দুদকের হটলাইনে অভিযোগ নেওয়া শুরু

হটলাইনে দুর্নীতি সংক্রান্ত অভিযোগ নেওয়ার কার্যক্রম পরীক্ষামূলকভাবে চালু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 July 2017, 07:36 AM
Updated : 21 July 2017, 07:36 AM

হটলাইনের ১০৬ নম্বরে কল করে বৃহস্পতিবার থেকে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ জানাতে পারছেন বলে জানান কমিশনের সচিব আবু মো. মোস্তফা কামাল।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, আগামী ২৭ জুলাই অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত উদ্বোধনের পর হটলাইনে নিয়মিতভাবে অভিযোগ রেকর্ড করা হবে।

“এটি নিয়মিতভাবে চালু হওয়ার পর দেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে যে কোনো ব্যক্তি বিনা পয়সায় ফোন করে তাৎক্ষণিকভাবে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ কমিশনকে জানাতে পারবেন।”

হটলাইনটির ব্যবস্থাপনায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ের ৩১৬ নম্বর কক্ষে একটি ‘অভিযোগ কেন্দ্র’ খোলা হয়েছে। কমিশনের মনোগ্রাম নীল রংয়ে সাজানো হয়েছে কক্ষটি। এতে বসানো হয়েছে পাঁচটি ডেস্ক।

দুদকের সিস্টেম অ্যানালিস্ট রাজীব হাসান বলেন, “হটলাইনে এক সঙ্গে পাঁচজন ব্যক্তির ফোন রিসিভ করা যাবে। পরীক্ষামূলক চালুর দিন থেকে একের পর এক ফোন আসা শুরু হয়, এসবের বেশ কিছু অভিযোগ রেকর্ড করা হয়েছে।”

অফিস চলাকালীন প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ভুক্তভোগীদের অভিযোগ শুনে লিপিবদ্ধ করা হবে বলে জানান দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য।

তিনি জানান, এতে দুদকের সহকারী পরিচালক সেলিনা আখতার মনির নেতৃত্বে পাঁচ কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করছেন। হটলাইনে আসা অভিযোগ দুদকের তদন্তের আওতায় থাকলে তা রেকর্ড করে কমিশনের যাচাই-বাছাই কমিটিতে তুলে ধরা হবে।

কমিশনের আওতাভুক্ত অপরাধসমূহ

 

>> কোনো সরকারি কর্মচারী বৈধ পারিশ্রমিক ছাড়া অন্য কোনো পন্থায় বকশিশ নিলে

>> সরকারি কর্মচারী বা ব্যাংকার, ব্যবসায়ী বা অন্য কোনো ব্যক্তি ‘অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ’ করলে

>> কারও ক্ষতি করতে সরকারি কর্মচারী অশুদ্ধ বা মিথ্যা দলিল প্রস্তুত করলে

>> সরকারি কর্মচারী, বেসরকারি ব্যক্তি, ব্যাংক বা অন্য কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী সরকারি অর্থ, সম্পত্তি আত্মসাত করলে বা কোনো ক্ষতি করলে

>> প্রতারণা বা জালিয়াতিতে সরকারের কোনো কর্মচারী বা অন্য কোনো ব্যক্তি সহায়তা দিলে

>> অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আয়ের অবৈধ উৎস গোপন করলে বা আড়ালে সেই অর্থ বিদেশে পাচার করলে বা বিদেশ থেকে বাংলাদেশে আনা হলে

>> দুর্নীতি বা ঘুষের মাধ্যমে অথবা অবৈধভাবে অর্জিত কোনো ব্যক্তির অঘোষিত আয় বা সম্পদ বিবরণীর সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পত্তি তার দখলে থাকলে তা দুদকের তফসিলভুক্ত অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।

কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার বলেন, “প্রতি বছর হাজার হাজার লিখিত অভিযোগ দুর্নীতি দমন কমিশনে জমা পড়ে; কিন্তু অধিকাংশ অভিযোগ কমিশনের তফসিলভুক্ত (আওতাভুক্ত) না হওয়ায় সেগুলো তদন্তের জন্য গ্রহণ করা যায় না।”

অভিযোগ করতে যা যা থাকতে হবে

বর্তমান নিয়মে অভিযোগকারী কমিশনের তদন্তের আওতাভুক্ত কোনো অপরাধের বিবরণসহ কমিশনের চেয়ারম্যান বা পরিচালক, বিভাগীয় কার্যালয় বা উপ-পরিচালক ও সমন্বিত জেলা কার্যালয় বরারব অভিযোগ করতে পারেন।

দুদকের উপ-পরিচালক প্রণব জানান, এসময় অভিযোগের বিবরণ ও সময়কাল; অভিযোগের সমর্থনে তথ্য-উপাত্তের বিবরণ; যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তার নাম, পদবী ও ঠিকানা এবং অভিযোগকারীর নাম, ঠিকানা ও টেলিফোন নম্বর উল্লেখ করতে হয়।

একইভাবে যারা টেলিফোনে দুর্নীতির বিষয়ে কমিশনে অভিযোগ করবেন, তাদেরও ওইসব তথ্য-উপাত্ত দিতে হবে এবং তার অভিযোগ দুদক আইনের তফসিলভুক্ত হতে হবে।

অভিযোগকারীর দেওয়া তথ্য রেকর্ড করে নিয়ম অনুযায়ী কমিশনের যাচাই-বাছাই কমিটিতে উপস্থাপন করা হয় বলে জানান তিনি।

প্রণব বলেন, “যাচাই-বাছাই কমিটির অনুমোদন পাওয়ার পরই আনুষ্ঠানিকভাবে একটি দুর্নীতির অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলে ধরে নেওয়া যায়।”