বুধবার ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, “আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত যে তথ্য রয়েছে, তার সাথে একাধিক লোক ছিল। তাদের ধরে আইনের আওতায় নেওয়া হবে।”
জাতীয় শোক দিবসের আনুষ্ঠানিকতা শুরুর আগে আগে মঙ্গলবার ভোরে ধানমণ্ডি ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর থেকে মাত্র তিনশ মিটার দূরে হোটেলে ওলিও ইন্টারন্যাশনাল ঘিরে ফেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
পরে সেখানে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট ও সোয়াটের অভিযানের মধ্যে সাইফুল ইসলাম নামে খুলনার এক তরুণ সুইসাইড ভেস্টে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আত্মঘাতী হয় বলে জানায় পুলিশ।
খুলনার বিএল কলেজের ছাত্র সাইফুল এক সময় শিবির করতেন বলে পুলিশের ভাষ্য। তার বাবা আবুল খায়ের মোল্লা খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার সাহস ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর বায়তুল মাল (কোষাধ্যক্ষ) সম্পাদক।
অপারেশন ‘অগাস্ট বাইট’ নামের ওই অভিযানের পর পুলিশ মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক সাংবাদিকদের বলেন, “ধানমণ্ডি বত্রিশ নম্বরকে কেন্দ্র করে অগাস্টের মিছিলে তারা আত্মঘাতী বোমা হামলা করবে এবং শত শত লোক মেরে ফেলবে- এ ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছিল।”
আত্মঘাতী হওয়ার আগে সাইফুল যে বোমা বিস্ফোরণ ঘটান, তাতে হোটেলে ওলিওর চতুর্থ তলার রাস্তা সংলগ্ন দেয়াল ও গ্রিল ভেঙে রাস্তার ওপর পড়ে।
আইজিপি বলেন, বোমাটি এতোটাই শক্তিশালী ছিল যে কোনো জনসভা বা সমাবেশে তা ফাটানো হলে বড় ধরনের ক্ষতি হত।
বুধবার বিকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাইফুলের লাশের ময়নাতদন্তের পর ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সোহেল মাহমুদ বলেন, “তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে বোমার স্প্লিন্টার পাওয়া গেছে। বৈদ্যুতিক তার ও প্লাস্টিকের মত বস্তুও শরীরের সঙ্গে ছিল। মনে হয়েছে, সুইসাইড ভেস্ট বাঁধার জন্য সেসব ব্যবহৃত হয়েছিল।”
একটি স্প্লিন্টার সাইফুলের চোখ দিয়ে প্রবেশ করে মাথার পেছন দিয়ে বেরিয়ে গেছে জানিয়ে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক বলেন, “এ কারণে বাইরে থেকে দেখে মনে হয় যেন মাথা থেঁতলে গেছে।”
পুলিশের সংবাদ সম্মেলনের পর এক প্রশ্নের জবাবে আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ওই হামলা পরিকল্পনায় যারা জড়িত, তাদের মধ্যে কেবল সাইফুলই হোটেল ওলিওতে ছিলেন।
“সাইফুলের সহযোগীরা ঢাকা শহরে অন্য কোথাও থাকতে পারে।এ বিষয়ে গোয়েন্দারা ও কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট কাজ করছে।”
কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের একজন কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, জঙ্গিদের অবস্থানের খবর পেয়ে সোমবার সন্ধ্যায় একবার হোটেল ওলিওতে গিয়েছিলেন তারা। কিন্তু তখন সাইফুলকে পাওয়া যায়নি। পরে ভোর রাতে সাইফুলের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে তারা অভিযান চালান।
ওই ঘটনায় পুলিশ একটি মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে কলাবাগার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সমীর চন্দ্র সূত্রধর জানান।