টেলিফোনে আড়িপাতা সংস্থা শক্তিশালী হচ্ছে

টেলিফোনে আড়িপাতার মত নজরদারির দায়িত্বপ্রাপ্ত রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের কারিগরি সক্ষমতা বাড়াতে একটি বিশেষ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে বলে সংসদকে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 June 2017, 11:47 AM
Updated : 28 June 2017, 12:25 PM

বুধবার সংসদ অধিবেশনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য বজলুল হক হারুনের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।

মন্ত্রী বলেন, ইন্টারনেট যোগাযোগের উন্নতির ফলে এখন অপরাধীদের যোগযোগও অনেকাংশে ইন্টারনেটকেন্দ্রিক হয়ে গেছে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় উন্নত প্রযুক্তি ও দক্ষ জনবল প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।

এ কারণেই ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, “এই সংস্থার আধুনিকায়নের মাধ্যমে জঙ্গিদের সম্পর্কে অধিক তথ্য ও উপাত্ত সংগ্রহ করা যাবে। সেসব তথ্য সঠিক সময়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসগুলোকে দেওয়া গেলে তারা জঙ্গি দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।”

বাংলাদেশ সংবিধানের ৪৩ অনুচ্ছেদে ব্যক্তিগত  তথ্যের সুরক্ষা ও গোপনীয়তা মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃত। তথ্য অধিকার আইনেও এর উল্লেখ রয়েছে।  তবে রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বা জনশৃঙ্খলার স্বার্থে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ আইনে সরকারকে প্রয়োজনে আড়িপাতার বৈধতা দেওয়া হয়েছে।

ওই আইনের ৯৭ক ধারায় বলা হয়েছে,  রাষ্ট্রের নিরাপত্তার স্বার্থে যে কোনো টেলিযোগাযোগ সেবা ব্যবহারকারীর পাঠানো বার্তা ও কথোপকথন প্রতিহত, রেকর্ড ধারণ বা তৎসম্পর্কিত তথ্যাদি সংগ্রহের জন্য সরকার সময় সময় নির্ধারিত সময়ের জন্য গোয়েন্দা সংস্থা, জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা, তদন্তকারী সংস্থা বা আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে নিয়োজিত সংস্থার কোনো কর্মকর্তাকে ক্ষমতা দিতে পারবে এবং এ কার্যক্রমে সার্বিক সহায়তা প্রদানের জন্য টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদানকারীকে নির্দেশ দিতে পারবে এবং পরিচালনাকারী ওই নির্দেশ পালন করতে বাধ্য থাকবে।

ফোনে আড়িপাতা এবং ইন্টারনেটে নজরদারির বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও কাজটি করা হত প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরে (ডিজিএফআই) একটি তদারক কেন্দ্র থেকে। এরপর ২০১৩ সালে ডিজিএফআই ভবনেই ৪৪ জন জনবল নিয়ে ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) যাত্রা শুরু করে।

গত মার্চে এনটিএমসির প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় ডিজিএফআইয়ের উপ-মহাপরিচালক পদে থাকা ব্রিগেডিয়ার জিয়াউল আহসানকে, যিনি এক সময় র‌্যাবেও কাজ করেছেন।

সাংসদ গোলাম রাব্বানীর এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সংসদে বলেন, “জঙ্গি সংগঠনগুলোর অনলাইন প্রচারণার বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নজরদারি আরও বৃদ্ধি করা হবে। এ জাতীয় প্রচারণার মাধ্যমে যাতে জনগণের মধ্যে জঙ্গিবাদী মতাদর্শের প্রসার না ঘটে সেজন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মাধ্যমে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।”