আমদানির চাল এলে বাজারে দাম কমবে: কৃষিমন্ত্রী

হাওরে ফসলহানীর কারণে চালের দাম বেড়েছে জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলছেন, আমদানি করা চাল দেশে এলে বাজারে দাম কমবে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 June 2017, 03:56 PM
Updated : 2 June 2017, 04:16 PM

শুক্রবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নে কৃষিমন্ত্রী বলেন, “চালের দাম কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে সেটা কেউই অস্বীকার করবে না।”

তিনি বলেন, পাহাড়ি ঢল ও আগাম বন্যায় এবার হাওরের দুই তৃতীয়াংশ ফসল ডুবে গেছে। এছাড়া ব্লাস্ট রোগেও বোরো ফসল নষ্ট হয়েছে। ফলে ধান উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম হবে।

চালের দাম কিছুটা বাড়লেও ‘তা বাড়িয়ে বলার প্রবণতা’ রয়েছে মন্তব্য করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, খাদ্য মন্ত্রণালয় চাল আমদানির দরপত্র ডেকেছে। ‘জিটুজি ভিত্তিতেও’ কিছু চাল আসবে, তাতে বাজার মোটামুটি স্বাভাবিক থাকবে।

“বাজার মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে এটা কেউ বলবেন না। সবাই কিনেকেটে খাচ্ছেন এটা হল বাস্তব সত্য। আগামীতেও চালের অভাব হবে না।”

বন্যার কারণে হাওর অঞ্চলের জেলাগুলোতে ছয় লাখ টনের মতো ধান নষ্ট হয়েছে বলে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব। তবে বেসরকারি সংস্থাগুলোর হিসাবে ফসলহানির পরিমাণ ২২ লাখ টন।

এদিকে শষ্যের মজুদ ছয় বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে চলে আসায় এবং হাওরে বোরো ফসল নষ্ট হওয়ায় মে মাসের শুরুতে সরকারিভাবে মোট ছয় লাখ টন চাল আমদানির পরিকল্পনা করা হয়। এর মধ্যে প্রথম এক লাখ টনের দরপত্রও দেওয়া হয়েছে।

বোরো উৎপাদন কম হওয়ায় এবার আউশ ধানে জোর দেওয়ার কথা জানিয়ে মতিয়া বলেন, গতবারের চেয়ে এবার বেশি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হবে। আর আউশ উৎপাদনে খরচও কম। বোরোর ঘাটতি আউশে পূরণ করা যাবে।

(ফাইল ছবি)

এখনও সরকারের মজুদে যথেষ্ট চাল রয়েছে জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, “চাল যদি না থাকত তাহলে হাওরসহ অন্যান্য এলাকায় সরকার ভিজিএফ ও ওএমএস চালাতে পারত না। ঘূর্ণিঝড় মোরায় ক্ষতিগ্রস্তদের চালের আকারে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।”

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, “আমাদের ভয়ঙ্কর ধরনের দুর্যোগ গেল, এর প্রভাব পড়েছে। চালের দাম বেড়েছে। আমার ধারণা দামটা এখানে থাকবে না, যথেষ্ট স্টক আছে, স্টক বাড়াতে পদক্ষেপ নিয়েছি।”

বাজারে চালের স্বল্পতা নেই দাবি করে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, “হঠাৎ করে চাল-চিনির দাম বাড়ল। আমাদের দেশে কিছু কিছু লোকের কিছু সমস্যা আছে। সেই সমস্যার কারণে তারা অতি উৎসাহী হয়ে যায় দাম বাড়াবার ক্ষেত্রে।”

তিনি বলেন, “সৌদি আরবসহ বিভিন্ন জায়গায় ১১ মাস ব্যবসা করে আর রোজার মাসে তারা মানুষের সেবা দেয়। আমাদের দেশে তার উল্টো, রোজার মাসে ব্যবসার প্রবণতা বেশি বেড়ে যায়।”

অতিরিক্ত ব্যবসা করার প্রবণতা নিয়ন্ত্রণে আইন করার কথা বলেন আমু।

“মানুষের যে মানিসকতা, তাতে আইন ছাড়া কিছু করা সম্ভব না। দেশপ্রেমের কিছু অভাব আছে, দেশপ্রেম থাকলে হাঠাৎ করে এসব (নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি) সৃষ্টি হয় না।”