সরকারের প্রতি সিদ্দিকুরের চিকিৎসার ভার নেওয়ার দাবি

পুলিশের টিয়ার শেলের আঘাতে অন্ধ হতে চলা ঢাকার কলেজছাত্র সিদ্দিকুর রহমানের চিকিৎসার ভার নিতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন তার সহপাঠীরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 July 2017, 04:50 PM
Updated : 22 July 2017, 04:55 PM

শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে সরকারি তিতুমীর কলেজের ছাত্র রিয়াজ মাহমুদ এ দাবি জানান।

তিনি বলেন, পুলিশের ছোড়া শেলের আঘাতে সিদ্দিকুরের দুই চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

“সরকারকে তার চিকিৎসার দায়ভার নিতে হবে।”

কয়েক মাস আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত হওয়া রাজধানীর সাতটি সরকারি কলেজ শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার তারিখ ঘোষণার দাবিতে বৃহস্পতিবার শাহবাগে সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করলে তাদের বাধা দেয় পুলিশ।

একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিপেটা ও কাঁদুনে গ্যাসের শেল ছোড়ে পুলিশ। সে সময় কাঁদুনে গ্যাসের শেল সিদ্দিকুরের চোখে লাগে।

আগারগাঁওয়ের জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন সিদ্দিকুর। শনিবার সকালে তার চোখে অস্ত্রোপচারের পর চিকিৎসকরা বলেছেন, তার দুই চোখে আলো ফেরার সম্ভাবনা নেই।

তিতুমীর কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র সিদ্দিকুরের বাড়ি ময়মনসিংহের তারাকান্দি উপজেলার ডাকিরকান্দা গ্রামে। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার ছোট তিনি। বাবা হারিয়েছেন শিশু বয়সে।

নির্মাণ শ্রমিক বড় ভাইয়ের উপার্জনের সঙ্গে মা হাঁস-মুরগি পেলে তাদের সংসার চালান। সেই থেকে পাঠানো টাকায় লেখাপড়া চলত সিদ্দিকুরের।

পুলিশের হামলার নিন্দা জানিয়ে ঢাকা কলেজের ছাত্র শাহিন হোসেন সমাবেশে বলেন, “শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশের হামলার দুই দিন অতিবাহিত হলেও এখনও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও কলেজ প্রশাসনও আহতদের খোঁজ-খবর নেয়নি। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।

“এই হামলা শুধু শিক্ষার্থীদের উপর নয়, পুরো শিক্ষা ব্যবস্থার উপরে হামলা। এ হামলায় শুধু সিদ্দিকের চোখ অন্ধ হয়নি, অন্ধ হয়ে গেছে এদেশের পুরো শিক্ষা ব্যবস্থা ।”

চোখে কালো কাপড় বেঁধে এই প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নিয়েছিলেন আন্দোলনরত সাত সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা।

তাদের দাবি মেনে নিতে মঙ্গলবার পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে সমাবেশ থেকে বলা হয়, এ সময়ের মধ্যে দাবি মেনে নেওয়া না হলে পরদিন বুধবার বিকাল ৪টায় প্রেস ক্লাবের সামনে আবারও অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে।

“এরপরে দাবি আদায়ের আরো কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেয়া হবে,” বলেন রিয়াদ মাহমুদ।