বৃহস্পতিবার ভোরে কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশ এই আইনজীবীকে আটক করে বলে অধিকারের পরিচালক নাসির উদ্দিন এলান জানিয়েছেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “তিনি মানবাধিকার বিষয়ক একটি সম্মেলনে যোগ দিতে মালয়েশিয়া গিয়েছেন। আজ ভোর সাড়ে ৪টার দিকে তিনি কুয়ালালামপুরে পৌঁছান। কিন্তু সেখানকার ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে এয়ারপোর্ট থেকে বের হতে দিচ্ছে না।”
এদিকে ব্যাংকক-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা এশিয়ান ফোরাম ফর হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ফোরাম-এশিয়া) অবিলম্বে আদিলুর রহমান খানের মুক্তির দাবি জানিয়েছে।
সংগঠনটির এক বিবৃতিতে বলা হয়, “তাকে আটকের কোনো কারণ জানানো হয়নি। ফোরাম-এশিয়ার মালয়েশীয় সংগঠন সুয়ারা রাকায়াত মালয়েশিয়াকে (সুয়ারাম) জানানো হয়েছে, আদিলুরকে ইমিগ্রেশনের হাজতখানায় নেওয়া হয়েছে।”
আদিলুর ফোরাম-এশিয়ার ভাইস-চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন।
অ্যান্টি ডেথ পেনাল্টি এশিয়া নেটওয়ার্কের (এডিপিএন) আয়োজনে ২১-২২ জুলাই অনুষ্ঠেয় মৃত্যুদণ্ড নিয়ে সম্মেলনে যোগ দিতে কুয়ালালামপুরে গেছেন তিনি।
২০১৩ সালের ৫ মে রাতে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশ নিয়ে তথ্য বিকৃতির অভিযোগে তথ্য প্রযুক্তি আইনের মামলায় বাংলাদেশে আদিলুরের বিচার চলছে।
হেফাজতে ইসলামের কর্মীদের সরিয়ে দিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেসময় যে অভিযান চালায়, তাতে ৬১ জন নিহত হয় বলে অধিকারের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়।
অধিকারের কাছে ‘নিহতদের’ নাম পরিচয় চেয়ে সরকারের পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হলেও অধিকার তথ্য দিতে অস্বীকার করে।
মতিঝিলে হেফাজতবিরোধী অভিযান নিয়ে তথ্য বিকৃতি, অসত্য তথ্য উপস্থাপন, ফটোশপের মাধ্যমে ছবি বিকৃত করে অধিকারের প্রতিবেদনে সংযুক্ত করা এবং জীবিত ব্যক্তিকে মৃত দেখানোর মতো অভিযোগ আনা হয় মামলার আসামি আদিলুর ও এলানের বিরুদ্ধে।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আদিলুর ওই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে বেশ কিছুদিন কারাগারে থাকলেও পরে সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিনে মুক্তি পান।
আদিলুরের মালয়েশিয়ায় আটক হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ইন্টারপোলের ঢাকা অফিস ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরোর (এনসিবি) এআইজি মাহবুবুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার জানা মতে, আদিলুর রহমান খানকে আটকের ব্যাপারে ইন্টারপোলের কাছে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কোথাও কোনো অনুরোধ নেই।”