একাত্তরের কণ্ঠযোদ্ধা সুব্রত সেনগুপ্ত আর নেই

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী, গীতিকার সুব্রত সেনগুপ্ত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।  

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 July 2017, 03:39 AM
Updated : 4 July 2017, 03:39 AM

প্রোস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত এই শিল্পী মঙ্গলবার ভোরে ঢাকার গ্রিন লাইফ হাসপাতালে মারা যান বলে তার স্ত্রী জলি সেনগুপ্ত জানান।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ফোন আসে, তার অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে। পরে সাড়ে ৬টার দিকে তিনি আমাদের ছেড়ে চলে যান।”

চিকিৎসকরা আগেই জানিয়েছিলেন, সুব্রতর প্রোস্টেট গ্ল্যান্ডের ক্যান্সার শরীরের অন্যান্য অংশেও ছড়িয়ে পড়েছে। সেইসঙ্গে আরও কিছু জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে গ্রিন লাইফের আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন বেশ কিছু দিন।

জলি জানান, হাসপাতাল থেকে তার স্বামীর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে পোস্তগলা মহাশ্মশানে, সেখানেই শেষকৃত্য হবে।

সুব্রত সেনগুপ্ত স্বদেশি আন্দোলনের নেতা সুধীর সেনগুপ্তের ছেলে; প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার তার মায়ের আপন বোন। একাত্তরে যখন বাঙালির স্বাধীনতার যুদ্ধ শুরুল হয়, সুব্রত তখন ঢাকার সেগুনবাগিচায় ওস্তাদ বারীণ মজুমদারের সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়ের ছাত্র।

মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পর এক পর্যায়ে কসবা হয়ে আগরতলা চলে যান সুব্রত সেনগুপ্ত। সেখান থেকে যান কলকাতায়, যোগ দেন বালীগঞ্জ সার্কুলার রোডে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে।

‘রক্ত চাই রক্ত চাই, অত্যাচারীর রক্ত চাই’, ‘ছোটরে সবাই বাঁধ ভাঙা অগণিত গ্রাম মজুর কিষাণ’, ‘শোন জনতা গণ জনতা’সহ স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে গাওয়া মুক্তিযুদ্ধের বেশ কিছু গান সুব্রত সেনগুপ্তর রচনা করা।

গীতিকার সুব্রত একুশে ফেব্র্রুয়ারি নিয়ে ১৬০টি গান, আর বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ৫৫৫টি গান রচনা করেছেন বলে জানান তার স্ত্রী।  

জলি সেনগুপ্ত বলেন, ২০১৩ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে তার স্বামী শয্যাশায়ী ছিলেন। বিভিন্ন সময়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও টাকার অভাবে ঠিকমত চিকিৎসা করাতে পারেননি তারা।

সুব্রত-জলি দম্পতির দুই ছেলে শুভদীপ সেনগুপ্ত ও সংগীত সেনগুপ্ত দুজনই স্নাতকোত্তর পর্যায়ে লেখাপড়া করছেন।