এ বিষয়ে গত জুনে হাই কোর্টের দেওয়া একটি রুলের শুনানি শেষে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের বেঞ্চ রোববার তা খারিজ করে রায় দেয়।
এর ফলে ১৩ আসামির বিরুদ্ধে এ মামলার পুনঃতদন্ত চলতে আইনি বাধা থাকল না বলে বাদীপক্ষের আইনজীবী জানিয়েছেন।
এ মামলার আসামিরা হলেন- জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক দুই উপাচার্য কাজী শহিদুল্লাহ ও মোফাখখারুল ইসলাম, সাবেক উপ-উপাচার্য তোফায়েল আহম্মদ চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ কাজী ফারুক আহমদ, কর্মকর্তা ফাহিমা সুলতানা, দিলরুবা বেগম, এইচ এম তায়েহীদ জামাল, মো. সিদ্দিকুর রহমান, মোল্লা মাহফুজ আল হোসাইন, শেখ মুহাম্মদ মোফাজুল হোসাইন, রিফাত আরা রত্না, মো. নূর রহমান ও মো. শহিদুর রহমান।
মামলার বাদী প্রভাষক মো. হাফিজুর রহমানের পক্ষে হাই কোর্টে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রেহান হোসেন। তাকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট আসমা আক্তার ও মোহাম্মদ ইমাম হোসেন।
দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব। এছাড়াও আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এ এস এম আব্দুল মোবিন।
২০০১ সালে ‘ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে’ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ে প্রায় ১২ শ লোক নিয়োগ হয়। পরে হাই কোর্ট ওই গণনিয়োগ বাতিল করে এবং ভুয়া নিয়োগে জড়িতদের সাজার রায় আসে আদালতে।
কিন্তু সাজাপ্রাপ্তদের চাকরি থেকে বরখাস্ত না করে নিজেদের মধ্যে যোগসাজশে তাদের নিয়মিত বেতন-ভাতা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিল থেকে প্রায় ছয় কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে ২০১২ সালের ৭ জুলাই জয়দেবপুর থানায় এই মামলা করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক মো. হাফিজুর রহমান। সেখানে সাবেক দুই উপাচার্যসহ ১৩ জনকে আসামি করা হয়।
তফসিলভুক্ত অপরাধ হওয়ায় এ মামলায় ২০১৩ সালের ১৪ নভেম্বর দুদক প্রতিবেদন দেয়। ওই প্রতিবেদনে ১৩ আসামির সবাইকে অভিযোগ থেকে বাদ দেওয়া হয়।
বাদী হাফিজুর রহমান ওই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে গাজীপুর জেলা জজ আদালতে নারাজি আবেদন করলে গত বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি আদালত দুদককে পুনঃতদন্তের নির্দেশ দেয়। সে অনুযায়ী দুদক তদন্ত শুরুও করে।
সেই তদন্ত স্থগিতের জন্য হাই কোর্টে রিভিশন আবেদন করেন কাজী শহিদুল্লাহ, মোফাখখারুল ইসলাম, তোফায়েল আহম্মদ চৌধুরী ও কাজী ফারুক আহমদ।
হাই কোর্ট সে আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে চলতি বছরের ৮ জুন তদন্ত স্থগিতের অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেওয়ার পাশাপাশি রুল জারি করে। এরপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে রোববার সেই রুল খারিজ করে রায় দিল হাই কোর্ট।
আইনজীবী রেহান হোসেন বলেন, “উচ্চ আদালতের এ আদেশের ফলে আসামিদের বিরুদ্ধে পুনঃতদন্ত চালিয়ে যেতে আর কোনো আইনি বাধা থাকল না।”