মাছের খাবারে ক্ষতিকর উপাদান বন্ধে কঠোর হতে হবে: রাষ্ট্রপতি

মাছের খাবার উৎপাদনে ক্ষতিকারক উপাদান ব্যবহার বন্ধে কঠোর নজরদারি নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 July 2017, 04:38 PM
Updated : 24 July 2017, 04:38 PM

একই সঙ্গে মাছের বাণিজ্যিক উৎপাদন যাতে স্বাস্থ্যসম্মত ও মানবদেহের উপযোগী হয়, তা নিশ্চিত করারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

রাষ্ট্রপতি বলেছেন, “আজকাল পত্রপত্রিকায় প্রায়ই দেখা যায় যে, মৎস্য খাদ্য উৎপাদনে ক্ষতিকারক উপাদান ব্যবহার করা হয়। এটি বন্ধ করতে হবে। অধিক মুনাফা লাভের আশায় কেউ যাতে বিশাল সম্ভাবনাময় এ খাতের ক্ষতিসাধন করতে না পারে সে ব্যাপারে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, মৎস্য অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে কঠোর নজরদারি করতে হবে।”

সোমবার ‘জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০১৭’ উপলক্ষে বঙ্গভবনে এক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি একথা বলেন।

আবদুল হামিদ বলেন, “আজকাল বাণিজ্যিকভাবে মৎস্য চাষ বৃদ্ধির ফলে মাছের উৎপাদন বহুলাংশে বেড়েছে। বেড়েছে বৈদেশিক আয়ও। তবে বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষে জলজ পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় গুরুত্ব দিতে হবে। পাশাপাশি মৎস্য খাদ্য যাতে স্বাস্থ্যসম্মত ও মানবদেহের উপযোগী হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।”

দেশীয় প্রজাতির মাছের উৎপাদন ও সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে হাওর এলাকার মানুষ আবদুল হামিদ বলেন, “প্রাচীনকাল থেকে নদ-নদী, খাল-বিল, হাওড়-বাঁওড়, প্লাবনভূমি ছিল আমাদের প্রাকৃতিক মৎস্য সম্পদের প্রধান উৎস। এক সময় এসব অভ্যন্তরীণ জলাভূমিতে প্রাকৃতিকভাবে দেশীয় প্রজাতির নানা জাতের মাছ জন্মাতো। জনসংখ্যা বৃদ্ধি, ক্রমবর্ধমান নগরায়ণ ও শিল্পায়ন, কৃষিতে রাসায়নিক ও কীটনাশকের অপরিমিত ব্যবহারসহ মানবসৃষ্ট নানা কারণে আজ দেশীয় মাছের উৎপাদন বহুলাংশে হ্রাস পেয়েছে। এমন কি অনেক দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। তাই দেশীয় প্রজাতির মাছ উৎপাদন ও সংরক্ষণে উদ্যোগ নিতে হবে।”

বঙ্গভবনের দরবার হলে ওই অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি ‘ব্লু ইকোনমির’ সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে বলেন, “সাগরের জলজ ও খনিজ সম্পদ সংরক্ষণ ও আহরণে আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে। কেবল রুপালি ইলিশ নয়, এর পাশাপাশি অন্যান্য সামুদ্রিক সম্পদ আহরণ ও সংরক্ষণে আমাদের দক্ষ জনবল, টেকসই অবকাঠামো ও গবেষণা কার্যক্রম বৃদ্ধি করতে হবে। সামুদ্রিক সীমানায় নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে।”

রাষ্ট্রপতি দেশের বিশাল জলজ সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাসহ ব্যবসায়ীদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

মৎস্য বিষয়ক শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে আবদুল হামিদ মৎস্য বিজ্ঞানীদের উচ্চতর প্রশিক্ষণসহ প্রণোদনা দেওয়ার কথাও তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন, মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. ছায়েদুল হক, প্রতিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ, সচিব মাকসুদুল হাসান খান প্রমুখ।

অনুষ্ঠান শেষে বঙ্গভবনের ‘দানা দিঘী’তে বিভিন্ন জাতের মাছের পোনা অবমুক্ত করেন রাষ্ট্রপতি।