শুক্রবার দুপুরে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে এই সংবাদ সম্মেলনে আসেন নবম শ্রেণি পড়ুয়া পারভেজ মোশাররফ।
গত ৩০ জুলাই পশ্চিম রামপুরা থানার মক্কি মসজিদ গলির এক বাসা থেকে শাহানা আক্তার নামে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
শাহানার স্বামী মনির হোসেন ও শাশুড়ি আক্তার বানু তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা করেছে বলে তার পরিবারের অভিযোগ। ঘটনার দিন রাতেই এ দুজনকে আসামি করে রামপুরা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন শাহানার ভাই সাইফুদ্দিন টিটু।
সংবাদ সম্মেলনে শাহানা-মনির দম্পতির সন্তান পারভেজ ছাড়াও শাহানার বাবা আব্দুর রব ও ভাই গিয়াস উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
পারভেজ বলেন, “ছোট বেলা থেকে দেখে আসছি, বাবা মাকে যখন তখন মারধর করত। আমাকে ও আমার ছোট বোন সুমাইয়াকে ঘর থেকে বের করে দিয়ে নেশা করত।”
ঘটনার সময় নানার বাড়ি ফেনীতে ছিলেন জানিয়ে নবম শ্রেণির ওই ছাত্র বলেন, “দাদিকে সঙ্গে নিয়ে মাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে আমার বাবা। আমি এই হত্যার বিচার চাই এবং খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাই।”
১৭ বছর আগে পারিবারিকভাবে মনির হোসেনের সঙ্গে শাহানার বিয়ে দিয়েছিলেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান তার বাবা আব্দুর রব।
তিনি বলেন, “বিয়ের সময় এক লাখ টাকা ও ঘর সাজানোর আসবাবপত্র দেওয়া হয়। বিয়ের পর মনির ব্যবসার কথা বলে অনেক টাকা এনেছে আমার কাছ থেকে। কিন্তু তারপরও মেয়ের উপর নির্যাতন বন্ধ করত না।”
নির্যাতন সইতে না পেরে গত ২০ জানুয়ারি রামপুরা থানায় শাহানা স্বামীর বিরুদ্ধে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন বলে জানান আব্দুর রব।
“জিডির পর থেকেই আমার বাড়ি ফেনীর সোনাগাজীর সেনেরখিল গ্রামে চলে যায় শাহানা। জিডির পর পুলিশ একবার মনিরকে ধরতে তাদের বাড়িতে যায়, কিন্তু মনির পালিয়ে যায়।”
এরপর রোজার সময় শাহানার শাশুড়ি তাকে ফেরত আনতে ফেনী যায় জানিয়ে রব বলেন, “ফেনীতে গিয়ে শাহানাকে ও আমাকে বুঝায় যে, মনির আর নির্যাতন করবে না। মনিরও এ ধরনের আশ্বাস দেওয়ার পর রামপুরায় স্বামীর বাড়িতে এসেছিল শাহানা।”
কিন্তু ‘ঢাকায় এনে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হল’ অভিযোগ করে দীর্ঘশ্বাস ফেলেন আব্দুর রব।
এসময় পারভেজ কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “অনেক নির্যাতন করত বাবা। ছোটবেলা থেকে দেখেছি। কাউকে কিছু বলতাম না। এমন বাবা চাই না আমি। এমন বাবার ফাঁসি হওয়া উচিত।”
হত্যা মামলার আসামি মনির ও তার মা পলাতক রয়েছে জানিয়ে রামপুরা থানার ওসি প্রলয় কুমার সাহা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তাদের ধরতে পুলিশ প্রায় প্রতিদিনই অভিযানে যাচ্ছে।”