রোববার সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন বিউটি পার্লার আর সেলুনে ছিল তীব্র ভিড়। ফেসিয়াল, চুলের ছাট আর মেহেদীর রঙে নিজেকে রাঙিয়ে নেওয়ার এই তাড়া দেখা গেছে দিনভরই।
তরুণ-তরুণীদের চাহিদা অনুযায়ী সাজিয়ে দিতে ব্যস্ত সময় পার করেন নামী বিউটি পার্লার থেকে শুরু করে সাধারণ সেলুনের দোকানিরাও, সন্ধ্যায়ও কমেনি সেই চাপ।
ওয়েটিং রুমে চুল কাটার জন্য অপেক্ষা করছিলেন ক্যান্টনমেন্টের বাসিন্দা বুশরা।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পৌনে এক ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর চুল কাটার জন্য ডাক পেলাম। শেষ সময়ে আসলে তো এমনই হয়। যাক, শেষ পর্যন্ত তো সুযোগ পেলাম।”
পারসোনায় শেষ মুহূর্তে চলছে মেহেদীর সাজ, হেয়ার ট্রিটমেন্ট, স্পেশাল হেয়ার কাট আর কুইক ফেসিয়াল। ম্যাসাজ, ব্রাইটেনিং ফেসিয়াল, অক্সি ব্রাইট ফেসিয়ালগুলোর চাহিদাই বেশি বলে পারসোনার মিরপুর শাখার ব্যবস্থাপক তাজরিন জাবিদা ইভা জানান।
তিনি বলেন, “আজ তো অনেক গ্রাহক আসছে। চাঁদরাত তো… তাই ভিড়টা অনেক বেশি। তবে আজ মেহেদীর গ্রাহক অনেক বেশি। অল্প সময়ের ফেসিয়ালগুলোই বেশি করছে গ্রাহকরা। কুইক ফেসিয়াল, ভ্রু-প্লাকটাও হচ্ছে আজ।”
মিরপুর ওমেন্স ওয়ার্ল্ডে ‘মেনিকিউর-পেডিকিউর’ করতে এসেছেন বেসরকারি ইন্ডিপেনডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সায়মা রহমান।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঈদে তো আসলে একটু আলাদাভাবে প্রিপারেশন নিতে হয়, এতদিন শপিংয়ের কারণে ব্যস্ত ছিলাম। তাই আজ চলে আসলাম। ঈদের আগে সাজটা তো ঠিক রাখতে হবে।”
গুলশানের ওমেন্স ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপক রিতা বলেন, “আজ অনেক কাস্টমার আসছে। কেউ মেহেদী লাগাবে, কেউ চুল কাটাবে বা ফেসিয়াল করাবে। ব্যস্ততা খুব বেশি।”
এখানে চুলে কালার করতে আসা শাম্মী আক্তার বলেন, “কয়েকটা স্টিক কালার করব। কিন্তু এত ভিড়, কখন সিরিয়াল পাব কে জানে!”
সেখানকার বিউটিশিয়ান তাহমিনা জানান, এবার ‘ব্লাঙ্ক’ হেয়ার কাটই (পিছনে চুল ছোট করে সামনের দিকে কিছুটা ঝোলানো) বেশি চলেছে। তবে এর পাশাপাশি ব্যাংকস, স্টেপ আর লেয়ারেরও বেশ চাহিদা ছিল বলে জানান তিনি।
“আজকে ফেসিয়াল আর ভ্রু-প্লাকটা খুব বেশি যাচ্ছে। অনেক কাস্টমার আসছেন। যতক্ষণ কাস্টমার আসবে, পার্লার খোলা রাখব,” বলেন তাহমিনা।
এলিফ্যান্ট রোডের ‘নিউ ড্রিমস’ বিউটি পার্লারে গ্রাহকদের ভিড়ে দম ফেলার ফুরসতই পাচ্ছিলেন না বিউটিশিয়ানরা।
সেখানে আট বছরের জারিনকে মেহেদী লাগিয়ে দিচ্ছিলেন বিউটিশিয়ান ডালিয়া।
“আজকে কাজের চাপে আমরা হিমশিম খেয়ে যাচ্ছি। অনেক কাস্টমার আসছে। আর শেষ মুহূর্তে তো চাপটা বেশিই থাকে।”
জারিন জানায়, মেহেদী তার খুব পছন্দের। তাই মায়ের সাথে পার্লারে চলে এসেছে সে।
“আমার মেহেদী খুব ভালো লাগে। আম্মু ফেসিয়াল করতে এসেছে, তাই আমি জোর করে চলে আসছি।”
মগবাজারের ‘ওয়েস্টার্ন বয়’ সেলুনের হেয়ার স্পেশালিস্ট সাজ্জাদুর রহমান সুমন বলেন, “শেষ সময়ে তরুণ ও মধ্যবয়সী গ্রাহকই বেশি আসছেন। এখন চুলের কালার, ট্রিটমেন্ট, ফেসিয়াল, হেয়ার শাইনিং চলছে বেশি।”
কম টাকার সেলুনগুলোতেও চুল কাটা ও হালকা ফেসিয়ালের জন্য ব্যাপক ভিড় দেখা গেছে।
তেজগাঁওয়ের নাখালপাড়ার ‘সাধনা হেয়ার ড্রেসারে’ বিকালে বেশ কয়েকজনকে চুল কাটার জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়। এই সেলুনের কর্মী সৌরভ জানান, সকাল থেকেই ক্রেতা জট লেগে আছে দোকানে।