এএসআই হুমায়ুন হত্যামামলায় স্ত্রীর মৃত্যুদণ্ড

ঢাকার শাহ আলী থানার এএসআই হুমায়ুন কবির হত্যামামলায় ফাঁসিতে ঝুলতে হচ্ছে তার স্ত্রী রহিমা সুলতানা রুমিকে।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 May 2017, 06:56 AM
Updated : 30 May 2017, 09:59 AM

এই হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতা করায় মো. রাফা-ই মিষ্টি নামে আরেক ব্যক্তিকেও মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে ঢাকার একটি আদালত; যাবজ্জীবন সাজা হয়েছে মিষ্টির স্ত্রী রিয়ার।

প্রায় সাড়ে তিন বছর আগের এই হত্যাকাণ্ডের মামলায় মঙ্গলবার ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবদুর রহমান সরদার প্রধান আসামি রহিমার উপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডিত অন্য দুই আসামি মিষ্টি ও রিয়া পলাতক বলে রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুঁলি মাহফুজুর রহমান লিখন জানিয়েছেন।

দাম্পত্য কলহ থেকে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের জ্যেষ্ঠ সেবিকা রহিমা স্বামী পুলিশ কর্মকর্তা হুমায়ুনকে বিষ প্রয়োগের পর শ্বাসরোধে হত্যা করেন বলে আদালতে প্রমাণিত হয়েছে।

রায়ে সর্বোচ্চ সাজা দেওয়ার পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে আদালত বলেছে, দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে গেলে এ ধরনের নির্মম ও নৃশংস হত্যাকাণ্ডে মৃত্যুদণ্ড ছাড়া কোনো অনুকম্পা দেখানো চলে না।

২০১৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর মধ্যরাতে মিরপুরের পূর্ব মনিপুরের কাঁঠালতলার বাসায় এএসআই হুমায়ুনকে হত্যা করা হয়। পূর্বপরিচিত মিষ্টি ও রিয়া সেদিন তাদের বাসায় ছিলেন।

হত্যাকাণ্ডের পর নিহতের ভাই আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে রহিমাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মিরপুর থানায় মামলা করেন।

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার ভবানীপুরের হুমায়ুনের সঙ্গে ২০০৮ সালে বিয়ে হয়েছিল ভালুকার রহিমার। দেড় বছরের সন্তান নিয়ে ঢাকার পূর্ব মনিপুরের বাসায় থাকতেন হুমায়ুন।

হত্যাকাণ্ডের পর তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ চলার কথা পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানোও হয়েছিল।

মামলায় আলমগীর অভিযোগ করেন, হুমায়ুন ঢাকায় বদলি হয়ে আসার পর তার ভাইকে হত্যার হুমকি দিতেন স্ত্রী রহিমা, যা হুমায়ুন বাড়িতে ফোন করে জানিয়েছিলেন।

রায়ে বলা হয়, রহিমা পূর্বপরিকল্পিতভাবে মিষ্টি ও রিয়ার সহযোগিতা নিয়ে হুমায়নকে হত্যা করেন। প্রথমে ইনজেকশনের মাধ্যমে হুমায়ুনের শরীরে চেতনানাশক ওষুধ দেওয়া হয়, পরে শ্বাসরোধে তাকে হত্যা করা হয়।

যাবজ্জীবন দণ্ডিত রিয়ার ২০ হাজার টাকা জরিমানাও করেছে আদালত। জরিমানার অর্থ দিতে ব্যর্থ হলে তাকে আরও ১ বছর কারাভোগ করতে হবে বলে ট্রাইবুনালের পেশকার আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন।