ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতি পোষাতে সরকার তৎপর: কাদের

ঘূর্ণিঝড় মোরার ক্ষতি পোষাতে সরকার তৎপর রয়েছে জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দুর্গত এলাকার মানুষের জন্য এক কোটি ৮৭ লাখ টাকা জরুরিভিত্তিতে পৌঁছানো হয়েছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 May 2017, 08:58 AM
Updated : 30 May 2017, 09:32 AM

স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদেরও ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী অস্ট্রিয়া সফরে থাকলেও ঘূর্ণিঝড়ের বিপদ সংকেত যখন থেকে শুরু হয়েছে, তখন থেকেই তিনি পরিস্থিতির সার্বক্ষণিক ‘মনিটরিং ও তদারকি’ করেছেন।

“আমিও পার্টির পক্ষ থেকে যোগযোগ রাখছি। আমাদের পার্টিকেও আমরা নির্দেশ দিয়েছি, উপদ্রুত এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। … জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের বলেছি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে।”

কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অফিসের মাধ্যমে তিনি ২০ হাজার কাঁচা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার তথ্য পেয়েছেন।

“চরকিয়ায় গাছ চাপা পড়ে একজন মারা গেছেন। একজন মা তার শিশুকে নিয়ে ছুটাছুটি করতে গিয়ে শিশুটি হাত থেকে ফসকে যায়, শিশুটি মিসিং। এছাড়া আর কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। চকরিয়ায় গাছ চাপা পড়ে আরও ১০ জন আহত হয়েছেন।”

অবশ্য চকরিয়া থানার ওসি বখতিয়ার আহমদ ভোরে ঝড়ের সময় গাছচাপা পড়ে দুইজনের মৃত্যুর খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন। 

ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতায় সরকারিভাবে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়ে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, “সরকার সবাইকে নিরাপদে আশ্রয়কেন্দ্রে পৌঁছে দিতে সর্বাত্মক প্রয়াস চালিয়েছে। যে কারণে প্রাণহানির ক্ষয়ক্ষতি তেমন একটা হয়নি।”

অনেকে বাপ-দাদার ভিটেমাটি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে চায় না মন্তব্য করে কাদের বলেন, “আল্লাহ বাঁচাবেন- এ রকম একটা বিশ্বাস আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে আছে।”

তিনি বলেন, জানের ক্ষতি তেমন না হলেও মালামালের যে ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে দিতে সরকার তৎপর।

“ত্রাণ মন্ত্রণালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং আমাদের পার্টিকেও আমরা নির্দেশ দিয়েছি উপদ্রুত এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পাঁশে দাড়ানোর জন্য।”

ব্রিফিং চলাকালেই মন্ত্রীর মোবাইল ফোনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ফোন আসে। কাদের বলেন, দুর্গত এলাকায় যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের জন্য এক কোটি ৮৭ লাখ টাকা জরুরিভিত্তিতে পৌঁছানো হয়েছে।

“নৌ বাহিনীর একটি জাহাজ সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশ্যে ত্রাণ সাহায্য নিয়ে রওনা দিয়েছে। সেনা ও বিমান বাহিনীকেও প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে।”

মন্ত্রী ও সচিবের একসঙ্গে দেশের বাইরে না যেতে নির্দেশনা থাকলেও ত্রাণমন্ত্রী ও সচিব এই ঝড়ের সময় একসঙ্গে বিদেশে আছেন। বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন- এমন প্রশ্নে কাদের বলেন, এমনটি হওয়া ‘উচিত নয়’।

“এই যে একটা দুর্যোগ, আরও বড় ধরণের ক্ষতি হয়ে যেতে পারত। এ সময়ে মন্ত্রী মহোদয় গেলে, সচিবের থাকা উচিত। খুব জরুরি কোনো বিষয় ছাড়া দুজনের একসঙ্গে (বিদেশ) যাওয়া উচিত নয়। চুক্তি সংক্রান্ত বিষয় থাকলে মন্ত্রী-সচিবের একসঙ্গে যেতে পারেন।”

মেক্সিকোর কানকুনে ‘গ্লোবাল প্লাটফর্ম ফর ডিজাস্টার রিস্ক রিডাকশান’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতে গত ২৩ মে ঢাকা ছাড়েন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া ও সচিব শাহ কামাল। মায়া ২০ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ৩১ মে তাদের দেশে ফেরার কথা রয়েছে।