ঈদের আগে ফেরার তাড়ায় সদরঘাটের ভিড় সকালে

শেষ মুহূর্তে হলেও ঈদের আগে বাড়ি পৌঁছাতে নদীপথের বিভিন্ন দূরগামী গন্তব্যের যাত্রীদের প্রচুর ভিড় দেখা গেছে রাজধানীর সদরঘাটে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 June 2017, 07:23 AM
Updated : 25 June 2017, 07:23 AM

সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যে রোববার ঈদ হচ্ছে; তাই বাংলাদেশে সোমবার ঈদ হবে তা এক প্রকার নিশ্চিত ভেবে ঈদের আগের রাতের মধ্যে প্রিয়জনদের কাছে পৌঁছাতে চান অনেক যাত্রী।

হাতিয়া যাওয়ার জন্য সকালে তাড়াহুড়া করে স্ত্রী ও ছোট দুই সন্তান নিয়ে সদরঘাটে হাজির হন ফেরদৌস হোসেন নামে এক ব্যক্তি।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “ভাই… সৌদি আরবে আজ ঈদ, তাই আগামীকাল বাংলাদেশে ঈদ হবে।

“ভেবেছিলাম বিকালের লঞ্চে হাতিয়া যাব। কিন্তু বিকালে গেলে পরদিন ১১টায় গিয়ে পৌঁছাব। তাই সকালে ঘাটে আসলাম।”

কথা বলতে বলতে ফারহান-৬ লঞ্চে উঠে গাল ভরা হাসি দিয়ে অদৃশ্য হয়ে যান ফেরদৌস।

ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত ফেরদৌসদের মতো এরকম দূরের যাত্রীদের প্রচুর চাপ দেখা যায় সদরঘাটের পন্টুনে । কিন্তু বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বাভাবিকের চেয়েও কমতে দেখা যায় যাত্রী সংখ্যা।

সকাল ১০টার দিকে যাত্রীর তেমন চাপ দেখা না গেলেও সকালে হাতিয়া, বোরহান উদ্দিন ও ভোলা রুটের অনেক যাত্রী ঘাটে ছিল বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

তারা বলছেন, সকাল ৮টার মধ্যে লঞ্চগুলো যাত্রী নিয়ে চলে যাওয়ায় যাত্রীর সংখ্যা কমে গেছে।

এমভি টিপু লঞ্চের ব্যবস্থাপক মো. ফারুক বলেন, তার কোম্পানির লঞ্চগুলো রোববার যাত্রী পেয়েছে। তাদের তিনটি লঞ্চ হাতিয়া ও বরিশালের উদ্দেশে ছেড়ে গেছে।

যথেষ্ট সংখ্যক যাত্রী পাওয়া গেছে বলে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলেন ফারুক।

তবে সোমবার ঈদ হবে বলে সবাই ধরে নেওয়ায় হাতিয়া ও ভোলাসহ দূরের গন্তব্যে বিকালে আর যাত্রী পাওয়া যাবে না বলে আশঙ্কা লঞ্চ মালিকদের।

বিআইডব্লিউটিএর পরিবহন পরিদর্শক-টিআই মো. হুমায়ূন কবির বলেন, নয় ও ১০ নম্বর পন্টুনে ভোর থেকে যাত্রীর চাপ ছিল। কারণ হাতিয়া, ঘোষের হাট, লালমোহন, ভোলা ও বরগুনার কোনো লঞ্চ ছিল না। তাই যাত্রী এসে এই দুটি পন্টুনে চাপ সৃষ্টি হয়।

ভোর সাড়ে ৫টার দিকে এক ব্যক্তি হুড়োহুড়িতে লঞ্চ থেকে নদীতে পড়ে গেলে তাকে নিরাপদে উপরে উঠানো হয় বলে একজন নৌ-পুলিশ জানান।

বিকালে চাঁদপুর ও বরিশালের যাত্রী হলেও দূরের যাত্রী তেমন না হওয়ার সম্ভবনা বেশি বলছেন টিআই হুমায়ূন।

তিনি জানান, রোববার সকালে ১০টা পর্যন্ত সদরঘাট থেকে ৩৫টি লঞ্চ ছেড়ে যায়। আর শনিবার ছেড়ে গিয়েছিল ১৫৫টি লঞ্চ।

৪১টি রুটে প্রতিদিন গড়ে ৫০টি লঞ্চ চলাচল করলেও ঈদের সময় শতাধিক লঞ্চ চলাচল করে বলে বিআইডব্লিউটিএর এই কর্মকর্তা।

এদিকে ঘরমুখো যাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতে পুলিশের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে বলে কোতয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) পারভেজ ইসলাম জানান।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “পিক আওয়ারে (দুপুর ১২টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত) সদরঘাট এলাকায় ঢাকা মহানগর পুলিশের ২৩৬ জন পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করেন।”

এছাড়া নৌ-পুলিশ, কোস্টগার্ড ও র্যাববের পাশাপাশি বিএনসিসির সেচ্ছাসেবকরা মাঠে ছিল।

পুরো এলাকায় পুলিশের ৩২টি সিসি ক্যামেরা ছাড়াও বিআইডব্লিটিএর স্থাপন করা ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার মাধ্যমে সবকিছু পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।