 2017, 09:57 AM

এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর হাই কোর্ট বেঞ্চ সোমবার এই রুল দেয়।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইনসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ও পুলিশের মহাপরিদর্শককে আট সপ্তাহের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদালতে রিটকারী পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শাহদীন মালিক। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মো. সুলতান উদ্দিন ও এম মনজুর আলম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস

পরে শাহদীন মালিক সাংবাদিকদের বলেন, কমিশন গঠনের বিষয়ে রুল জারির পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়েও রুল দিয়েছে আদালত।

“ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষয়ক্ষতির নিরূপনে কমিশন কেন কাজ করবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।” 

শাহদীন মালিক জানান, কমিশন গঠনের বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে মন্ত্রী পরিষদ সচিবকে আগামী তিন মাসের মধ্যে অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। শুনানির পরবর্তী তারিখ রাখা হয়েছে ৩ নভেম্বর।

খাগড়াছড়ি-দীঘিনালা সড়কের চার মাইল (কৃষি গবেষণা এলাকা সংলগ্ন) এলাকায় যুবলীগের লংগদু সদর ইউনিয়ন শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক নূরুল ইসলাম নয়নের লাশ পাওয়ার পর গত ২ জুন বিক্ষোভ মিছিল থেকে লংগদুর তিনটিলা পাড়া, বাইট্রাপাড়া, উত্তর ও দক্ষিণ মানিকজুড় এলাকায় পাহাড়িদের ঘরবাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে।

ওই ঘটনায় ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও চারশ জনকে আসামি করে পুলিশ একটি মামলা করে। এছাড়া কিশোর চাকমা নামের ক্ষতিগ্রস্ত এক ব্যক্তি ১০ জুন রাঙামাটির বিচারিক হাকিম আদালতে আরেকটি মামলা করেন; সেখানে ৯৮ জনকে আসামি করা হয়।

পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর বসতিতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ওই ঘটনা তদন্তের জন্য বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠনের দাবিতে গত ১২ জুন চার সচিব ও পুলিশ প্রধানকে উকিল নোটিস পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী নিকোলাস চাকমা।

আগুন দেওয়ার ঘটনায় কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, আদিবাসীদের রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসনের ব্যর্থতা আছে কিনা এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পুর্নবাসনে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কিনা- তা জানতে চাওয়া হয় ওই নোটিসে।

স্বরাষ্ট্র সচিব, সমাজকল্যাণ সচিব, নারী ও শিশু কল্যাণ সচিব, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শক, চট্টগ্রামের রেঞ্জের ডিআইজি, রাঙ্গামাটির জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার, লংদু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ওসিকে ওই নোটিস পাঠানো হয়।

নিকোলাস চাকমা সোমবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ওই নোটিসের জবাব না আসায় স্থানীয় বাসিন্দা, ক্ষতিগ্রস্ত, ছাত্র, সামাজিক সংগঠনের নেতা, আইনজীবীসহ মোট নয়জন বৃহস্পতিবার হাই কোর্টে এই রিট আবেদন করেন। ওই আবেদনের ওপর শুনানি শেষে সোমবার আদালত রুল জারি করল।