যুদ্ধাপরাধের দুই ট্রাইব্যুনালকেই সচল চায় তদন্ত সংস্থা

যুদ্ধাপরাধের মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে সচল করার উপর জোর দিয়েছেন প্রসিকিউশনের তদন্ত সংস্থার জ্যেষ্ঠ সমন্বয়ক সানাউল হক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 August 2017, 11:55 AM
Updated : 8 August 2017, 12:01 PM

রাজধানীর ধানমণ্ডির কার‌্যালয়ে মঙ্গলবার যুদ্ধাপরাধের মামলায় খুলনার আট জনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, “বিচার দ্রুত হওয়াটাই বিচারপ্রার্থীদের দাবি।  এ দাবির কারণেই দুটি ট্রাইব্যুনাল করা হয়েছিল। এখন মামলার যে জট বৃদ্ধি হচ্ছে, সে বিষয়ে আমাদের মতামত হলো, আবার দুটো ট্রাইব্যুনাল সক্রিয় করা হোক।

“মামলার বিচারকাজ দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করা হোক- এটাই সবার চাওয়া।”

২০১০ সালে একটি ট্রাইব্যুনাল দিয়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু হলেও কাজ গতিশীল করতে দুটি করা হয়েছিল। পরে মামলার সংখ্যা বিবেচনায় নিয়ে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে ট্রাইবুনাল-১ এর সদস্য বিচারপতি মোহাম্মদ আনোয়ার উল হককে চেয়ারম্যান করে একটিতে নামিয়ে আনা হয়।

ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে বিচারপতি আনোয়ারুল হক গত ১৩ জুলাই মারা যাওয়ার পর ট্রাইব্যুনালে নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ না হওয়ায় যুদ্ধাপরাধের মামলার বিচারকাজ বন্ধ আছে।

বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকরা ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান নিয়োগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে দ্রুত সময়ের মধ্যে নিয়োগ দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছেন আইনমন্ত্রী।

সানাউল বলেন, ট্রাইব্যুনালে নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ না হওয়া ট্রাইব্যুনালের কাজ ব্যহত হচ্ছে। বিভিন্ন স্তরে মামলা আটকে আছে।

“যে কথাটি আমি আগে অনেকবার বলেছি, সাক্ষীদের বয়স হয়েছে, তাদের আনা-নেওয়াও খুব কঠিন। ঠিক যে মুহূর্তে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান ইন্তেকাল করেন, সে সময় ১০ জনেরও বেশি সাক্ষীকে ঢাকায় আনা হয়েছিল, তাদের আশ্বাস দিয়ে রেখেছিলাম যে, ট্রাইব্যুনাল চালু হলেই সাক্ষ্য দেবেন।  কিন্তু তাদের ফেরত পাঠানো হয়েছে। ”

ট্রাব্যুনালে এখন একটি মামলার রায় অপেক্ষমাণ রয়েছে, বিচারাধীন আছে ১৮টি মামলা। এছাড়া জামায়াতে ইসলামীর মামলাসহ মোট ছয়টি মামলা প্রসিকিউশনে জমা পড়ে আছে বলে জানান তদন্ত সংস্থার এই কর্মকর্তা।

সানাউল বলেন, “যারা বিচারপ্রর্থী তারা অনেক সময় হতাশা প্রকাশ করেছেন আমাদের কাছে।  কারণ, তদন্তকালে সাক্ষী এবং ভিকটিমদের সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগাযোগটা হয় আমাদের। যা দুঃখ-বেদনা. ক্ষোভ বা আশা-হতাশা তারা আমাদের সঙ্গেই শেয়ার করেন।

“ফলে তাদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে বলবো, যদি দুটি ট্রাইব্যুনাল করে দ্রুত গতিতে মামলাগুলো সম্পন্ন করা হয়, তাহেল যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে আমরা উঠে এসেছি সেটা অব্যাহত থাকবে। ”

অবৈধ আটক, নির্যাতন, অপহরণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ ও হত্যার চারটি অভিযোগ এনে খুলনার বটিয়াঘাটা ও দাকোপের ৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ চূড়ান্ত করেছে তদন্ত সংস্থা।

সাত খণ্ডের এক হাজার ২৭ পাতার তদন্ত প্রতিবেদন মঙ্গলবারই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনে জমা দেওয়ার কথা জানান সানাউল হক।

আন্তর্জাতিক অপরাধ সংস্থার ৫৩তম এই মামলার তদন্ত শুরু হয় ২০১৫ সালের ১৫ নভেম্বর; তদন্ত কর্মকর্তা মো. হেলাল উদ্দিন। এই মামলার মামলায় মোট ৪১ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।