শুক্রবার কুড়িল-পূর্বাচল ১০০ ফুট চওড়া খাল খনন কাজের অগ্রগতি দেখতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন,“আমরা ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সেখানে প্রয়োজনীয় সব কাজ শেষ করব। সেখানে যারা প্লট পেয়েছেন তারা ঘরবাড়ি করতে পারবেন।”
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ ও গাজীপুরের কালীগঞ্জ এলাকায় মোট ছয় হাজার ২৭৭ একর জমিতে পূর্বাচল নতুন শহর গড়ে তুলতে ১৯৯৬ সালে প্রকল্প নেওয়া হলেও জমি অধিগ্রহণ ও ভূমি উন্নয়নের কাজেই ২০০৯ সাল পর্যন্ত লেগে যায়।
শুরুতে তিন হাজার ৩১১ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হলেও তা বাড়তে বাড়তে এখন ৭ হাজার ৭৮২ কোটি টাকায় পৌঁছেছে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২৫ হাজার ১৬টি আবাসিক প্লটের পাশাপাশি পূর্বাচলে ৬০ হাজার আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে। সেখানেই ১৪২ তলা ‘আইকনিক টাওয়ার’ নির্মাণের স্বপ্নের কথা বলে আসছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
প্রকল্পের বিভিন্ন ধরনের কাজের অগ্রগতির তথ্য তুলে ধরে গণপূর্তমন্ত্রী মোশাররফ হোসেন গতবছর এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, ২০১৭ সালেই পূর্বাচলের কাজ শেষ হবে বলে তারা আশা করছেন।
আইকনিক টাওয়ারসহ কয়েকটি বহুতল ভবনের জন্য এ প্রকল্পে ১০০ একর জমি রাখা হয়েছে বলে জানান ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।
তিনি বলেন, “আমরা আশা করছি, এটা অ্যাওয়ার্ড করব উইদিন থ্রি মান্থস। এর মধ্যে যদি অ্যাওয়ার্ড করি, তাহলে এটার কাজ শুরু হয়ে যাবে। ছয় মাস সময় দিয়েছি কোথায় কত তলা ভবন হবে ঠিক করার জন্য।”
১০০ প্রশস্ত খালের কাজও ২০১৮ সালের মধ্যে শেষ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন মন্ত্রী।
“এই প্রকল্প সেনাবাহিনীর দক্ষ ইঞ্জিনিয়ারিং টিম বাস্তবায়ন করছে। সেজন্য আমরা গর্বের সাথে বলতে পারি, ২০১৮ সালের ভেতরে আমরা এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারব।”
পূর্তমন্ত্রী বলেন, “হাতিরঝিলের পরে এটি হবে ঢাকার আরেকটি নান্দনিক এলাকা। এখানে মানুষ আসবে, ঘুরবে, দেখবে।”
কুড়িল-পূর্বাচল খালের কাজ শেষ হলে ঢাকার জলাবদ্ধতাও কমবে বলে আশ্বাস দেন ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ।
প্রকল্পের আওতায় প্রায় সাড়ে ১৩ কিলোমিটার খাল, প্রায় সাড়ে ১৩ কিলোমিটার সড়ক, ৩৯ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে, চারটি ইউলুপ, খালের ওপর ১৩টি সেতু, চারটি এক্সপ্রেসওয়ে ফুটওভারব্রিজ এবং পাঁচটি স্লুইসগেট নির্মাণ করা হবে।
এছাড়া একটি পাম্প হাউজ, ১২টি ওয়াটার বাস স্টপ, ৪ দশমিক ৭ কিলোমিটার স্টর্ম স্যুয়ার লাইন নির্মাণ করার কথাও পরিবল্পনায় রয়েছে।
মন্ত্রীর পরিদর্শনের সময় রাজউক চেয়ারম্যান আবদুর রহমান, সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার ব্রিগেডের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইফতেখার আনিস, বুয়েটের অধ্যাপক মোয়াজ্জেম হোসেন, রাজউকের প্রকল্প পরিচালক নুরুল ইসলাম, খাল খনন প্রকল্পের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল নিজাম উদ্দিন আহমেদ তার সঙ্গে ছিলেন।