যুদ্ধাপরাধ: চার জেলার ১৬ আসামির বিরুদ্ধে প্রতিবেদন চূড়ান্ত

ময়মনসিংহ, শেরপুর, যশোর ও নড়াইলের ১৬ জনের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের মামলার প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 July 2017, 09:30 AM
Updated : 27 July 2017, 10:42 AM

ধানমণ্ডির কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তদন্তের সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন সংস্থাটির জ্যেষ্ঠ সমন্বয়ক সানাউল হক।

তিনি বলেন, দুটি আলাদা প্রতিবেদনে আসামিদের বিরুদ্ধে আটক, অপহরণ, নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ, জোরপূর্বক শ্রম আদায়, হত্যা ও গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।

“দুটি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন বৃহস্পতিবারই প্রসিকিউশনে জমা দেওয়া হবে।”

এর মধ্যে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের চার আসামির বিরুদ্ধে প্রতিবেদন তৈরি করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা মনোয়ারা বেগম। এদের তিন জনই কারাগারে রয়েছে।

এরা হলেন- শেরপুরের নকলার ইশিবপুরের মৃত সামসুজ্জামানের ছেলে এস এম আমিনুজ্জামান ফারুক (৫৮) ও কুর্শা বাদগৈড়ের মৃত তমিজ উদ্দিনের ছেলে মো. এমদাদুল হক ওরফে খাজা ডাক্তার (৭৪)।

ময়মনসিংহের কোতোয়ালীর বয়েলকান্দির মৃত আজিজুর রহমানের ছেলে এ কে এম আকরাম হোসেন (৬২), যার স্থায়ী ঠিকানা নকলার বিবিরচরে।

এ মামলার পলাতক আসামির নাম-ঠিকানা প্রকাশ করেনি তদন্ত সংস্থা।  

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল

এই চার আসামির বিরুদ্ধে ছয় জনকে অপহরণ, আটক, নির্যাতন, হত্যা, জোরপূর্বক শ্রম আদায়, লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ আনা হয়েছে।

প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপে বলা হয়, ২০১৫ সালের ১৯ নভেম্বর মামলার তদন্ত শুরু হয়, শেষ হয় চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি। তদন্তকালে এ মামলায় ৬০ জনের জবানবন্দী নেওয়া হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তা ও জব্দ তালিকার ২ সাক্ষীর সঙ্গে তাদের মধ্যে থেকে ৩৪ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।

যশোর ও নড়াইলের ১২ আসামির প্রতিবেদন তৈরি করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন। এদের মধ্যে পাঁচ আসামি কারাগারে।

এরা হলেন- যশোরের কোতোয়ালীর শংকরপুর এলাকার আমিন উদ্দিন মোল্লার ছেলে ওহাব মোল্লা (৮০), যার স্থায়ী ঠিকানা নড়াইলের ফুলেশ্বর গ্রামে।

নড়াইলের বড়শুলা এলাকার রোকন উদ্দিন শেখের ছেলে ওমর আলী (৬৪), তুলারামের আব্দুর রহমানের ছেলে বদরুদ্দোজা (৭৫), লোহাগড়ার নওয়াগ্রামের নবীর শেখের ছেলে দাউদ শেখ (৬৭) ও নড়াইলের শেখহাটির রবিউল হোসেন খানের ছেলে গুলজার হোসেন খান (৭৫)।

পলাতক আসামিদের নাম ঠিকানা প্রকাশ করা হয়নি।

সানাউল হক বলেন, আসামিদের মধ্যে গোলজার হোসেন খান আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। বাকিরা বিএনপি, জামায়াত ও মুসলিম লীগের রাজনীতিতে সক্রিয়।

১২ আসামির বিরুদ্ধে আটক, অপহরণ, নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ, হত্যা এবং গণহত্যাসহ ৭টি অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তা ও ১২ জব্দ তালিকার সাক্ষীসহ মোট ৭৬ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে এ মামলায়।

মামলাটির তদন্ত শুরু হয়, ২০১৬ সালের ২১ মার্চে। এক বছর চার মাস ছয় দিনে তদন্ত শেষ করে তা চূড়ান্ত হলো।

এক প্রশ্নের জবাবে সানাউল বলেন, “পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে পুলিশি তৎপরতার অভাব রয়েছে। এখন পর্যন্ত নিজস্ব উদ্যোগে কোনো আসামি গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। যদিও ট্রাইব্যুনালের আসামিদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে বিশেষ একটি কমিটি রয়েছে।”

আরেক প্রশ্নের জবাবে তদন্ত সংস্থার এ কর্মকর্তা বলেন, “পলাতক আসামিদের ব্যপারে পুলিশ যদি ভুল তথ্য দেয় তাহলে সে ব্যাপারে ট্রাইব্যুনাল ব্যবস্থা নিচ্ছে এবং নিবে। তদন্ত সংস্থার এ ব্যাপারে কোনো অ্যাকশনে যাওয়ার সুযোগ নেই।”