আইএইএ সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী ভিয়েনায়

আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থা-আইএইএ’র ৬০ বছর পূর্তির সম্মেলনে যোগ দিতে ভিয়েনা পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সুমন মাহবুব ভিয়েনা থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 May 2017, 02:17 PM
Updated : 30 May 2017, 01:15 PM

প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিশেষ ফ্লাইটটি সোমবার স্থানীয় সময় বেলা আড়াইটায় ভিয়েনা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

অস্ট্রিয়ার রাজধানীতে নামার পর বিমানবন্দরে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে।   

তাকে অভ্যর্থনা জানান অস্ট্রিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. আবু জাফর। বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন অস্ট্রিয়ার প্রতিমন্ত্রী মুনা দুজদার।

সকালে ঢাকা শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে রওনা হওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানিয়েছিলেন মন্ত্রিসভার সদস্য এবং ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তারা।

দুই দিনের এই সরকারি সফরে শেখ হাসিনা অস্ট্রিয়ার ফেডারেল প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার ভ্যান ডের ব্যালেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন এবং চ্যান্সেলর ক্রিস্টিয়ান কের্নের  সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নেবেন।

ভিয়েনায় অভ্যর্থনা

ভিয়েনায় শেখ হাসিনা উঠেছেন হোটেল ইম্পেরিয়ালে। প্রথম দিনই তিনি ইউরোপপ্রবাসী বাংলাদেশিদের একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।

মঙ্গলবার সকালে ভিয়েনা ইন্টারন্যাশনাল সেন্টারে আইএইএ’র ৬০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সম্মেলনের উদ্বোধনে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী।

আফ্রিকা, এশিয়া, ইউরোপ, দক্ষিণ আমেরিকা ও ক্যারিবিয়া অঞ্চলের বিভিন্ন দেশের নেতারাও ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন দ্য আইএইএ টেকনিক্যাল কো-অপারেশন প্রোগ্রাম: সিক্সটি ইয়ারস অ্যান্ড বিয়ন্ড- কন্ট্রিবিউটিং টু ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক দুই দিনের এই সম্মেলনে অংশ নেবেন।

পরে সেখানেই আইএইএ মহাপরিচালক ইউকিয়া আমানোর সঙ্গে বৈঠক করবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর এই সফরের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।

মাহমুদ আলী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আইএইএ সম্মেলনে অংশগ্রহণ বিশ্বশান্তি রক্ষা এবং পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার রোধে বাংলাদেশের দৃঢ় অবস্থানের বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করবে। তাতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে, কেননা বাংলাদেশ সবসময় পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্র্ণ ব্যবহারের পক্ষে কথা বলেছে।

ঢাকায় বিদায়

স্বাধীন হওয়ার পরপরই ১৯৭২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থার সদস্য হয় বাংলাদেশ। শেখ হাসিনার স্বামী প্রয়াত পরমাণু বিজ্ঞানী এম এ ওয়াজেদ মিয়া সে সময় গুরুত্বপূর্র্ণ ভূমিকা পালন করেন।

মঙ্গলবার দুপুরে ফেডারেল অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলরের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নেবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার আগে দুই নেতার একান্ত বৈঠক হবে।

দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে কৃষি ও প্রাণিসম্পদ উন্নয়নে সহযোগিতা, দুই দেশের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট চালু, কূটনৈতিক পর্যায়ে নিয়মিত আলোচনার মতো বিষয়গুলো গুরুত্ব পাবে।

পাশাপাশি বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ, অভিবাসন, উদ্বাস্তু সংকট, জলবায়ু পরিবর্তন এবং ব্রেক্সিট পরবর্তী ইউরোপের পরিস্থিতি নিয়ে তাদের মধ্যে কথা হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

নিয়মিত কূটনৈতিক আলোচনার আয়োজন করতে একটি সমঝোতা স্মারকও সই হওয়ার কথা রয়েছে দুই দেশের মধ্যে।

সফরের শেষ কর্মসূচি হিসাবে অস্ট্রিয়ার ফেডারেল প্রেসিডেন্টের সাথে বৈঠক করবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান ভিয়েনা সফরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রয়েছেন। 

ভিয়েনা থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দেশের উদ্দেশে রওনা হয়ে বুধবার সকালে শেখ হাসিনার ঢাকা পৌঁছানোর কথা রয়েছে।