সোমবার সকাল ৮টা থেকে কমলাপুর স্টেশনের তেইশটি কাউন্টার থেকে একসঙ্গে টিকেট বিক্রি শুরু হয়। এদিন দেওয়া হচ্ছে ৩০ অগাস্ট ঈদযাত্রার অগ্রিম টিকেট।
এবার কোরবানির ঈদে তিন দিনের সরকারি ছুটি শুরু হচ্ছে ১ সেপ্টেম্বর থেকে। আগের দিন বৃহস্পতিবার হওয়ায় সেদিনের টিকেটের চাহিদাই সবচেয়ে বেশি থাকবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রোববার ৩১টি আন্তঃনগর ট্রেনের বিভিন্ন গন্তব্যের ২২ হাজার ৪৯৬টি টিকেট বিক্রি করা হচ্ছে। ৩৫ ভাগ কোটার জন্য রেখে বাকি টিকেট কাউন্টার থেকে পাচ্ছেন যাত্রীরা। এছাড়া ঈদের বিশেষ ট্রেনের ২ হাজার ৬০৬টি টিকেটও কাউন্টার থেকে বিক্রি করা হচ্ছে।
৩০ অগাস্টের টিকেটের জন্য রোববার ভোর রাতে কমলাপুর স্টেশনের কাউন্টারের সামনে আসেন রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের পুলিশ সদস্য আইয়ুব আলী। অপেক্ষমানদের লাইনে তিনি ছিলেন সবার আগে। ২৮ ঘণ্টা অপেক্ষার পর পদ্মা এক্সপ্রেসের টিকেট পেয়েছেন তিনি।
আইয়ুবের ঠিক পেছনেই ছিলেন সাগর আলী নামে আরেকজন। তিনি জানালেন, রাস্তাঘাটের অবস্থা খুব খারাপ, এ কারণে ট্রেনে যেতে চায় সবাই। অপেক্ষা করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা।
“২৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করছি। খাবার পানির খুব কষ্ট হয়েছে, খাবারও খেতে পারিনি। তারপরও টিকেট পেলে এসব কষ্ট আর থাকে না।”
জামালপুরের অগ্নিবীণা ট্রেনের টিকেটের জন্য রোববার দুপুরে এসেছিলেন সোলাইমান হোসেন নামে একজন। দীর্ঘ অপেক্ষার পর টিকেট পেয়েছেন তিনি। অনলাইনে আরও বেশি টিকেট দেওয়া হলে মানুষের কষ্ট কিছুটা কমবে বলে তার ধারণা।
“একটা টিকেটের জন্য এত কষ্ট করতে হয়। ঠিকমতো প্রাকৃতিক কাজও সারতে পারি নাই। লাইন ছেড়ে গেলে আবার যদি সিরিয়াল না পাই… এখন তো প্রযুক্তি উন্নত হয়েছে। টিকেটগুলো অনলাইনে দিলে তো আমাদের এখানে আসতে হয় না। লোকজনের দুর্ভোগ কমে।”
“আমাদের এলাকার সড়ক যোগাযোগ খুব খারাপ, রাস্তা ভাঙ্গা। এ কারণে বাচ্চা নিয়ে এখানে আসতে হয়েছে। এখন টিকেট পেয়েছি, খুবই খুশি লাগছে।”
শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কামরার টিকেট নিয়ে সোমবারও অভিযোগ করেছেন টিকেট প্রত্যাশীরা।
খুলনার সুন্দরবন এক্সপ্রেসের এসি টিকেটের জন্য সকালে কমলাপুরে আসা রাজউকের উপপরিচালক হামিদুল ইসলাম জানান, আগের দিনও লোক পাঠিয়েছিলেন, এসি টিকেট পাননি।
“আমার সিরিয়াল ১১ নম্বরে। অথচ এসি টিকেট নাকি শেষ। তাদের সঙ্গে তো ঝগড়া করে পারব না। তাহলে এত অপেক্ষা করে লাভটা কী হল!”