শান্তিরক্ষীদের পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করার আহ্বান রাষ্ট্রপতির

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে কর্মরত বাংলাদেশি সদস্যদের পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 May 2017, 10:23 AM
Updated : 26 Sept 2018, 03:41 AM

সোমবার আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস-২০১৭ উপলক্ষে রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি বলেন, “আমি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী এবং পুলিশ বাহিনীর শান্তিরক্ষীদের বিশ্বব্যাপী শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে তাদের পেশাদারিত্ব, সততা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা বজায় রাখার জন্য উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি।”

বিশ্বব্যাপী শান্তিরক্ষায় কর্মরতদের আত্মত্যাগকে সম্মান জানিয়ে ২০০৩ সাল থেকে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস পালন হচ্ছে।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণের দিক দিয়ে বাংলাদেশ রয়েছে সামনের কাতারে। বর্তমানে বাংলাদেশের ৬ হাজার ৮১৫ জন জাতিসংঘের বিভিন্ন শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নিচ্ছেন, যার মধ্যে রয়েছেন ২০১ জন নারী।

১৯৮৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালনের সময় বাংলাদেশের ১৩৩ জন শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছেন।

শান্তিরক্ষীদের কাজে সরকারের সহযোগিতার কথা তুলে অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি বলেন, “প্রয়োজনীয় সকল সরঞ্জামসহ বাংলাদেশের সকল শান্তিরক্ষী যাতে আরও আত্মবিশ্বাসের সাথে জাতিসংঘের আহবানে সাড়া দিতে পারে, সে জন্য সরকারের সকল প্রয়াস অব্যাহত থাকবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। বিশ্ববাসীর পাশাপাশি বাংলাদেশের জনগণ বিশ্বশান্তি  প্রতিষ্ঠায় আপনাদের এই ভূমিকা চিরকাল স্মরণ রাখবে।”

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, “বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে আপনারা আপনাদের পেশাদারিত্ব, দক্ষতা ও নিষ্ঠা প্রদর্শন করে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে ওই সকল দেশের জনগণের আস্থা অর্জন করেছেন। জাতিসংঘ এবং বিশ্বের সকল শান্তিপ্রিয় দেশ আপনাদের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের সাফল্যের জন্য অকুণ্ঠ প্রশংসা করেছে, যা আপনাদের সাহস, বীরত্ব, অসামান্য পেশাদারিত্ব ও দক্ষতারই অর্জিত ফসল।

“আপনারা জাতিসংঘের অধীনে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের পাশাপাশি দেশের মধ্যেও বিভিন্ন সময়ে জাতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। এছাড়া জাতিসংঘ মিশনে আপনাদের অংশগ্রহণ দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। আমি বিশ্বাস করি, আপনারা দেশমাতৃকার যেকোনো প্রয়োজনে সহায়তা করতে সদা প্রস্তুত। আমি আপনাদের সর্বাঙ্গীন কল্যাণ এবং উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করছি।”

আবদুল হামিদ বলেন, “শান্তিরক্ষী হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে আপনাদেরকে ভিন্ন ভিন্ন ভাষা, সংস্কৃতি ও সামাজিক পরিবেশের সাথে পরিচিত হতে হয়। তাই জাতিসংঘ শান্তি মিশনে বাংলাদেশের অব্যাহত অংশগ্রহণ সুদৃঢ় করতে সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিশের সংশ্লিষ্ট সদস্যদের এসব বিষয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণ দান নিশ্চিত করা আবশ্যক।”

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী রবার্ট ডি ওয়াটকিনস, সেনা প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক।

অনুষ্ঠানে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী হিসেবে দায়িত্বপালনকালে নিহতদের পরিবারের সদস্য ও আহতদের সম্মাননা দেওয়া হয়।

এছাড়া রাষ্ট্রপতি কঙ্গো ও মালিতে কর্মরত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করেন।