গুলশান হামলার ‘জঙ্গি র‌্যাশ’ নাটোরে গ্রেপ্তার

গুলশান হামলার ‘অন্যতম পরিকল্পনাকারী’ হিসেবে পুলিশ যাদের খুঁজছিল, তাদের মধ্যে আসলাম হোসাইন রাশেদ ওরফে রাশেদুল ইসলাম ওরফে র‌্যাশকে নাটোরের সিংড়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 July 2017, 02:57 AM
Updated : 28 July 2017, 12:05 PM

পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, শুক্রবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে সিংড়া বাজার বাস স্ট্যান্ড এলাকা থেকে ‘নব্য জেএমবির ওই জঙ্গিকে’ গ্রেপ্তার করা হয়।    

কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পাশাপাশি পুলিশ সদরদপ্তরের ‘ল-ফুল ইন্টারসেপশন সেন্টার’, বগুড়া ও নাটোর জেলা পুলিশের সদস্যরাও এই অভিযানে অংশ নেন বলে জানান মনিরুল।

ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার মাসুদুর রহমান জানান, রাশেদ ওরফে র‌্যাশকে নাটোর থেকে বিকালে ঢাকায় গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। হলি আর্টিজানের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে শনিবার তাকে আদালতে হাজির করা হবে।

এ মাসের শুরুতে গুলশান হামলার প্রথম বার্ষিকীতে আলোচিত এই মামলাটির অভিযোগপত্র না দিতে পারার জন্য পলাতক পাঁচ জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করতে না পারাকে কারণ দেখিয়েছিলেন মনিরুল।

তখন পর্যন্ত সন্দেহভাজনদের খাতায় নাম ছিল- সোহেল মাহফুজ, রাশেদ ওরফে র‌্যাশ, বাশারুজ্জামান ওরফে চকলেট, মিজানুর রহমান ওরফে ছোট মিজান ও হাদীসুর রহমানের।

এর মধ্যে সোহেল, র‌্যাশ ও বাশারুজ্জামানকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দেখিয়ে মনিরুল বলেছিলেন, “তাদের পেলে হয়ত আমরা একটি পূর্ণাঙ্গ চিত্র পাব।”

এরপর গত ৮ জুলাই সোহেল মাহফুজকে গ্রেপ্তারর পর পুলিশ জানতে পারে,  গত ২৬ ও ২৭ এপ্রিল শিবগঞ্জে জঙ্গি আস্তানায় অভিযানে নিহত চারজনের মধ্যে বাশারুজ্জামান ও ছোট মিজানও রয়েছেন।

বাকি দুজনের মধ্যে রাশেদ ওরফে র‌্যাশ গ্রেপ্তার হলেও হাদীসুর রহমান সাগর এখনও পুলিশের ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছেন।

রাশেদের বাড়ি নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলায়। হলি আর্টিজেনে হামলায় তার কী ভূমিকা ছিল জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল গত ২৪ জুলাই বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “রাশেদ বা র‌্যাশ নব্য জেএমবির প্রধান তামিমের খুব কাছের লোক, আর সাগর যশোর থেকে অস্ত্র সরবরাহ করেছিল।”

বিদেশিদের কাছে আকর্ষণীয় গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে গত বছর ১ জুলাই রাতে হামলা করে পাঁচ জঙ্গি। তাদের রুখতে গিয়ে বোমা হামলায় নিহত হন দুই পুলিশ কর্মকর্তা।

উৎকণ্ঠার রাত পেরিয়ে সকালে সেখানে কমান্ডো অভিযানে হামলাকারী পাঁচ তরুণ ও ক্যাফের এক পাচক নিহত হন। ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয় ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনের লাশ।  

ওই হামলায় জড়িত থাকায় অভিযোগে এর আগে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। তারা হলেন মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী, রাকিবুল হাসান রিগান এবং সেই রাতে পরিবার সদস্যদের নিয়ে হলি আর্টিজানে আটকে থাকা নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক আবুল হাসনাত রেজাউল করিম।

নব্য জেএমবির শীর্ষ নেতা তামিম চৌধুরীর পাশাপাশি জাহিদুল ইসলাম, তানভীর কাদেরী, নুরুল ইসলাম মারজান, আবু রায়হান তারেক, সারোয়ার জাহান, আব্দুল্লাহ মোতালেব ও ফরিদুল ইসলাম আকাশ গুলশানের হামলায় জড়িত ছিলেন বলে পুলিশের ভাষ্য, এরা সবাই পরে বিভিন্ন অভিযানে নিহত হন।

হলি আর্টিজানে হামলাকারী হিসেবে চিহ্নিত নিবরাজ ইসলাম, মীর সামেহ মোবাশ্বের, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, খায়রুল ইসলাম পায়েল ও শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল তখনই কমান্ডো অভিযানে নিহত হয়েছিলেন।