আমদানির কারণে গ্যাসের দাম আরও বাড়বে

আমদানির কারণে ২০১৮ সাল থেকে প্রতি ইউনিট গ্যাসের দাম আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 June 2017, 10:43 AM
Updated : 1 June 2017, 11:08 AM

চলতি বছরে দুই ধাপে গ্যাসের দাম বাড়ানোর ঘোষণায় অসন্তোষের মধ্যেই বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় দাম বাড়ার একথা জানান তিনি।

মুহিত বলেন, “২০১৮ সালে গ্যাস আমদানি শুরু হলে গ্যাসের আন্তর্জাতিক দামে আমাদের তা খরিদ করতে হবে। এজন্য গ্যাসের উপর ধার্য বর্তমান করাদি যৌক্তিকীকরণ করা হবে।

“এর ফলে ইউনিটপ্রতি গ্যাসের দাম যে বাড়বে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে বিদ্যুৎ ব্যবহারে ভর্তুকি প্রদানের অনুরূপ নীতি অনুসরণ করে গ্যাসের দামও সমন্বয় করা হবে।”

গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন-বিইআরসি এক গণবিজ্ঞপ্তিতে গৃহস্থালিতে ও গাড়িতে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়, যা দুই ধাপে কার্যকরের কথা বলা হয়।

প্রথম ধাপে ১ মার্চ থেকে আবাসিক গ্রাহকদের এক চুলার জন্য মাসে ৭৫০ টাকা এবং দুই চুলার জন্য ৮০০ টাকা দিতে হবে, যা ইতোমধ্যে কার্যকর হয়েছে। আর দ্বিতীয় ধাপে ১ জুন থেকে এক চুলার জন্য মাসিক বিল ৯০০ টাকা এবং দুই চুলার জন্য ৯৫০ টাকা হবে।

পাশাপাশি যানবাহনে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস-সিএনজির দাম ১ মার্চ থেকে প্রতি ঘনমিটারে ৩৮ টাকা এবং ১ জুন থেকে ৪০ টাকা হবে।

পাশাপাশি বিদ্যুৎ উৎপাদন, সার, শিল্প ও বাণিজ্যিক খাতেও গ্যাসের দাম দুই ধাপে ৫ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয় ওই গণবিজ্ঞপ্তিতে।

দ্বিতীয় ধাপের মূল্য কার্যকরের ওপর উচ্চ আদালত থেকে স্থগিতাদেশ দেওয়া হলেও সম্প্রতি চেম্বার আদালতে তা আটকে যাওয়ায় নতুন মূল্য কার্যকরে আপাতত কোনো বাধা নেই।

উন্নয়নের মহাসড়কে বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে নেওয়ার স্বপ্ন সামনে রেখে নতুন অর্থবছরের বাজেটে ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকা ব্যয়ের ফর্দ উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী।

মুহিত বলেন, চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গ্যাসের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে চলমান অনুসন্ধান কার্যক্রম আরও জোরদার করার পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি।

“ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সামুদ্রিক সীমা সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির ফলে গভীর এবং অগভীর সমুদ্রে আমাদের গ্যাস অনুসন্ধানের ক্ষেত্র সম্প্রসারিত হয়েছে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার আওতায় গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদন বাড়াতে আমাদের সরকার কাজ করছে।”

বাপেক্সের মাধ্যমে ২০২১ সালের মধ্যে ১০৮টি কূপ খননের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে জানিয়ে বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, পরিকল্পনা মোতাবেক কূপ খনন ও এসব কূপ থেকে গ্যাস উৎপাদন শুরু হলে গ্যাসের সরবরাহ বাড়ানো সম্ভব হবে।

মুহিত বলেন, “উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি গ্যাসের উত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করাও জরুরি। এ বিবেচনায় সিএনজি ও শিল্পখাতে ‘ইলেকট্রনিক ভলিউম কারেকটর’ মিটার স্থাপনের কাজ ইতোমধ্যে আমরা শুরু করেছি।

“এরই মধ্যে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি ২ লাখ এবং কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি ৬০ হাজার আবাসিক প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়েছে।”

গ্যাস উৎপাদন বাড়াতে বাখরাবাদ, তিতাস ও নরসিংদী গ্যাস ফিল্ডে বুস্টার এবং ওয়েলহেড কমপ্রেসর স্থাপনের কাজ এগিয়ে চলছে বলেও বাজেট বক্তৃতায় জানান মুহিত।