একুশ অগাস্টের শোককে শক্তিতে পরিণত করে সন্ত্রাসমুক্ত দেশ গড়ার আহ্বান

১৩ বছর আগে একুশে অগাস্টে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় ২২ জন হারানোর শোককে শক্তিকে পরিণত করে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মুক্ত দেশ গড়তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 August 2017, 06:41 PM
Updated : 20 August 2017, 06:41 PM

২০০৪ সালের ২১ অগাস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় ২৪ জন নিহত এবং কয়েকশ নেতাকর্মী আহত হন।

দিবসটি উপলক্ষে শনিবার বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

২১ অগাস্টের হামলাকে ‘বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা ও বাঙালি জাতির ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায়’ উল্লেখ করে বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, “শোকাবহ ওই মর্মান্তিক ঘটনায় সকল শহীদের স্মৃতির প্রতি আমি গভীর শ্রদ্ধা জানাই।”

প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, “বাংলাদেশের ইতিহাসে ২১ শে অগাস্ট একটি কলঙ্কময় দিন। ২০০৪ সালের এ দিনে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বিএনপি জামাত জোট সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় ঢাকায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বিরোধী সমাবেশে বর্বরতম গ্রেনেড হামলা চালানো হয়।

“২১ শে অগাস্টের শোককে শক্তিতে পরিণত করে সন্ত্রাস ও জঙ্গিমুক্ত একটি শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়তে দেশের সকল নাগরিক ঐক্যবদ্ধ হবেন।২১শে অগাস্টের হামলাকারী, পরিকল্পনাকারী, নির্দেশদাতা এবং মদদদাতাদের সুষ্ঠু বিচারের মাধ্যমে দেশ থেকে হত্যা, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের চির অবসান হবে। আইনের শাসন সুপ্রতিষ্ঠিত হবে।এই দিনে এটাই আমার প্রত্যাশা।”

ওই হামলায় স্থায়ীভাবে শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।

এই মামলার অধিকতর তদন্তের পর আসামির তালিকায় তখনকার স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের সঙ্গে বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানও আসামির তালিকায় যুক্ত হয়েছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, “এ নারকীয় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে বিচার করা ছিল সরকারের নৈতিক দায়িত্ব। কিন্তু তৎকালীন বিএনপি-জামাত জোট সরকার তা না করে হত্যাকারীদের রক্ষার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে।হামলাকারীদের পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়। অনেক আলামত ধ্বংস করে।

“কিন্তু সত্য কখনও চাপা থাকে না। পরবর্তীকালে তদন্তে বেরিয়ে আসে বিএনপি-জামাত জোটের অনেক কুশীলব এই হামলার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিল।”

২১শে অগাস্টের সব শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা এবং আহতদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান প্রধানমন্ত্রী।

রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, “আমাদের মহান স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধসহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সাথে মিশে আছে লাখো শহীদের আত্মত্যাগ। এ দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রার পথ কখনও মসৃণ ছিল না। নানা চড়াই-উৎরাইয়ের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র এগিয়ে চলেছে। অগণতান্ত্রিক অশুভ শক্তি বারবার গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করেছে।”

১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা এবং ৩ নভেম্বর কারাগারে চার নেতাকে হত্যার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এরপরও ঘাতকচক্র থেমে থাকেনি। তারা বঙ্গবন্ধু তনয়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ২০০৪ সালের ২১ অগাস্ট পরিকল্পিতভাবে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জনসভা চলাকালীন ইতিহাসের বর্বরতম গ্রেনেড হামলা চালায়।

“ঘাতকচক্রের লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বহীন করে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে রুখে দেওয়া এবং দেশে স্বৈরশাসন ও জঙ্গিবাদ প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ তা হতে দেয়নি।”

ওই হামলায় শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন রাষ্ট্রপতি।

গ্রেনেড হামলা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সোমবার বিকালে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেখানে উপস্থিত থাকবেন।