কেরানীগঞ্জে পরাগ অপহরণে অভিযুক্ত আমির ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত

ঢাকার কেরানীগঞ্জে শিশু পরাগ মণ্ডল অপহরণ মামলায় অভিযুক্ত পলাতক আসামি মোক্তার হোসেন আমির পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকও কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 August 2017, 04:26 AM
Updated : 1 August 2017, 11:24 AM

মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলন করে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার শাহ্ মিজান শাফিউর রহমান জানান, সোমবার রাত পৌনে ২টার দিকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের মীরেরবাগ বেড়িবাঁধ এলাকায় গোলাগুলির এ ঘটনা ঘটে।

আমির ওরফে ল্যাংড়া আমির (৪০) আলোচিত পরাগ অপহরণ ছাড়াও খুন ও চাঁদাবাজীর ১৪ মামলার আসামি।

পরাগ অপহরণ মামলায় গ্রেপ্তারের পর গত বছরের ১১ জুলাই ঢাকা জজ কোর্টের হাজতখানা থেকে আমির পালিয়ে যান বলে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় এ সংবাদ সম্মেলনে জানান পুলিশ সুপার।

তিনি বলেন, গোপন খবরে সোমবার বাগেরহাটের শরণখোলা থেকে আমিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তিনি জানান, ‘তার ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি মীরেরবাগ ওরিয়েন্টাল টেক্সটাইল মিলের পাশের একটি স্থানে মজুদ আছে’।

“এ তথ্যের ভিত্তিতে আমিরকে নিয়ে পুলিশ ওই এলাকায় যায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তার সহযোগীরা তাকে ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য গুলি করতে থাকে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়।”

এ সময় আমির পুলিশ হেফাজত থেকে দৌড়ে সহযোগীদের সাথে পালানোর চেষ্টা করে। প্রায় ২০ রাউন্ড গোলাগুলির পর একপর্যায়ে অন্যরা পালিয়ে গেলে আমিরকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায় বলে জানান এসপি।

গুলিবিদ্ধ অবস্থায় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনাস্থল থেকে দুই রাউন্ড গুলি ভর্তি একটি পিস্তল ও প্রায় ২৪ ইঞ্চি লম্বা দুটি ছোরা উদ্ধার করা হয় বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা শাফিউর রহমান।

২০১২ সালের ১১ নভেম্বর সকালে কেরানীগঞ্জের সুভাঢ্যা পশ্চিমপাড়ার বাসার সামনে থেকে অপহৃত হয় সদরঘাটের হিড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে কেজি ওয়ানের ছাত্র পরাগ মণ্ডল (৬)। গাড়িতে ওঠার সময় মা লিপি মণ্ডল, বোন পিনাকী মণ্ডল ও গাড়িচালক নজরুলকে গুলি করে পরাগকে তুলে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা।

এর ৪৮ ঘণ্টা পর কেরানীগঞ্জের আঁটিবাজার এলাকা থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয় পরাগকে। এ ঘটনায় পরাগের বাবা বাদী হয়ে এ ঘটনায় একটি মামলা করেন। পরে আমিরসহ নয় আসামিকে অস্ত্র ও গুলিসহ গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

তদন্তের পর পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্রে বলা হয়, মুক্তিপণে টাকা আদায়ের লক্ষ্যে আসামিরা পরাগকে মায়ের কোল থেকে অপহরণ  করে। এর মূল পরিকল্পনাকারী হলেন মোক্তার হোসেন আমির।

২০১৩ সালের ২৩ অগাস্ট ঢাকার ১ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল পলাতক আমিরসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এ মামলার বিচার শুরু করে।

তাছাড়া চাঁদাবাজীর অভিযোগে কেরানীগঞ্জের বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী আমিরের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।

গত ২২ মে সুভাঢ্যার ব্যবসায়ী নূরুল ইসলামকে চাঁদা দাবিতে গুলি এবং সর্বশেষ গত ৭ জুলাই চাঁদার দাবিতে ব্যবসায়ী শাহ আলমের বুকে ও পেটে গুলির অভিযোগে আমিরের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে।