বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

বছর ঘুরে আবার এসেছে বাংলাদেশের শোকের দিন ১৫ অগাস্ট; গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে জাতি পালন করছে জাতির জনককে হারানোর দিনটি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 August 2017, 02:58 AM
Updated : 15 August 2017, 03:09 AM

১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট সেনাবাহিনীর একদল কর্মকর্তা ও সৈনিকের হাতে সপরিবারে জীবন দিতে হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতা ও তৎকালীন রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে। তার পরিবারের ছয় বছরের শিশু থেকে শুরু করে অন্তঃসত্ত্বা নারীও সেদিন ঘাতকের গুলি থেকে রেহাই পায়নি।

জাতীয় এই শোকের দিনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে, পালিত হচ্ছে নানা কর্মসূচি।

রাষ্ট্রপ্রধান মো. আবদুল হামিদ ও সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা মঙ্গলবার সকালে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর প্রাঙ্গণে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

প্রধানমন্ত্রী ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে পৌঁছান সকালে সাড়ে ৬টার কিছুক্ষণ আগে। ঠিক সাড়ে ৬টায় রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সেখানে উপস্থিত হন।

এরপর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী এক সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। ফুল দিয়ে সেখানে কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন তারা।

তিন বাহিনীর একটি চৌকস দল এ সময় সশস্ত্র সালাম জানায়; বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর।

এরপর কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে ১৫ অগাস্ট নিহতদের আত্মার শান্তি কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

রাষ্ট্রপতি বঙ্গভবনের উদ্দেশ্যে রওনার হওয়ার পর স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দেন।

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী হিসাবে শেখ হাসিনা দলের সভাপতিমণ্ডলীর, সম্পাদক, কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য এবং উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের নিয়ে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে ফুল দেন।

আওয়ামী লীগের পর ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা রাশেদ খান মেনন, জাতীয় পার্টির (মঞ্জু) আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, সাম্যবাদী দলের দিলীপ বড়ুয়াসহ ১৪ দলের নেতৃবৃন্দ ফুল দেন বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে।

১৪ দলের পর বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বি মিয়া এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাইদ খোকন।

বঙ্গবন্ধুকন্য শেখ হাসিনা বাবার প্রতিকৃতিতে ফুল দেওয়ার পর পরিবারের সদস্যদের স্মৃতি বিজরিত বাড়িটিতে কিছুক্ষণ সময় কাটান।

পরে ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে যান বনানী কবরস্থানে। বঙ্গবন্ধু ছাড়া ১৫ অগাস্ট নিহত তার পরিবারের সদস্য ও অন্য সব স্বজনদের কবর রয়েছে সেখানে।

বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে সেখানে পরিবার ও স্বজনদের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ এসময় তাদের সঙ্গে ছিলেন।

শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম প্রতিটি কবরে গোলাপের পাপড়ি ছড়িয়ে দেন। তার আগে মোনাজাতে অংশ নেন তারা।

ঢাকার কর্মসূচি শেষে সকাল ১০টায় গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ার উদ্দেশ্যে রওনা হবেন শেখ হাসিনা। সেখানে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফুল দেবেন প্রধানমন্ত্রী।

দুপুরে বঙ্গভবনের আয়োজিত দোয়া মাহফিলে রাষ্ট্রপতি উপস্থিত থাকবেন।

প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার উপস্থিতিতে সকালে সুপ্রিম কোর্টে হবে আলোচনা সভা।

মঙ্গলবার সরকারি ছুটির দিনটি রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচি পালন করছে।