ঈদযাত্রা: বন্যার প্রভাবে কমছে উত্তরের বাস ট্রিপ

আসছে কোরবানির ঈদ সামনে রেখে রাজধানী থেকে উত্তররাঞ্চলের ১৭ জেলায় যাত্রীবাহী বাসের ট্রিপ অর্ধেকের বেশি কমিয়ে এনেছে পরিবহন মালিকরা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 August 2017, 11:21 AM
Updated : 18 August 2017, 07:57 PM

উত্তরাঞ্চলে চলমান বন্যা, অতিবৃষ্টিতে মহাসড়কে বড় গর্তের সৃষ্টি ও সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

ঈদ উপলক্ষে ঢাকা থেকে সারা দেশে চলাচল করা সব ধরনের বাসের আগাম টিকেট বিক্রি শুরু হয়েছে শুক্রবার। সকালে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই উত্তরবঙ্গের ১৭টি জেলার বিভিন্ন রুটের ৩০ ও ৩১ অগাস্ট এবং ১ সেপ্টেম্বরের বাসের আগাম টিকেট শেষ হয়ে যায় বলে কাউন্টার ব্যবস্থাপকরা জানিয়েছেন।

তাদের দাবি, প্রবল বন্যা ও মহাসড়কের নাজুক অবস্থার কারণে এবার ঈদে যাত্রার পরিমাণ এক তৃতীয়াংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। এরপরও যেসব টিকেট বিক্রি হচ্ছে, সেইসব যাত্রীদের নির্বিঘ্নে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া নিয়ে চিন্তিত তারা।

রাজধানী থেকে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় যেসব পরিবহনের বাস চলাচল করে, এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি হানিফ পরিবহনের বাস। এবার ২৪ অগাস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঈদযাত্রার আগাম টিকেট শুক্রবার থেকে বিক্রি শুরু করেছে তারা।

হানিফের মহাব্যবস্থাপক মোশাররফ হোসাইন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বন্যা, অতিবৃষ্টিতে সড়কে খানাখন্দের সৃষ্টি হওয়া এবং এই রুটের দুইটি সেতুর নাজুক অবস্থার কারণে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোতে আমাদের গাড়ির ট্রিপের পরিমাণ তিনভাগের একভাগে নিয়ে এসেছি।”

তিনি জানান, উত্তরবঙ্গে গত ঈদে তাদের তিনশ থেকে সাড়ে তিনশ বাস ট্রিপ চালানো হয়েছে। এবার একশর মধ্যে সীমিত রাখতে হচ্ছে।

মোশাররফের মতো একই কথা জানিয়েছেন শ্যামলী পরিবহনের গাবতলী ভিআইপি কাউন্টারের ব্যবস্থাপক প্রভাত রায়।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটককে তিনি বলেন, “উত্তরবঙ্গের ছয়টি রুটে আমাদের কোম্পানির বাস চলাচল করে। গত ঈদে যেখানে দেড়শর মতো ট্রিপ দেওয়া সম্ভব হয়েছিল, এবার সেটি একশর নিচে নিয়ে আসা হয়েছে।”

বন্যার পাশাপাশি উত্তরাঞ্চলের পথে মহাসড়কের বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কথা তুলে ধরেন হানিফ পরিবহনের মোশাররফ হোসাইন।

তিনি বলেন, “একটি গাড়ি ঢাকা থেকে পঞ্চগড় বা দিনাজপুর অথবা ঠাকুরগাঁও আপ-ডাউন করতে বর্তমানে ৩৬ থেকে ৪০ ঘণ্টা লাগছে, যেখানে আগে ১৬ ঘণ্টায় যাওয়া যেত।

“বন্যা ছাড়াও মহাস্থান ব্রিজ ও নলকা ব্রিজ দুটি পার হতে প্রায় আট ঘণ্টা সময় লাগে। ব্রিজগুলোর সংস্কার কাজের জন্য ওয়ানওয়ে করে দেওয়া হয়েছে। সবকিছু মিলে গড়ে তিনটি গাড়ির মধ্যে একটি গাড়ি রাখা হয়েছে।”

ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গের গাড়িগুলোকে সিরাজগঞ্জের সয়দাবাদ-হাটিকুমরুল মহাসড়কের ‘নলকা সেতু’ ও বগুড়ার শিবগঞ্জের সাতুরিয়ার করতোয়া নদীর উপর ‘মহাস্থান সেতু’ পার হয়ে চলাচল করতে হয়।

মোশাররফ জানান, সিরাজগঞ্জ থেকে চান্দাইকোনা সড়কটি মাত্র ১৫ মিনিটের পথ, কিন্তু রাস্তার অবস্থা নাজুক হওয়ার কারণে এই পথে ৩/৪ ঘণ্টার যানজট সৃষ্টি হয়। এসব বিষয় মাথায় রেখে ট্রিপের সংখ্যা কমাতে হয়েছে।

ঈদে যেসব অগ্রিম টিকেট বিক্রি করা হচ্ছে, সেইসব টিকেটের যাত্রীদের নির্বিঘ্নে বাড়ি পৌঁছে দিতেই সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা থাকবে বলে তিনি জানান।

তবে সড়কের খানাখন্দ সংস্কার করা ও ঈদের সময় রাস্তা যানজটমুক্ত থাকলে ট্রিপ সংখ্যা বাড়ানো হতে পারে বলছেন হানিফ পরিবহনের এই কর্মকর্তা।